ভাইরাল খবর
প্রয়াত তৃণমূল বিধায়কের স্ত্রীর আশীর্বাদ নিয়েই প্রচার শুরু করলেন খড়দহের বিজেপি প্রার্থী
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: আগামী ৩০ অক্টোবর রাজ্যের তিন কেন্দ্রের সঙ্গে উপনির্বাচন হবে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহতেও। ইতিমধ্যেই প্রচারে ঝড় তুলেছে তৃণমূল ও বিজেপি। পুজোর দিনগুলো সহ প্রতিদিনই প্রচার চালাচ্ছেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান প্রার্থী তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। পিছিয়ে নেই বিজেপির তরুণ প্রার্থী জয় সাহাও। রবিবার প্রচারে বেরিয়ে বড় চমক দিলেন বিজেপি প্রার্থী। সাতসকালেই তিনি পৌঁছে গেলেন করোনায় প্রয়াত খড়দহের তৃণমূল বিধায়ক কাজল সিনহার বাড়িতে।
প্রয়াত বিধায়কের ছবিতে মালা দিয়ে এবং তাঁর স্ত্রীর থেকে আশীর্বাদ নিয়ে প্রচার শুরু করলেন জয় সাহা। একুশের বিধানসভা ভোটে খড়দহে বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্তকে হারিয়ে জয়ী হন কাজল সিনহা। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের আগেই কোভিডে মৃত্যু হয় তাঁর। সেই কারণেই উত্তর ২৪ পরগনার এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে। রবিবার খড়দহের বিজেপির প্রাথী জয় সাহা হাজির হয়েছিলেন প্রয়াত তৃণমূল নেতার বাড়িতে। সেখানে তাঁর ছবিতে মাল্যদান করেন। এবং কাজল সিনহার স্ত্রী নন্দিতা সিনহাকে নমস্কার করে তাঁর কাছ থেকে ভোটে জয়ী হওয়ার জন্য আশীর্বাদ চান।
তাঁকে আশীর্বাদও করেন কাজল সিনহার স্ত্রী। সেই আশীর্বাদ মাথায় নিয়েই জনসংযোগ শুরু করেন বিজেপি প্রার্থী। এই সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে বিজেপি প্রার্থী জয় সাহা বলেছেন, ‘কাজল সিনহার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে, এই অঙ্গীকার নিয়ে আশীর্বাদ চাইলাম।’ এই নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও দুই পক্ষই গোটা ব্যাপারটাকে রাজনৈতিক সৌজন্যতা হিসেবেই দেখছে। তবে বিজেপি প্রার্থীকে প্রয়াত তৃণমূল বিধায়কের স্ত্রী জেতার আশীর্বাদ করায় অসন্তুষ্ট শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন, ‘ভোটের প্রচার করতে সকলের বাড়িতেই যাওয়া যায়। কেউ আশীর্বাদ চাইতেই পারেন। এবং তাঁকে আশীর্বাদ করতেও পারেন।
এতে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু জেতার কথা বলতে পারেন না।’ গত বিধানসভা নির্বাচনে খড়দহে কাজল সিনহার কাছে হেরে গিয়েছিলেন বিজেপির শীলভদ্র দত্ত। জানা গিয়েছে, এবার তিনি নিজেই নাকি আর প্রার্থী হতে রাজি হননি। সেই কারণেই এলাকার যুব নেতা জয় সাহাকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। উল্টোদিকে বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে জিতেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য সেই কেন্দ্রের বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী। নিয়ম অনুযায়ী তাঁকেও ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনে জিতে আসতে হবে। তাই তাঁকে খড়দহ থেকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তবে এই উপনির্বাচনে খড়দহ থেকে বিজেপির জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।
তিনি বলেছেন, ‘খড়দহে এবার ৮০ বছরের বৃদ্ধের সঙ্গে ৩২ বছরের ভূমিপুত্রের লড়াই। জয় সাহার জেতার ব্যাপারে আমি ২০০ শতাংশ নিশ্চিত। মানুষ এলাকার ছেলেকেই ভোট দেবেন বলে আমি আশাবাদী।’ নিজের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বিজেপি প্রার্থীও। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে বহিরাগত আখ্যা দিয়ে জয় সাহা বলেছেন, ‘তৃণমূলের যিনি প্রার্থী হয়েছেন তিনি খড়দহের বাসিন্দাই নন। ভোটে জিতল তিনি আবার কলকাতায় ফিরে যাবেন। তাই কোনও সমস্যা বা অভিযোগ নিয়ে সাধারন মানুষ তাঁর কাছে পৌঁছতে পারবেন না। আমি খড়দহেরই ছেলে।
বিপদে-আপদে সবসময় আমাকে পাবেন। তাই আমায় ভোট দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’ তবে খড়দহে জয় নিয়ে বিজেপি যতই আশাবাদী হোক না কেন, লড়াই যথেষ্ট কঠিন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। একেতো উপনির্বাচন, তার ওপর গত বিধানসভা নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জিতে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। তাই কিছুটা হলেও তৃণমূলের দিকেই পাল্লা ভারী বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।