ভাইরাল খবর
বিশ্বের বৃহৎ ও রঙিন যে উৎসবগুলি
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : উৎসব নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক আলাদা আনন্দের অনুভূতি। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন জাতির মানুষদের কত ধরণের উৎসব আছে। এই উৎসবগুলির মধ্যে দিয়ে সকল জাতির ঐতিহ্য ,ধর্ম ,আভিজাত্য ,চাকচিক্য ,সামাজিকতা ফুটে ওঠে। উৎসব মানেই রঙিন। আজ আমরা এমনি কয়েকটি বিশ্বের বৃহৎ ও রঙিন উৎসবের নাম জেনে নেবো।
১) বরফ দিয়ে বানানো প্রতিকৃতি উৎসব ,চীন
চীনের হারবিনে প্রতি বছর ৫ জানুয়ারী থেকে ৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। বরফ ও তুষারপাত থেকেই বিভিন্ন আকৃতি ,নকশা বা ডিসাইন বানানো হয়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ বরফ- কেন্দ্রিক উৎসব।
২)লণ্ঠন উৎসব ,তাইওয়ান
তাইওয়ানের পিংঝি শহরে ‘চাইনিজ জোডিয়াক ‘ এর আদলে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। বড় আকারের ড্রাগন ,ডাইনোসরস সহ বিভিন্ন প্রাণীর ছবি অংকিত লণ্ঠন বছরের প্রথম পূর্ণিমা রাত্রে আকাশে উড়িয়ে দেওয়া হয়। একেই লণ্ঠন উৎসব বলে যা তাইওয়ানবাসীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই লণ্ঠনগুলির গায়ে থাকে তাইওয়ানবাসীদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বর্ণনা।
৩) ভেনিস কার্নিভাল ,ইতালি
এই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হলো বিভিন্ন ধরণের মুখোশ পরিহিত মানুষ। উৎসবে যাঁরাই আসেন তাঁরা বিভিন্ন ডিসাইন বা পছন্দের চরিত্রের মুখোশ পরে আসেন। সর্বপ্রথম এই উৎসবটি চালু হয় ১১৬২ সালে। এটি হলো ইতালির সবচেয়ে বড় উৎসব। স্থানীয়রা একে ‘কার্নিভাল ডি ভেনেজিয়া ‘ নামেও অভিহিত করেন।
৪) আন্তর্জাতিক বেলুন ফেস্টিভ্যাল ,আমেরিকা
বেলিন ফেস্টিভ্যাল হলো আমেরিকানদের সবচেয়ে বড় উৎসব। এটি ১৯৭২ সাল থেকে হয়ে আসছে।নিউ মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হওয়া এই উৎসবে প্রতি বছর অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে অন্তত ৬০০ বেলুন ওড়ানো হয়। ৯ দিনব্যাপী এই উৎসবে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিযোগী ও দর্শনার্থীরা আসেন। ২০১১ সালে এই উৎসবটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান পায়।
৫) টমাটিনো উৎসব ,স্পেন
প্রতি বছর অক্টোবরের শেষ বুধবার স্পেনের ‘বুনোল’ শহরে এই উৎসবটি হয়ে থাকে। এটি স্পেনের সবচেয়ে বড় উৎসব বলা যায় । উৎসবে আগত প্রতিযোগীরা একে অপরের দিকে পিষে ফেলা টমেটো ছুঁড়ে মারেন। অংশকারীদের সুরক্ষার্থে চোখে গগলস্ পড়তে হয় আর পিষে ফেলা টমোটো ছুঁড়ে মারা হয়ে থাকে। কয়েকশ টন টমেটো ট্রাকে করে নিয়ে আসা হয় এবং প্রতিযোগীরা ইচ্ছেমতো নিজেদেরকে টমেটোতে মাখামাখি করে নিতে পারেন! এর সাথে সাথে ট্রাক থেকে জল ছোঁড়া হয় কিছুক্ষণ পর পর।
৬) হোলি, ইন্ডিয়া
ভারতের বসন্তকালীন উৎসব হলো ‘হোলি ‘ উৎসব। সারা দেশেই এই উৎসবটি পালিত হয়। হোলি উৎসব হলো রঙের উৎসব ,প্রেমের উৎসব। এই উৎসবে মানুষ সব রকমেরে ভেদাভেদ ভুলে একে অপরকে রঙে রাঙিয়ে তোলে। এই উৎসবটি একটি ধর্মীয় সংস্কার এর সঙ্গে জড়িত যা এই উৎসবের মাহাত্ম্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
৭) চীনা নববর্ষ, চীন
চীনা নববর্ষ উৎসবটি জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে শুরু হয়। এই উৎসবে বিভিন্ন রঙ আর নকশার বৈচিত্র্য চোখে পড়ার মতন। সব রঙের ব্যবহার হয়ে থাকলেও পোশাক-পরিচ্ছদে লাল রঙের আধিক্য বেশি লক্ষ্য করা যায়। প্যারেডে অংশগ্রহণকারী অসংখ্য মানুষদের পোশাক থেকে চীনা পোশাক পরিচ্ছেদ এর স্টাইল সম্পর্কে আপনি অনেকটাই জানতে পারবেন।
৮) রক ইন রিও, ব্রাজিল
প্রতি দু’বছর পর রিওতে উৎসবটি পালিত হয়। পুরো দক্ষিণ আমেরিকায় বৃহত্তম এবং বিশ্বের সবচেয়ে বর্ণিল গানের উৎসবগুলোর ভেতর ‘রক ইন রিও’ উৎসবটি সবচেয়ে বিখ্যাত। নাচে-গানে মেতে উঠতে বিশ্বের অনেক দেশ থেকে মানুষ এসে থাকেন। অনেক সময়ে সংগীত জগতের বিশিষ্ট শিল্পী যাঁরা বিশ্ব খ্যাত তাঁরাও এই উৎসবে গান গাইতে আসেন।
৯) মেভলানা উৎসব, তুরস্ক
পারস্যের সবচেয়ে বড় কবি, দার্শনিক এবং তাত্ত্বিক ছিলেন মেভলানা, যাকে পশ্চিমা বিশ্ব ‘সুফী রুমী’ হিসেবেই চেনে। তার প্রয়াণ দিবসে তুরস্কজুড়ে মেভলানা উৎসব পালিত হয়, যেখানে পবিত্র গানের তালে-তালে সবাই একধরনের বিশেষ পোশাক পরে নাচে যোগ দেয়। এই উৎসবে থাকে একধরনের পবিত্রতার ছোঁয়া যা মনে প্রশান্তি ফুটিয়ে তোলে।
১০) বিশ্বব্যাপী কার্নিভ্যাল
‘কার্নিভ্যাল’ পৃথিবীতে পালিত সকল উৎসবের মধ্যে আলাদা। ‘রিও কার্নিভ্যাল’কে বলা হয় কার্নিভ্যাল উৎসবের স্বর্গ।মানুষের মিলনমেলার এই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হলো ‘সাম্বা নাচ’। পৃথিবীর অনেক দেশেই কার্নিভ্যাল একটি জনপ্রিয় উৎসব। দেশ -জাতি বৈচিত্র্যের কারণে উৎসবের মধ্যেও থাকে রকমফের কিন্তু তাও এতো উৎসবের ভিড়ে ‘কার্নিভ্যাল’ উৎসবটি বেশ কিছুটা আলাদা।