খেলা-ধূলা
যশস্বী, শিবমদের তাণ্ডবে মাঠেই মারা গেল ঋতুরাজের শতরান

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : ১৪তম আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম হাই স্কোরিং ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দিল রাজস্থান রয়্যালস। কাজে এল না ঋতুরাজ গাডয়কোয়াড়ের অনবদ্য শতরান। যশস্বী জয়সওয়াল এবং শিবম দুবের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে মাঠেই মারা গেল ঋতুরাজের শতরান। আইপিএলের এই দ্বিতীয় পর্বের কোনও ম্যাচই খুব বেশি রান উঠছিল না। কিন্তু শনিবার সব হিসেব পাল্টে দিল রাজস্থান বনাম চেন্নাই ম্যাচ। দুই ইনিংস মিলিয়ে চারশোর কাছাকাছি রান উঠল। শনিবার আবুধাবিতে টসে জিতে চেন্নাইকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। কিন্তু শুরু থেকেই টপ গিয়ারে ব্যাটিং শুরু করেছিলেন ঋতুরাজ।
রাজস্থানের কোনও বোলারই তাঁর হাত থেকে রক্ষা পাননি। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একাই লড়ে গেলেন। ভালো শুরু করেও দলীয় ৪৭ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন চেন্নাইয়ের অপর ওপেনার ফাফ দু’প্লেসি (২৫)। তাঁকে ফিরিয়ে চেন্নাই শিবিরে প্রথম ধাক্কাটি দেন রাহুল তেওয়াটিয়া। এরপর সুরেশ রায়না (৩), মঈন আলিকেও (২১) দ্রুত ফিরিয়ে দেন তেওয়াটিয়া। অম্বাতি রায়াডুও (২) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তাঁকে ফেরান চেতন শাকারিয়া। তবে উল্টো দিকে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন ঋতুরাজ। শেষের দিকে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়ে চেন্নাইকে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৮৯ রানে পৌঁছে দেন ঋতুরাজ। শেষ বলে ছয় মেরে নিজের শতরান পূর্ণ করেন। শতরান করে এ বারের আইপিএলে সর্বাধিক রানের তালিকায় টপকে গেলেন কেএল রাহুলকে। ঋতুরাজের এখন ১২ ইনিংসে রান ৫০৮।
তিন অর্ধশতরানের পাশাপাশি একটি শতরানও হয়ে গেল। চেন্নাই ইনিংসের শেষের দিকেই বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন তিনি। শেষ ৩০ বলে ৭১ রান করেন। শেষে ৬০ বলে ৯ বাউন্ডারি ও ৫ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ১০১ রান করে অপরাজিত থেকে যান ম্যাচের সেরা ঋতুরাজ। জাদেজা ১৫ বলে চার বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৩২ রান করে অপরাজিত ছিলেন। কিন্তু চেন্নাইয়ের জেতার স্বপ্নে জল ঢেলে দিলেন যশস্বী জয়সওয়াল ও শিবম দুবে।
প্রথম থেকেই চেন্নাই বোলারদের দিশেহারা করে দেন যশস্বী। দ্বিতীয় ওভারেই জশ হ্যাজলউড ১৬ রান দেন। সেই শুরু। এর পরের ওভারে স্যাম কারেনকে নেন ১৭ রান। তার পরের ওভারে শার্দূল ঠাকুর দেন ১২। চেন্নাইয়ের পঞ্চম ওভারে হ্যাজলউড ২২ রান দেন। যশস্বীর সঙ্গে শুরুটা ভালো করেছিলেন এভিন লিউইস (২৭)। কিন্তু ৭৭ রানের মাথায় ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে শার্দূল ফেরান লিউইসকে। জুটি ভাঙার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি যশস্বীও। পরের ওভারের প্রথম বলেই ফেরেন যশস্বী। ততক্ষণে তাঁর অর্ধশতরান হয়ে গিয়েছে। হাফ ডজন বাউন্ডারি এবং তিনটি ছয়ের সাহায্যে ২১ বলে ৫০ রান করে আসিফের শিকার হয়ে ফেরেন যশস্বী। পাওয়ার প্লে-তে ৮১ রান তোলে রাজস্থান। যা এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত পাওয়ার প্লে-তে কোনও দলের সর্বোচ্চ রান।
পরপর দু’জন সেট ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাওয়ায় মনে হয়েছিল রাজস্থানের রানের গতি থমকে যাবে। কিন্তু যশস্বী এবং লিউইস যেখানে শেষ করেছিলেন ঠিক সেখান থেকেই শুরু করেন সঞ্জু এবং শিবম। আইপিএলে অন্যতম ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যান সঞ্জু। কিন্তু এদিন তাঁকেও ছাপিয়ে গেলেন শিবম। তিনিও চেন্নাইয়ের বোলারদের রেয়াত করেননি। কারেন, হ্যাজলউড, মঈন আলিদের অবলীলায় ফেললেন মাঠের বাইরে। সঞ্জু ২৪ বলে ২৮ রান করে আউট হয়ে ফিরে গেলেও শিবমের তাণ্ডবে ১৭.৩ ওভারেই ৩ উইকেট খুইয়ে ১৯০ রান তুলে নেয় রাজস্থান। শেষে ৪২ বলে চারটি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন শিবম। ৮ বলে ১৪ রান করে তাঁর সঙ্গে অপরাজিত থেকে যান গ্লেন ফিলিপস। তবে এই ম্যাচে হারলেও ১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই রইল আগেই প্লে-অফ নিশ্চিত করে ফেলা ধোনি ব্রিগেড। ১২ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে রাজস্থান।