খেলা-ধূলা
বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের হ্যাটট্রিক কিউয়িদের, ওয়ার্নার-মার্শ অ্যাটাকে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: তাহলে কি এবার পাকাপাকি ভাবেই চোকার্স তকমাটা লেগে গেল কিউয়িদের গায়ে? ২০১৫, ২০১৯ এবং ২০২১- তিন বার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে তিনবারই হার। রানার্সের হ্যাটট্রিক। রবিবার দুবাইয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালেও ট্র্যাডিশন বজায় রাখল ব্ল্যাক ক্যাপসরা।
নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হল অস্ট্রেলিয়া। সেইসঙ্গে সবথেকে বেশিবার আইসিসি টুর্নামেন্টের খেতাব জয়েরও নজির গড়ল অজিরা। পাঁচবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ, দু’বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও একবার এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ- মোট আটবার আইসিসি টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হল অস্ট্রেলিয়া। অথচ রবিবার ২০১৫ বিশ্বকাপ ফাইনালের মধুর বদলা নেওয়ার সুযোগ ছিল নিউজিল্যান্ডের কাছে। সেই সুযোগটা তো হাতছাড়া হলই, সেই সঙ্গে বিফলে গেল কেন উইলিয়ামসনের লড়াই। টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়ে ছিলেন অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তখনই প্রথম তিন ওভারে ২৩ রান উঠে গেলেও চতুর্থ ওভারেই হ্যাজলউডের বলে আউট হয়ে যান ড্যারিল মিচেল (১১)। তবে মার্টিন গাপ্তিল এবং কেন উইলিয়ামসন প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে দেন। দু’জনেই ইনিংস গড়ায় মন দেন। তবে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই গাপ্তিলকে ফিরিয়ে দেন জাম্পা।
৩৫ বলে ২৮ রান করে করেন কিউয়ি ওপেনার। যদিও উইলিয়ামসন ছিলেন নিজের ছন্দেই। ৪৮ বলে ৮৫ রান করেন কিউয়ি অধিনায়ক। দশটি চার এবং তিনটি ছয় দিয়ে সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস। তাঁর ইনিংসের দৌলতেই ৪ উইকেট ১৭২ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। মাঝে গ্লেন ফিলিপস ১৮ রান করেন। শেষবেলায় জিমি নিসাম সাত বলে ১৩ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের চার উইকেটের মধ্যে তিনটিই নিয়েছেন হ্যাজেলউড। বিশ্বকাপের ফাইনালে লড়াইয়ের মতো স্কোর তুলে নিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু শুরু থেকেই ডেভিড ওয়ার্নার এবং মিচল মার্শের ধ্বংসাত্মক ব্যাটিংয়ে অজিদের প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের খেতাব জয় অনেকটাই সহজ করে দিয়েছিল। যদিও ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই অজি অধিনায়ক ফিঞ্চকে (৫) ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট। তারপরই শুরু হয় ওয়ার্নার-মার্শের ধ্বংসলীলা। বোল্ট সহ ইশ সোধি, অ্যাডাম মিলনদের নিয়ে দু’জনেই ছেলেখেলা করলেন। অথচ সদ্য সমাপ্ত আইপিএল-এ এই ওয়ার্নারকেই অধিনায়কত্ব খুইয়ে মাঠের বাইরে বসতে হয়েছিল। তাঁকে সরিয়ে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দলের অধিনায়ক হয়ে ছিলেন কেন উইলিয়ামসন।
এদিন সেই উইলিয়ামসনেরই স্বপ্নভঙ্গের ‘নায়ক’ হয়ে উঠলেন তিনি। বিশ্বকাপের শুরুতেও যদিও ছন্দে ছিলেন না। কিন্তু ‘ওস্তাদের মার শেষ রাতের’ মতো ফাইনালে বাজিমাত করে গেলেন ৩৫ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ অজি ওপেনার। সেই সঙ্গে মার্শও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন। দ্বিতীয় উইকেটে দু’জনের পার্টনারশিপে উঠল ৯২ রান। ১৩ তম ওভারে বোল্টের বলে ৩৮ বলে চার বাউন্ডারি ও তিন ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৫৩ রান করে ওয়ার্নার যখন ফিরলেন তখন ট্রফি জয়ের স্বাদ পেয়ে গিয়েছে ক্যাঙ্গারু বাহিনী। তাতে যদিও অজিদের খেতাব জয়ে বিলম্ব হয়নি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে বাকি কাজটা সেরে ফেলেন ম্যাচের সেরা মার্শ। ৭ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ ও খেতাব জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ৫০ বলে হাফ ডজন বাউন্ডারি ও ৪ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৭৭ রান করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন মার্শ। ১৮ বলে ৪ বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ২৮ করে অপরাজিত থেকে যান ম্যাক্সওয়েল।