বিনোদন
নতুন বার্তা দেবে ‘বাধাই দো’, কী সেই বার্তা?

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: প্রত্যেক মা-বাবার কাছে তাঁদের সন্তান সবচেয়ে প্রিয়, কাছের। তাদের ভালো রাখার বা তাদের ভালো করার জন্য তারা সবসময় তৎপর হয়ে থাকেন। সন্তানরা কীভাবে মানুষের মতো মানুষ হবে সেই নিয়ে মা-বাবারা সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই চিন্তিত থাকেন।
কী করলে সন্তানদের ভালো হবে, সেই চিন্তায় নিজেদের কথা অনেক সময় ভুলে যান অবিভাবকরা। সন্তানরা বড় হয়ে কী হবে, সে চিন্তা যেমন থাকে আবার তারা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তাদের বিয়ে নিয়েও অনেক স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু তাঁদের দেখা স্বপ্ন সব সময় পূরণ হয় না। তাঁরা যেমনটা ভাবেন তেমনটা হয়তো ঈশ্বর ভাবেন না। অর্থাৎ মা-বাবার সঙ্গে সন্তানদের সব সময় মতের মিল হবে তা নয়। কারণ সন্তানদের নিজস্বতা থাকতেই পারে। কিন্তু অভিবাবকরা অনেক সময় সন্তানদের চাহিদাকে মানতে পারেন না। এই মানতে না পারার পিছনে অনেক কারণ থাকে। যেমন – বহু বছর ধরে চলে আসা রীতি, কুসংস্কার, সমাজের বিধি-নিষেধ, আরও অনেক কিছু। তবে এই সমাজে চলে আসা এক সংস্কার থেকে বেরোনোর বার্তা দিয়েছে নতুন মুক্তি পাওয়া ছবি ‘বাধাই দো’। প্রত্যেক ছবিতেই আমরা দেখি যে নায়ক-নায়িকার প্রেম।
এটাই স্বাভাবিক বলে আমরা দেখি বা দেখতে পছন্দ করি। কিন্তু হর্ষবর্ধন কুলকার্নির ‘বাধাই দো’ ছবিতে যা দেখানো হয়েছে সেটা একটু আলাদা। আলাদা বলতে চিরাচরিত যে গল্প আমরা দেখি তার থেকে পৃথক। কিন্তু পৃথক বলে যে সেটা ব্রাত্য, একদমই না। বরং বর্তমান সময়ে এই কাহিনী খুবই প্রাসঙ্গিক বলা যেতে পারে। দুই সমকামী মানুষের কথা তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে। তারা তাদের মতো ঠিক। কিন্তু পরিবার, সমাজ এসবের কারণে তাদের জীবনে আসা নানান পরিস্থিতি এবং তা থেকে নেওয়া তাদের সিদ্ধান্ত- এসব কিছুই ফুটে উঠেছে এই ছবিতে। এই ছবিতে দুই মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাজকুমার রাও এবং ভূমি পেডনেকর। রাজকুমার পুলিশের চাকরিতে কর্মরত। কিন্তু সে সমকামী। ভালোবাসে তার লিঙ্গেরই একজনকে। আবার ভূমি একজন স্কুল শিক্ষক। সেও সমকামী। তারও আছে একজন ভালোবাসার মানুষ।
কিন্তু একটা সময়ের পর তাদের বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু তারা তাদের কথা পরিবারের কাউকে বলতে পারে না। এই সময় এই দু’জন বিবাহ করার সিদ্ধান্ত নেয় শুধুমাত্র বাইরের লোকের জন্য। তাদের মধ্যে চুক্তি হয় তারা শুধু লোক দেখানোর জন্য বিয়ে করে একসঙ্গে থাকলেও যে যার ভালোবাসার মানুষের হয়েই থাকবে। কিন্তু যে কথা লুকানোর জন্য তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেই গোপন কথাই আস্তে আস্তে সামনে আসতে থাকে। এরপর গল্পে আছে আরও টুইস্ট। তা ছবিটি না দেখলে জানা যাবে না। প্রত্যেক মানুষেরই অধিকার আছে নিজের জীবন নিজের মতো করে বাঁচবার। কিন্তু কখনও কখনও সেটা হয়ে ওঠে না শুধুমাত্র পরিবার, সমাজের কারণে। সমকামীদের বিবাহ এখন আইনসিদ্ধ হলেও সমাজ আজও সেটাকে মানতে পারেনি। কত ছেলে-মেয়েরা এই কারণে মানসিক যন্ত্রনায় ভোগে। সমাজের এই সমকামীতাকে না স্বীকার করার বিরুদ্ধে কোথাও একটা বার্তা দিয়েছে এই ছবিটি। চিরাচরিত ছবির থেকে তাই পৃথক আবেদন আনতে পেরেছে দর্শকের মনে ‘বাধাই দো’ ছবিটি।