বাংলার খবর
কেন ফাঁসির সাজা, আদালতেই নথি খতিয়ে দেখলেন ধৃত লস্কর জঙ্গি
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কেন তাঁকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে? আদালতের পূর্ববর্তী রায় এবং তদন্তের সমস্ত নথি মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে নিজেই খতিয়ে দেখলেন ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি সংগঠনের সদস্য শেখ আব্দুল নইম। বিচারপতির নির্দেশে আদালতকক্ষে দাঁড়িয়েই তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া ফাঁসির সাজার সমস্ত নথি প্রায় আধঘন্টা ধরে খুঁটিয়ে পড়ে দেখেন নইম। সেইসঙ্গে এদিন নিজেকে আরও একবার নির্দোষ এবং ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন তিনি। এবং পরবর্তী শুনানি গুলোতে নিজের হয়ে তিনি নিজেই সওয়াল জবাব করতে চান বলেও আবেদন করেছেন। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার। ওইদিনই তাঁর আবেদন নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। তবে তাঁর আইনজীবী অনিতা গৌড় জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারের শুনানিতে আদালতে উপস্থিত থাকবেন না নইম। আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে পরবর্তী শুনানিগুলোতে জঙ্গি সদস্যদের সংগঠনের ওই সদস্য আদালতে উপস্থিত থাকতে পারবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। মঙ্গলবার কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়েই প্রেসিডেন্সি জেল থেকে তাঁকে আদালত হাজির করা হয়। শুনানি চলাকালীন কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল গোটা আদালত চত্বর।
উল্লেখ্য, মৃত্যদণ্ডের সাজাকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন লস্কর-ই-তৈয়বার ওই জঙ্গি। ব্যক্তিগতভাবে মৃত্যুদণ্ডের সাজার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন শেখ আব্দুল নইম। ২০০৭ সালে বেআইনি ভাবে বেনাপোল-পেট্রোপোল সীমান্ত হয়ে ভারতে ঢোকার সময় সীমান্ত থেকে নইম সহ তাঁর আরও তিন সঙ্গীকে গ্রেফতার করে বিএসএফ। ধৃতদের কাছ থেকে বিশাল পরিমাণ বিস্ফোরক পাওয়া যায়। জানা যায়, ভারতে বড়সড় নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন তাঁরা। মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদের বাসিন্দা নইম ছাড়াও ওই দলে ছিলেন মুজফ্ফর আহমেদ নামে এক পাকিস্তানি। এ ছাড়াও মহম্মদ ইউনুস নামে এক কাশ্মীরে বসবাসকারী ছিলেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বনগাঁর অতিরিক্ত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২১ (রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো), ৪৬৮ (জালিয়াতি), ৪৭০ (নথি জালিয়াতি) এবং ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ (ভারতের বাইরে ভারতের একটি অঞ্চলে থাকা) ধারা সহ আইপিসির বেশ কয়েকটি ধারায় অভিযুক্ত করে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে। জেলা আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাইকোর্টে নিজে সওয়াল করার জন্য আবেদন করেন নইম। তারপরই তাঁকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তিহার জেল থেকে নিয়ে আসা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। মঙ্গলবার সেই মামলারই শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। ২০০৬ সালে মুম্বই বিস্ফোরণ মামলার সঙ্গেও নইমের যোগসূত্র ছিল বলে জানা গিয়েছে।