কে যেন সাদা কাপড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, হোস্টেলে অশরীরীর আতঙ্ক

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাত বাড়লেই শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন রকমের অদ্ভুত শব্দ। কে যেন সাদা কাপড় পরে হেঁটে বেড়াচ্ছ হোস্টেলের সর্বত্র। অথচ তাকে দেখা যাচ্ছে না। ত্রিপুরাতে ভূতের হানা! মহিলাদের হোস্টেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে নাকি ভূত! হোস্টেলের ঘরে ঘরে ঢুকে নাকি তাণ্ডব নৃত্য চালাচ্ছে অশরীরীরা! ত্রিপুরার ধলাই জেলার আমবাসার কস্তুরবা গান্ধী গার্লস হোস্টেল নাকি এখন ভূতেদের ডেরায় পরিণত হয়েছে। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা হোস্টেল জুড়ে তৈরি হয়েছে আতঙ্কের পরিবেশ। ভয়েতে হোস্টেল ছেড়ে পালাচ্ছেন অনেক আবাসিক ছাত্রী।

এই প্রথম নয়, বছর চারেক আগেও কস্তুরবা গান্ধী গার্লস হোস্টেলে ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। তখনও আতঙ্কে হোস্টেল ছেড়ে পালিয়ে ছিল ছাত্রীরা। কিছু অস্বাভাবিক বিষয় দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন ছাত্রীরা। তখনও তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন হোস্টেলের ভিতরে অশরীরী আত্মারা ঘুরে বেড়ায়। এবারও তাঁদের একই অভিযোগ। অশরীরীরা নাকি তাঁদের ঘরে চালাচ্ছে তাণ্ডব নৃত্য। আতঙ্ক এতটাই ছড়িয়েছে যে আবাসিক ছাত্রীরা আর হোস্টেলে থাকতে চাইছেন না। ভূতের ভয়ে অনেকেই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।

হোস্টেলের ওয়ার্ডেন জানিয়েছেন, ‘গত ২৭ জুন থেকেই হোস্টেলে ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ওইদিন রাতে তিনজন ছাত্রী দেখে সাদা শাড়ি পড়ে কে যেন ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই দেখেই ওই তিন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরের দিনই তারা হোস্টেল ছেড়ে চলে গিয়েছে। এরপর আবারও একই ঘটনা ঘটে। আরও দু’জন ছাত্রী হোস্টেলে অশরীরী আত্মা ঘুরে বেড়াতে দেখে। তারপরই রটে যায় হোস্টেলে ভূত ঘুরে বেড়াচ্ছে।’

ছাত্রীদের মধ্যে এই আতঙ্ক কাটাতে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের অভিভাবক, স্থানীয় লোকজন এবং শিক্ষা বিভাগের আধিকারিকদের ডেকে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। কিন্তু ওই বৈঠকের পরও পরিস্থিতি বদলায়নি। বরং আরও জাঁকিয়ে বসেছে আতঙ্ক। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। ছাত্রীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকদেরও ধারণা, ওই অশরীরী আত্মা নাকি তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। আর এই আতঙ্কে ইতিমধ্যেই হোস্টেলের ৫০ জন আবাসিক ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা হোস্টেল খালি করে চলে যাবে।

২০১৮ সালেও প্রত্যন্ত গঙ্গানগরের গার্লস হোস্টেলে একই রকম ভাবে ‘তেনাদের’ ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন ছাত্রীরা। তখনও ভূতের ভয়ে হোস্টেল খালি করে চলে গিয়েছিলেন তাঁরা। পরে স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে জানতে পারে নিরাপত্তার খামতিকে কাজে লাগিয়ে এলাকার এক মাদক চক্র নিজেদের কার্যসিদ্ধি করতেই ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়ে ছিল। এবারও কি আমবাসার কস্তুরবা গান্ধী গার্লস হোস্টেলে ভূতের আতঙ্কের পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কি না, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।