কে পুর ভোট স্থগিত করতে পারে! শুনানিতে রাজ্য ও কমিশনের মধ্যে টানাপড়েন, স্থগিত রায়দান
Connect with us

দেশের খবর

কে পুর ভোট স্থগিত করতে পারে! শুনানিতে রাজ্য ও কমিশনের মধ্যে টানাপড়েন, স্থগিত রায়দান

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: উদ্বেগজনক করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আগামী ২২ জানুয়ারি রাজ্যের ৪ পুর নিগমের ভোট পিছিয়ে দেওয়ার মামলার শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে আগামী ২২ তারিখ শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগর এবং বিধান নগর কর্পোরেশনে ভোট আদৌ হবে কিনা, সেই নিয়ে সংশয় এখনও কাটলো না।

ভোট পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কে নিতে পারে? বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের এজলাসে শুনানিতেই এই নিয়ে রাজ্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে টানাপোড়েন চলল। রাজ্য সরকার বল ঠেলল নির্বাচন কমিশনের কোর্টে আর নির্বাচন কমিশনও দায় চাপালো সরকারের ওপর। প্রায় এক ঘণ্টার শুনানিতে কোনও পক্ষই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে না পারায় তিরস্কৃত হল প্রধান বিচারপতির কাছে। শেষে অত্যন্ত ক্ষোভপ্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘২৭ বছর হয়ে গেল আইন তৈরি হয়েছে। তার পরও নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে কেউ স্পষ্ট নয়! একে অপরের দিকে আঙুল তুলছেন। এ তো কল্পনাও করা যায় না।

‘ বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতেই রাজ্যের আইনজীবী সম্রাট সেন জানান, ইতিমধ্যেই নির্বাচন হতে যাওয়া ৪ কর্পোরেশনে ৯৮ শতাংশ করোনার প্রথম টিকা এবং ৭২ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য এদিন আদালতে জানায়, আসানসোলে ১৬.০৪ শতাংশ সংক্রমণ হয়েছে। সেখানে প্রথম ডোজ হয়েছে ৯৮ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজ হয়েছে ৯৫ শতাংশ। ৯ শতাংশ সংক্রমণ হয়েছে চন্দনগরে। বিধাননগরে দু’টি ডোজ পেয়েছেন ১০০ শতাংশ বাসিন্দা। ১৯.০৫ শতাংশ সংক্রমণ শিলিগুড়িতে। সেখানে ১০০ শতাংশ প্রথম ডোজ ও ৯২ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এদিন আবারও অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক দলগুলো প্রচার করছেন প্রচুর মানুষ নিয়ে। কোনও বিধি-নিষেধ মানছে না। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এত লোক জড়ো হলে করোনা আরও বাড়বে।

Advertisement

এত কিছু ব্যবস্থার পরেও প্রচুর লোক একত্রে জড়ো হচ্ছেন। অবিস্মরনীয় পরিস্থিতিতে ভোট বন্ধ না করলে সংক্রমণ আরও বাড়বে। তাই কমিশন না করলে, আদালত ভোট পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিক বলেও দাবি জানিয়েছেন তিনি। কমিশনের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র আদালতকে জানান ভোটের দিন ঠিক করে ফেলেছে রাজ্য সরকার। তখন বিচারপতি কমিশনকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, তাহলে এখন এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত? তার উত্তরে কমিশনের আইনজীবী জানান এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তখন রাজ্য সরকারের পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে দিন ঘোষণা করেছে। রাজ্য তাদের মতামত জানিয়েছে।

যদি ভোট পিছতে হয় তাহলে কমিশনের একমাত্র দায়িত্ব। আইন প্রয়োগ করে তারা সেটা করতে পারে।’ তখন প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘কমিশন বলছে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে করা যায় না। কে সঠিক বলছেন?’ উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ‘এই মুহুর্তে ভোট পিছোতে কমিশন একাই পারে।’ কমিশনের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, ‘দিন ঠিক করে রাজ্য। একবার দিন ঠিক হলে যাবতীয় দায়িত্ব কমিশনের হয়। কিন্তু সেটা নির্বাচন পরিচালনার জন্য। নির্বাচন বন্ধ করার দায়িত্ব কমিশনের নয়। একবার রাজ্য যদি দিন ঠিক করে, কমিশন কি তা বাতিল করতে পারে? ফলে কমিশন রাজ্যের সঙ্গে একমত নয়।’ প্রধান বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কে ভোট বন্ধ করতে পারে? নাকি দুই পক্ষের মতামত নিয়ে এটা বন্ধ হয়, সেটা স্পষ্ট করুন।’ তখন কমিশনের আইনজীবী জানান, রাজ্যের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথিরিটির সঙ্গে কথা বলেই কমিশন ভোট বন্ধ করতে পারে। কিন্তু দুই পক্ষের কোনও যুক্তিতেই সন্তুষ্ট হয়নি আদালত। তাই শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রেখেছেন প্রধান বিচারপতি।

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.