আন্তর্জাতিক
ডাকাতি করতে এসে গৃহকর্ত্রীকে বৌদি বলে সম্মোধন ডাকাতদের!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: দল বেঁধে ডাকাতি করতে এসেছিল ডাকাতরা। তবে এই ডাকাত দলের সম্ভ্রম আছে। তা নাহলে গৃহকর্ত্রীকে ‘বৌদি’ বলে সম্বোধন করতেন না! হ্যাঁ, ডাকাতি করতে এসে গৃহকর্ত্রীকে বৌদি বলে সম্বোধন করল ডাকাতরা। শুধু তাই নয়, ডাকাত আবার এও বলেছিল যে তারা কাউকে মারতে আসেনি। বাড়িতে যে টাকা-পয়সা, সোনাদানা আছে তারা সেগুলোই নিতে এসেছে। ডাকাতের মুখে বৌদি সম্বোধন শুনে রীতিমতো চমকে উঠেছিলেন গৃহকর্ত্রীও। তবে, সেই ডাকাত দলের শুধু সম্মানবোধ আছে তাই নয়, তাদের মনও ছিল খুব দয়ার। ডাকাতি করার জন্য ওই গৃহকর্ত্রীর শ্বশুরের হাত-পাও বেঁধে দিয়েছিল তারা। সেই সময় শ্বশুরমশাইয়ের হাতে মশা কামড়ে ছিল। ডাকাত দলের একজন মশাও আবার তাড়িয়ে দেয়। তারপর বাড়িতে থাকা গহনা, ডিএসএলআর ক্যামেরা, নগদ তিন লক্ষ ৩১ হাজার টাকা, বিছানার চাদর, জামা-কাপড় সব কিছু নিয়েই চম্পট দেয়। তবে যাওয়ার আগে ওই গৃহকত্রী ও তাঁর শ্বশুর মশাইকে একটি ঘরে আটকে রেখে তাঁদের তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে গিয়েছিল তারা।
গত এপ্রিল মাসে রমজান চলাকালীন ঘটনাটি ঘটেছিল বাংলাদেশের ঢাকার উত্তরখান থানার এলাকার ভাটুলিয়ায়। যদিও ঘটনার দুই মাস পর পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে সেই ডাকাত দল। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মহম্মদ কায়সার রিজভী কোরায়েশী জানিয়েছেন, ওই ঘটনার প্রায় দেড় মাস পরে জাকির হোসেন, সবুজ, ওমর ও ওসমান গণি (স্বপন) নামে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেরার মুখে তারা ওই ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার মামলা রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
এই ডাকাতির ঘটনাটি ঘটেছিল মহম্মদ আহসান উদ্দিন নামে জনৈক এক ব্যক্তির বাড়িতে। তাঁর বাড়িটি ছিল ঢাকা মহানগর পুলিশের সীমানার শেষ বাড়ি। ডাকাতির দিন রাতে একটি ঘরে ঘুমিয়েছিলে আহসানের স্ত্রী শান্তা আক্তার ও তাঁর মেয়ে। অন্য একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন আহসানের ষাটোর্ধ্ব বাবা বজলুল হক সরকার। রাত দেড়টা নাগাদ ডাকাতি করতে বাড়িতে ঢুকে ছিল চারজনের সেই ডাকাত দল। সকলের মুখ গামছা দিয়ে ঢাকা ছিল। শান্তার ওড়না দিয়েই ডাকাতেরা তাঁর শ্বশুর মশাইয়ের হাত, পা বেঁধে দিয়েছিল। তারপর তাঁকে টাকা-পয়সা, গয়না বার করতে বলে ডাকাতরা। তখনই ডাকাত দলের সদস্য শান্তাকে বৌদি বলে সম্বোধন করে। এবং ডাকাতরা তাঁকে বলেন, তারা তাঁদের কাউকে মারতে আসেনি। গোটা ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল বাড়ির তিন সদস্যই। পরে ডাকাতরা চলে গেলে তাঁদের চিৎকার শুনে পাড়া-প্রতিবেশীরা এসে তাঁদের মুক্ত করে।
পুলিশের অনুমান পরিচিত কেউই ডাকাতদের ওই বাড়ির সমস্ত তথ্য দিয়েছিল। কারণ ওই বাড়িতে টাকা আছে তা দুষ্কৃতীরা জানলো কী করে! পুলিশ জানতে পেরেছে, পাড়ার একটি দোকানে কথার মাঝে শান্তার শ্বশুরমশাই বলে ফেলেছিলেন যে তাঁর বাড়িতে নগদ তিন লক্ষ টাকা আছে। সেখান থেকেই খবরটা ডাকাতদের কানে পৌঁছে ছিল। তবে এই ঘটনায় আতঙ্ক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি গোটা পরিবার।