বাংলার খবর
যা বলার দলের মধ্যে বলুন, বঙ্গভঙ্গ নিয়ে রাজ্য বিজেপির মুখ বেঁধে দিলেন নাড্ডা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজ্যাভাগ নিয়ে বিভিন্ন সময়েই বঙ্গ বিজেপির নেতাদের মুখে শোনা গিয়েছে নানান মন্তব্য। যা বিরোধী দল তৃণমূলকে যেমন কটাক্ষের রসদ জুগিয়েছে তেমনই কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বকে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে। তাই রাজ্যভাগ নিয়ে দ্বিধা বিভক্ত বঙ্গ বিজেপির নেতাদের মুখ বেঁধে দিলেন জেপি নাড্ডা। এমনকি, নীতিগত বিষয়েও কেউ মুখ খুলতে পারবেন না বলেই নির্দেশ দিয়েছেন নড্ডা।
‘রাজ্যভাগ নিয়ে দলের কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারবেন না। যার যা দাবী, তা দলের মধ্যেই বলুন। আলোচনার মাধ্যমেই নীতি নির্ধারণ করবে দল। মমতার মতো রাজনিতী করে না বিজেপি।’ বৃহস্পতিবার দুপুরে সায়েন্স সিটি অডিটরিয়ামে মন্ডল সভাপতিদের নিয়ে বৈঠকে এই বার্তাই দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।
উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে যেমন সরব হয়েছেন বিজেপির একাধিক বিধায়ক, সাংসদ, আবার দলেরই এক পক্ষ রাজ্য ভাগের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। যা চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। এর মধ্যেই আবার বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ জঙ্গলমহলকে নিয়ে পৃথক রাঢ় বাংলা রাজ্যের দাবি জানিয়েছেন। দলের বিধায়ক, সাংসদদের প্রকাশ্যে রাজ্য ভাগের দাবি বাংলার মানুষ ভালো চোখে নিচ্ছে না বলে সম্প্রতি আরএসএস রিপোর্ট দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, সেই রিপোর্টে নাকি বলা হয়েছে, বঙ্গভঙ্গের দাবির জন্যই রাজ্যে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া নির্বাচনগুলোতে মানুষ বিজেপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। দলের সাংসদ, বিধায়করা যদি বারবার বঙ্গভঙ্গের দাবি তোলেন তাহলে ২৪এর লোকসভা নির্বাচনেও বাংলা থেকে বিজেপিকে খালি হাতে ফিরতে হবে বলে সংঘের দেওয়া রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই কারণেই বাংলা ভাগ নিয়ে বৃহস্পতিবার বঙ্গ বিজেপির মুখ জেপি নাড্ডা বেঁধে দিলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সেই সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের আরও বেশি করে জনসংযোগ বাড়ানোর এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তিনি বলেন, ‘দলকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আরও বেশি করে মানুষের কাছে যেতে হবে। বিধায়কদের রোজ সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে সকলের সঙ্গে দেখা করতে হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাঁদের সুখ-দুঃখের কথা শুনতে হবে। অভাব-অভিযোগ শুনতে হবে। কারও কোনও সমস্যা থাকলে তা শুনে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। অনেকক্ষেত্রে বহু মানুষের বিভিন্ন সার্টিফিকেট পেতে সমস্যা হয়। সেদিকটা লক্ষ্য রাখবেন। প্রতি মাসে ৫ দিন নিজের এলাকা পরিদর্শন করুন। ছোট ছোট ভাগে এলাকা ভাগ করুন। শুধু ব্যক্তিগত সমস্যা নয়, এলাকার সমস্যা সমাধান করুন। স্থানীয় প্রশাসন, জেলা শাসক-পুলিশ সুপার সহযোহিতা না করলে বার অ্যাসোসিয়েশানের দ্বারস্থ হন।’
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ বেলুড় মঠে যান জেপি নাড্ডা। তাঁর আগমনকে কেন্দ্র করে হাওড়া বিজেপি কর্মকর্তাদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলুড় মঠের মূল মন্দির দর্শন করার পর মঠের গঙ্গার ঘাট ও সংগ্রহশালাও পরিদর্শন করেন নাড্ডা। মঠের প্রধান মহারাজের সঙ্গেও দেখা করেন। বেলুড় মঠে তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বালির প্রাক্তন বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া।