মাতৃত্ব অনেক সময়ই কি ডেকে আনে মানসিক অবসাদ
Connect with us

লাইফ স্টাইল

মাতৃত্ব অনেক সময়ই কি ডেকে আনে মানসিক অবসাদ

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : যে কোনো মানুষ বা পরিবারের কাছে সন্তান আগমন দারুন একটি খুশির খবর। বিশেষত ,যিনি মা হতে চলেছেন তাঁর কাছে জীবনের পরম প্রাপ্তি এটি। কিন্তু একজন মা এর কাছে সন্তান ধারণ থেকে সন্তান জন্ম দেওয়ার এই পুরো সময়টা অনেক ত্যাগ ও কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। যে মা হয়েছেন তিনি একমাত্র এই বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারবেন। কিন্তু যে নতুন মা হতে চলেছে তাঁর কাছে পুরো জিনিসটাই থাকে অজানা। তাই অনেক সময়ই আনন্দের মাঝেও যিনি মা হতে চলেছেন তাঁকে শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকেই কষ্ট নিতে হয়। শারীরিক কষ্ট অনেক সময় বোঝা গেলেও মানসিক কষ্ট বা অস্থিরতা আমরা বুঝতে পারি না। কিন্তু এই মানসিক কষ্টের কথা যদি আমরা এড়িয়ে যাই তাহলে পরবর্তীকালে এই সমস্যা অনেক গুরুতর আকার নিতে পারে। তাই আমাদের ভাবী-মায়ের মানসিক সমস্যার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে ভাবী মায়েদের মানসিক সমস্যা হয় কেনো?আসুন জেনে নি কেনো তাদের এই সমস্যা হয়-

গর্ভাবস্থায় ও প্রসবের পরে মায়েদের মধ্যে দেখা দেয় মন খারাপ বা বিষন্নতার মনোভাব। আসলে মাতৃত্ব নারীদের জীবনে আনে এক বিরাট পরিবর্তন। এক ছন্দে জীবন চলতে চলতে যখন আরেক ছন্দে নিজের জীবনকে নিয়ে আসতে হয় তখন স্বাভাবিক ভাবেই মনে অনেক ভয় ,অনেক প্রশ্ন দানা বাঁধে। অনেকে ভাবেন তাঁরা ভালো মা হতে পারবেন তো ?সন্তানের সঠিক দেখভাল করতে পারবেন তো ? আবার এটাও ভাবেন যে তাঁকে এতো শারীরিক কষ্ট ও মানসিক চাপ নিতে হচ্ছে ওই বাচ্ছার ই কারণে। অনেকে হয়তো মা হবেন বলে প্রস্তুত ছিলেন না কিন্তু তিনি মা হতে চলেছেন এই বিষয়টিও মানসিক চাপের কারণ হয়ে থাকে।

Advertisement

তবে এই সব মানসিক কষ্ট বা ভাবনা-চিন্তার নির্দিষ্ট কোনো কারণ থাকে তা নয়। গর্ভাবস্থায় অনেক শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনে হরমোনের তারতম্য ঘটে। স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টিও হয়। এরফলে মায়েদের আবেগীয় পরিবর্তন হয়ে থাকে। এছাড়াও ,সঠিক পুষ্টি ,বিশ্রাম ,পারিবারিক চাপ ,শান্তির অভাবেও ভাবী মায়ের মনে প্রভাব ফেলে।

গর্ভাবস্থায় বা সন্তান জন্মের পরে অনেক সময়ই মায়ের মন খারাপ থাকে ,বিষন্নতা গ্রাস করে। অনেক সময় তাদের আচরণ বোঝা যায় না -কেউ চুপ হয়ে যায় ,আবার কেউ অল্পতেই কেঁদে ফেলেন বা চিৎকার করেন। খাবারের প্রতি অনীহা ,কেউ বেশি ঘুমান আবার কারোর চোখে ঘুম থাকে না। দিনের বেশির ভাগ সময়েই মন ভারাক্রান্ত থাকে ,মনে জীবন থেকে সব হারিয়ে গেলো। নিজের প্রতি যত্ন নিতে ইচ্ছে করে না। আবার ,অনেক সময়ই এই মানসিক সমস্যা এমন রূপ নেয় যে মা নিজের ক্ষতি করে ফেলেন বা সন্তানকে চরম শত্রু মনে করে তার ক্ষতি করে বসেন।

যেসব মায়েদের অল্প মানসিক বিষন্নতা দেখা যায় তাদের ক্ষেত্রে কথা বলে ,তার পাশে আমরা সবাই আছি সেকথা বুঝিয়ে সুস্থ করা যায়। পরিবারের সহযোগিতাই এক্ষেত্রে ওষুধের কাজ করে। কিন্তু যে সব মায়েরা গুরুতর বিষণ্ণতায় ভোগেন তাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। মা ও সন্তান দুজনেরই যত্ন নেওয়া উচিত এসময়।

Advertisement

সন্তান জন্মের পর মা যদি চুপ হয়ে পরে বা সন্তানের প্রতি যত্নবান না হন ,সন্তানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন সেক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

তবে এধরণের মানসিক সমস্যা অনেক দ্রুত সেরে যায় সঠিক যত্ন ও চিকিৎসার দ্বারা। তবে ভাবী -মা বা নতুন মাকে সন্তান জন্ম নেওয়ার আগে থেকে গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মের পর কি কি করণীয় সেই বিষয়ে জানতে হবে। তাহলে মানসিক চাপ অনেকটাই কমবে। এর পাশাপাশি ,পরিবারের সদস্যদের এই সময় মায়েদের প্রতি বিশেষ যত্নবান,সহানুভূতিশীল হতে হবে। তাঁরা যেনো কোনো সময়ই নিজেকে অসহায় বা একা না মনে করেন সেই দিকে নজর রাখতে হবে।

Advertisement
Continue Reading
Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.