বাংলার খবর
মনের অদম্য জোর, চন্দ্রবোড়ার কামড় খেয়েও মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসল গৌতম

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: খাতায় উত্তর লেখার সময়ে শরীরটা হঠাৎ করেই নীল হয়ে যাচ্ছিল। প্রশ্ন করতেই পরীক্ষার্থী বলল ‘সাপে কামড়েছে’! শরীর নীলাভ হয়ে গিয়েছে, গায়ে হাত পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা। পরীক্ষাকেন্দ্রে ধীরে ধীরে হেলে পড়ছিল পরীক্ষার্থী। দেখেই সন্দেহ হয়েছিল শিক্ষকদের। তাঁরা প্রশ্ন করেন ছাত্রকে।
আর তাতেই সামনে এল আঁতকে ওঠার মতো ঘটনা।জানা গিয়েছে, প্রথমে ওই ছাত্রের কথা বিশ্বাসই করতে পারেননি শিক্ষকরা। চিকিৎসকরা যখন স্বীকৃতি দিলেন ছাত্রের বক্তব্যে, তখন স্তম্ভিত হয়ে গেলেন শিক্ষকরাই। সাপের কামড় খেয়েও মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে এসেছিল ওই ছাত্র। তাও আবার বিষধর চন্দ্রবোড়া সাপ! ছাত্রের সাহসিকতা আর অদম্য জেদ দেখে বাকরুদ্ধ শিক্ষকরা।
সোমবার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন। আর প্রথম দিনেই পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষাকেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে পড়ে চন্দ্রকোণা পলাশচাবাড়ি নিগমানন্দ হাইস্কুলের ছাত্র গৌতম ঘোষ। শিক্ষকরা তাকে দেখেই বুঝতে পারেন তার কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে। এরপর তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: মনের ইচ্ছার কাছে তুচ্ছ শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে চাই ঈশিতা
সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো চিকিৎসাও চলে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরই সামনে আসে প্রকৃত ঘটনা। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে ঘরে বসেই বই পড়ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী গৌতম ঘোষ। সে সময় চৌকির নীচ থেকে একটি বিষধর সাপ তার পায়ে কামড় দেয়। তখনই তাকে প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষা দেওয়ার জন্য জেদ করছিল গৌতম।
ওই অবস্থাতেই সকালে চলে আসে পরীক্ষাকেন্দ্রে। স্কুল ড্রেস পরে অ্যাডমিট কার্ড হাতে এসে পৌঁছয় নিজের সেন্টারে। পরীক্ষা শুরুও হয়ে গিয়েছিল। লিখতে শুরু করেছিল গৌতম। কিন্তু ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে শুরু করে সে।
এরপরই বিষয়টি শিক্ষকদের নজরে আসতে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
আরও পড়ুন: দু’বছর পর ফের শুরু হল মাধ্যমিক পরীক্ষা, টোকাটুকি রুখতে তৎপর প্রশাসন
এই বিষয়ে চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ স্বপননীল মিস্ত্রি বলেন, ”বিষধর কোনও সাপই কামড়েছে ওকে। সেটা কোন সাপ স্পষ্ট নয়। চন্দ্রবোড়া সাপ হয়ে থাকতে পারে।” এদিকে এরপর চন্দ্রকোনা জিরাট হাই স্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে বসে আর পরীক্ষা দিতে পারেনি গৌতম। কিন্তু পরীক্ষা ও দিয়েছে। হাসপাতালের বেডে বসেই। অদম্য জেদের কাছে হার মেনেছে সব কিছুই। তার এই অদম্য ইচ্ছাকে কুর্নিশ জানিয়ে বাহবা দিয়েছেন শিক্ষক-চিকিৎসকরাও।