বাংলার খবর
বাড়িতে ভূতের উপদ্রব! রক্ষা পেতে যা করলেন গৃহকর্তা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: হঠাৎ করেই জলে ভিজে যাচ্ছে বিছানা। আবার হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠছে বিছানার চাদর। টেবিলের তলা থেকে আপনাআপনিই বেরিয়ে আসছে চেয়ার। কাচের গ্লাস হঠাৎ করেই লাফিয়ে উঠে সিলিঙে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়ছে। কখনও পাথরের টুকরো লেগে আলমারির কাচ ভেঙে যাচ্ছে। কখনও আবার ফোন করে কেউ বলছে আলমারি খুলে দেখ টাকা নেই। অথচ মোবাইলের স্ক্রিনে কোনও ফোন নম্বর উঠছে না।
কাগজে লিখে হুমকিও আসছে। গত বছর ভাইফোঁটার পর থেকেই এমনই সব অদ্ভুতুড়ে কান্ড ঘটছে হুগলির উত্তরপাড়ার ৩৫ রামলাল দত্ত লেনের বাসিন্দা দীপঙ্কর মৈত্রর বাড়িতে। দীপঙ্কর বাবু কলকাতায় বিজনেস কনসালটেন্সির কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী তনুশ্রী মৈত্র আঁকা শেখান। ছেলে দীপ্তাক্ষ উত্তরপাড়া অমরেন্দ্র বিদ্যাপিঠের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। অলৌকিক এবং অদ্ভুতুড়ে এই সব কান্ড-কারখানায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে গোটা পরিবার। ঠিক কী হচ্ছে, তা নিজের মুখেই জানিয়েছেন দীপঙ্কর বাবু।
জানা গিয়েছে, দিন দশেক আগে দীপঙ্কর বাবুর ছেলে দীপ্তাক্ষ বিকালে পড়তে বেড়িয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। কয়েক ঘন্টা খোঁজাখুঁজির পর নিজেই বাড়ি ফেরে সে। এবং জানায় কোন্নগর শ্মশানে কেউ তাকে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কীভাবে তা জানে না। এমন সব আজব কান্ড ঘটতে থাকায় রীতিমত আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মৈত্র দম্পতি। অদ্ভুত সব কান্ড দেখে ভয়ে বাড়ি ছেড়ে ছিলেন দীপঙ্কর বাবু। কোন্নগরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। প্রায় সাড়ে তিন মাস পর বাড়ি ফিরেও ভয় কাটেনি।
আরও পড়ুন: অদম্য জেদের কাছে হার মানল প্রতিবন্ধকতা, পাহাড়ি কন্যার ISRO জয়
কোন্নগরে থাকাকালীন কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু উত্তরপাড়ার বাড়িতে ফিরতেই একই ঘটনা ঘটতে থাকে বলে অভিযোগ মৈত্র দম্পতির। বাধ্য হয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সঙ্গে যোগাযোগ করে মৈত্র পরিবার। শুক্রবার বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা দীপঙ্কর বাবু ও তাঁর পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে ঢোকেন। বাড়ির দোতালায় দু’টি শোওয়ার ঘর, একটা ডায়নিং ও একটি বৈঠকখানা রয়েছে। দেখা যায় মেঝেতে ভাঙা কাচের টুকরো, লোহার কয়েকটি যন্ত্রপাতি ছড়ানো।
আরও পড়ুন: গরমে নাজেহাল দক্ষিণবঙ্গ, সোয়েটার পরে স্কুলে যেতে হচ্ছে পড়ুয়াদের
দীপ্তাক্ষর মাটি দিয়ে গড়া দুর্গা ঠাকুর ভাঙা। চেয়ারের গদি আগুনে পোড়া। যে ভূত ভগবানকে এড়িয়ে চলে, সেই ভূতই কিনা ভগবানের মূর্তি ভেঙ্গে দিল! তাই সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের দাবি, কোনও অলৌকিক ঘটনা না পুরোটাই লৌকিক। এর পিছনে পরিবারেরই কারও হাত রয়েছে। কয়েকটি বিষয়ে খটকা থাকায় পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেন বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা।