'শান্তিকুঞ্জের নীরবতা ভাঙছে তৃণমূলের জয়ধ্বনি।' নিজেদের গৃহবন্দি রাখলেন শুভেন্দু-শিশির
Connect with us

বাংলার খবর

‘শান্তিকুঞ্জের নীরবতা ভাঙছে তৃণমূলের জয়ধ্বনি।’ নিজেদের গৃহবন্দি রাখলেন শুভেন্দু-শিশির

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ২০২২ সালের পুরসভা নির্বাচনে তাঁদের পরিবারের কোনও সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। তবুও কাঁথি পুরসভা হাতে রাখতে সর্বস্ব দিয়ে লড়েছিলেন রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল তথা বিজেপি(BJP) নেতা শুভেন্দু অধিকারী(Shuvendu Adhikari)। নিজের গড় কাঁথিতে জিততে পারলেন না বিজেপি বিধায়ক। পাঁচ দশকের সাম্রাজ্যের পতন।

কাঁথি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের কাছে হারলেন বিজেপি বিধায়িকা সুমিতা সিনহা। জানা গিয়েছে, কাঁথি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পরাজিত হলন বিজেপি প্রার্থী তথা উত্তর কাঁথির বিধায়িকা সুমিতা সিনহা। তিনি হারলেন তৃণমূল প্রার্থী রীনা দাসের কাছে।

সোমবার সকাল থেকেই শান্তিকুঞ্জের ছবিটা ছিল অন্য। দীর্ঘ কয়েক দশক পর হাতছাড়া হল কাঁথি পুরসভা। সকাল থেকেই শান্তিকুঞ্জ নীরব। নেই উচ্ছ্বাস, নেই উত্তেজনা। বাড়িতে এদিন কারোর আনাগোনাও সেই অর্থে নেই। শান্তিকুঞ্জের সামনে আজ উড়ছে সবুজ আবির। স্লোগান চড়ছে বটে, তবে তা অধিকারী বিরোধী। তৃণমূল সমর্থকরা শান্তিকুঞ্জের সামনে হইহই করে গেলেন। স্লোগান উঠল, ‘আয় অধিকারী দেখে যা, তৃণমূলের ক্ষমতা।’

Advertisement

এবারের লড়াইটা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে ছিল প্রেস্টিজ ফাইট। পুরপ্রচারে বেরিয়ে নানাভাবে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। তবে নিজেদের ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মার ওপর আস্থা ছিল তাঁর। কাজে এল না সেটাও। ভোটে ব্যাপক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে কাঁথি পুরসভায়।

নির্বাচন বাতিল ঘোষণার দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। সোমবার বিজেপির আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণও করেছে হাইকোর্ট।

যদিও এদিন সকাল থেকেই শুভেন্দু অধিকারী বাড়ি থেকে বের হননি। শিশির অধিকারীও কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ। কেন মানুষের আস্থা অধিকারীদের ওপর থেকে উঠে গেল? তার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন অখিলি গিরি। তাঁর বক্তব্য, ”পৌরসভা নির্বাচনে সাধারণ মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকেই আর্শীবাদ করেছেন।

Advertisement

এই যে অধিকারী পরিবার করা হয়, গড় বলা হয়, তা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। অধিকারীরা আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে ক্ষমতার দুর্ব্যবহার করেছেন, দুর্নীতি করেছেন। মানুষ তা বুঝেছেন। তাই তৃণমূলকে রাখল, মানুষগুলোকে বদলে দিল।”

১৯৬৯ সাল থেকে পুর প্রশাসনের পরিচালকদের অন্যতম শিশির অধিকারী-শুভেন্দু অধিকারীরা এখন ইতিহাস। কাঁথি পুরসভায় গত ১৯৬৯ সালে প্রথমবার কাউন্সিলার হয়েছিলেন শিশির অধিকারী। ১৯৮১-৮৬ এই পাঁচ বছর বাদ দিলে ৪৬ বছর ধরে শিশির অধিকারী, শুভেন্দু অধিকারী, সৌম্যেন্দু অধিকারীরা পৌরসভায় ছিল স্বমহিমায়। বিজেপি প্রার্থী তালিকা থেকে সৌম্যেন্দুকে ছেঁটে যে প্রক্রিয়া শুরু করেছিল,তার যবানিকা টানলেন কাঁথির বাসিন্দারা।

এক নজরে দেখে নিন কাঁথি পুরসভার নির্বাচনের ফলাফল: কাঁথি পুরসভায় তৃণমূলের প্রত্যাবর্তন। এই প্রথম পুরবোর্ডে বিরোধীদের ঠাঁই। মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ২১। তৃণমূল ১৭, বিজেপি ৩ ও নির্দল ১।

Advertisement

১ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের শেখ সাবুল । জিতেছেন ১১৪৭ ভোটে।

২ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের শঙ্কর লাল দাস । জিতেছেন ১১০৯ ভোটে।

৩ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের সঞ্চিতা জানা । জিতেছেন ৩১৯ ভোটে।

Advertisement

৪ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী আলেম আলি খান । জিতেছেন ৫০১ ভোটে।

৫ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের দেবাশিস পাহাড়ি । জিতেছেন ১০৫৫ ভোটে।

৬ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের রিনা দাস। জিতেছেন ৯৭ ভোটে।

Advertisement

৭ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের অতনু গিরি । জিতেছেন ২০০ ভোটে।

৮ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের নিরঞ্জন মান্না । জিতেছেন ৪৭৫ ভোটে।

৯ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের লিনা দাস। জিতেছেন ৪৫৪ ভোটে।

Advertisement

১০ নং ওয়ার্ডে জয়ী বিজেপির অরূপ দাস । জিতেছেন ১৯০ ভোটে।

১১ নং ওয়ার্ডে জয়ী নির্দল প্রার্থী সুময় দাস । জিতেছেন ১৯ ভোটে।

১২ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের পম্পা জানা মাইতি । জিতেছেন ৮৫৬ ভোটে।

Advertisement

১৩ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের সুপ্রকাশ গিরি । জিতেছেন ২৫২ ভোটে।

১৪ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের সুবল মান্না । জিতেছেন ৮২৬ ভোটে।

১৫ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের তনুশ্রী চক্রবর্তী ভট্টাচার্য । জিতেছেন ১২৮ ভোটে। ( অধিকারী বুথ)

Advertisement

১৬ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের রুমা দাস । জিতেছেন ৬১৮ ভোটে।

১৭ নং ওয়ার্ডে জয়ী বিজেপির তাপস দোলাই। জিতেছেন ১৮৮ ভোটে।

১৮ নং ওয়ার্ডে জয়ী বিজেপির সুশীল দাস । জিতেছেন ৭৩৩ ভোটে।

Advertisement

১৯ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের নিত্যানন্দ মাইতি । জিতেছেন ২০২ ভোটে।

২০ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের শ্রাবণী জানা পাল । জিতেছেন ৭২৯ ভোটে।

২১ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের সন্দীপ জানা । জিতেছেন ৭৩০ ভোটে।

Advertisement