বাংলার খবর
বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে একই পাড়ার দু’জনের মৃত্যু, বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিকেই দায়ী করছেন গ্রামবাসীরা
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কলকাতার পর এবার বাঁকুড়া। বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে একই পাড়ার দুই ব্যক্তির মৃত্যু হল। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার সদর থানার ভূতশহর গ্রামে। মৃত দুই ব্যক্তির নাম অঙ্গন মোহন ঘোষ (৬০) এবং পার্বতী ঘোষ (৫৫)। পুলিশ এসে দেহ দুটি উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ঘটনায় শনিবার সাতসকালেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। নেমে আসে শোকের ছায়া। এই মৃত্যুর জন্য বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন গ্রামবাসীরা। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা। ছেঁড়া বিদ্যুতের তার মেরামতির কাজ শুরু করেছেন তাঁরা।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, শনিবার ভোরে ঘুম থেকে উঠেই বাড়ির সামনে পড়ে থাকা ৪৪০ ভোল্টের ইলেকট্রিকের ছেঁড়া তারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ওই দু’জনের। খবর পেয়েই ওই গ্রামে যান বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্য অলোক সিংহ। গোটা ঘটনার জন্য তিনি বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও বিদ্যুৎ দফতর তারগুলো পরিষ্কার করেনি। ঝোপ-জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। তাদের গাফিলতির জন্যই দুটো তাজা প্রাণ চলে গেল।’
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা। তিনি মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন। গোটা ঘটনার জন্য তিনিও বিদ্যুৎ দফতরকে দায়ী করেছেন এবং দ্রুত তারগুলো মেরামত করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার দাবি জানিয়েছেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বারবার জানানো সত্বেও বিদ্যুৎ দফতর কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের উদাসীনতার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে।
মৃত অঙ্গন মোহন ঘোষের ভাই সঞ্জয় ঘোষ বলেছেন, ‘একজন বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়েছে দেখে তাকে বাঁচাতে গিয়েই আমার দাদাও বিদ্যুৎপৃষ্ট হন। আমরা ঘুম থেকে উঠে দেখি সব শেষ। বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতির জন্যই আজকে আমার দাদার এই পরিণতি হল।’ মৃতা পার্বতী ঘোষের স্বামী দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘সকালে আমি যখন পুকুরে গেলাম এবং পুকুর থেকে বাড়ি এলাম, তখনও কোনও তার পড়ে ছিল না। তারপর আমার স্ত্রী গরু বের করলো। গোয়াল ঘর বন্ধ করে বাড়ি থেকে ও বেরোতে যাওয়ার সময়ই আমার মনে হয় বিদ্যুতের তারটা পড়েছে। আমি একটা চিৎকার শুনেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। একটা শুকনো গাছের ডাল নিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করেছিলাম। একজনকে ছাড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’ প্রতিবেশী গুরুপদ ঘোষ জানান, ‘ঘর থেকে বেরিয়ে চিৎকার শুনে আমি একটি শুকনো কাঠ নিয়ে যাই। দেখি একটি বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বৃষ্টির জমা জলে পড়ে রয়েছে। এবং চিরচির করছে৷ দেখি পাড়ার কাকিমা পড়ে রয়েছেন৷ আমি খালি পায়ে থাকায় সামনে না গিয়ে আগে মেইন সুইচ বন্ধ করি৷ তারপর এসে দেখি আরও একজন পড়ে রয়েছেন৷’