রাত হলেই ভেসে আসছে অপার্থিব শব্দ, কুসংস্কারের গেরোয় অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে মানা রিজার্ভ ফরেস্ট
Connect with us

বাংলার খবর

রাত হলেই ভেসে আসছে অপার্থিব শব্দ, কুসংস্কারের গেরোয় অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে মানা রিজার্ভ ফরেস্ট

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: যেখানে ভূতের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যা হয়। আর সন্ধ্যা হলেই ভূতের ভয়ে ফাঁকা হয়ে যায় সাধারণের যাতায়াত। অশরীরী আত্মার ভয়ে থাকেন না নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্বে থাকা শ্যামাপদ মান্ডি সহ অনন্যরাও। আর ঠিক তখনই সেখানে হাজির হয় চোরেদের দল। নিশ্চিন্তে লোপাট করে ফেলে গাছ। ঘটনা বাঁকুড়ার (Bankura) মেজিয়া ব্লকের মানা রিজার্ভ বনাঞ্চলের।

জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকের একটি ছোট নদী লাগোয়া এলাকায় রয়েছে সংরক্ষিত মানা বনাঞ্চল। প্রায় ১৩০ হেক্টর জুড়ে থাকা এই বনাঞ্চলকেই বলা হয় মেজিয়া শিল্পাঞ্চলের ফুসফুস। শিল্পাঞ্চলের দূষিত বাতাস শুষে নেয় এই বনাঞ্চল জুড়ে থাকা হাজার হাজার গাছ লতা পাতা। কিন্তু সেই বনাঞ্চলই এবার দুষ্কৃতী দৌরাত্মের কারণে পড়তে চলেছে অস্তিত্বের সংকটে।

আরও পড়ুন: বিধানসভায় গেরুয়া আবির খেলায় মাতলেন BJP বিধায়করা, বিলি করা হল লাড্ডু

Advertisement

কারণ একটাই ভূতের ভয়। স্থানীয়দের কেউ কেউ বলেন রাত হলেই নাকি অশরীরী আত্মারা ঘুরে বেড়ায় এই জঙ্গলে। বিভিন্ন রকম অপার্থিব শব্দও নাকি ভেসে বেড়ায় নিশুতি রাতে। স্থানীয় ও বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, একসময় এই জঙ্গল রক্ষার জন্য দু’জন ফরেস্ট গার্ড মোতায়েন ছিলেন। এরমধ্যে একজন অবসর নেন কয়েক মাস আগে। আর এরপরই আরেক ফরেস্ট গার্ডের মনের মধ্যে চেপে বসে ভূতের আতঙ্ক। অবস্থা এমন হয় যে ভূতের আতঙ্কে নিরুপায় হয়ে সংরক্ষিত ওই জঙ্গল ছেড়ে তিনি ডিউটি করতে শুরু করেন মেজিয়া রেঞ্জ অফিসে। অগত্যা সংরক্ষিত সেই জঙ্গল হয়ে পড়ে অরক্ষিত। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই দুস্কৃতী দৌরাত্ম শুরু হয় এই সংরক্ষিত জঙ্গলে।

আরও পড়ুন: টাকা দিলে তবেই মিলবে ডেথ সার্টিফিকেট, কাঠগড়ায় পঞ্চায়েত কর্মী

অভিযোগ, ভূতের আতঙ্কে কেউ না থাকায় রাতের অন্ধকারে ওই জঙ্গল থেকে বহু মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুস্কৃতীরা। ক্রমশ ফাঁকা হতে থাকে মেজিয়া শিল্পাঞ্চলের ফুসফুস। বন দফতরের দাবি, তাঁরা মাঝেমধ্যে ওই জঙ্গলে গাছ চুরি রুখতে হানা দেন। মাঝেমধ্যে চোরাই কাঠ উদ্ধারও হয়। কিন্তু নানা কারনে জঙ্গল রক্ষার স্থায়ী কোনও ব্যবস্থা করা যায় না। স্থানীয়দের বক্তব্য, একবিংশ শতকে দাঁড়িয়েও স্রেফ কুসংস্কারের বলি হয়ে আর কতদিন এভাবে ক্রমশ নিজের অস্তিত্ব হারাতে থাকবে সংরক্ষিত এই বনাঞ্চল? উত্তর যদিও জানা নেই কারও।

Advertisement