চিকিৎসকদের হাজিরা নিয়ে নজিরবিহীন নির্দেশ! রাজ্য জুড়ে বিতর্ক
Connect with us

দেশের খবর

চিকিৎসকদের হাজিরা নিয়ে নজিরবিহীন নির্দেশ! রাজ্য জুড়ে বিতর্ক

Rate this post

রাজীব দত্ত: মানুষের সেবায় সর্বক্ষণ নিয়োজিত থাকেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে গত দু’বছরে এই করোনা অতিমারীর সময় তা আরও একবার প্রমানিত হয়েছে। তবে সবক্ষেত্রেই ভালো ও মন্দ রয়েছে। তাই অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে অনেক বেনিয়মের অভিযোগ ওঠে।

সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক সময়ই রোগীর আত্মীয় স্বজনরা অভিযোগ করেন, সঠিক সময়ে এবং জায়গায় চিকিৎসকদের পাওয়া যায় না। চিকিৎসকের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। এবার সেই বেনিয়মে লাগাম টানতেই বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি নজিরবিহীন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রতিদিন হাসপাতালে কাজে যোগ দেওয়ার আগে এবং কর্মরত অবস্থায় মেডিক্যাল অফিসারদের হোয়াটসঅ্যাপে নিজেদের অবস্থান অর্থাৎ লোকেশন জানাতে হবে! যা নিয়ে চিকিৎসক মহলে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। অনেকের মতে, রোগী পরিষেবাকে ঠিকঠাক রাখতে এবং চিকিৎসকদের ‘ফাঁকিবাজি’ কমাতেই এই ধরনের নজিরবিহীন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। গত ১৪ মার্চ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেন্টের সই করা নোটিশে সমস্ত মেডিক্যাল অফিসারদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ভবনের ডিডিএইচএস-এর নির্দেশ অনুযায়ী কাজে যোগ দেওয়ার আগে প্রত্যেক মেডিক্যাল অফিসারকে নিজেদের লোকেশন হোয়াটসঅ্যাপে জানাতে হবে।

ওপিডি, অন কল সার্ভিস, ওটি সার্ভিস, এমারজেন্সি, এইচডিইউ, এসএনসিউ-এর মতো পরিষেবায় যুক্ত চিকিৎসকদের এই নিয়ম মেনে চলতে হবে। এবং যে তিনজন চিকিৎসকের কাছে এই লোকেশন পাঠাতে হবে তাঁদের নাম ও মোবাইল নম্বরও দিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। যদিও চিকিৎসকদের একাংশের দাবি এই নির্দেশিকা জারি করে তাঁদের অপমান করা হয়েছে। ওই নির্দেশিকায় যে তিন চিকিৎসকের নাম ও ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে লোকেশন শেয়ার করার জন্য, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা প্রত্যেকেই জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত তাঁরা এই ধরনের কোনও নির্দেশিকা হাতে পাননি এবং তাঁদের কাছে এখনও কোনও চিকিৎসক লোকেশন পাঠাননি। সমস্ত চিকিৎসক সংগঠনের পক্ষ থেকে এই নির্দেশিকার তীব্র বিরোধিতা করে অবিলম্বে এই নোটিশ প্রত্যাহার করার দাবি করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, এই নোটিশ চিকিৎসকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। এই ধরনের নির্দেশিকা স্বৈরাতান্ত্রিক। কোনও পেশাতেই এই ধরনের নির্দেশিকা জারি করা উচিত নয়। যেহেতু স্বাস্থ্য ভবনের নাম উল্লেখ করে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তাই এই নির্দেশিকা জারি করার পিছনে স্বাস্থ্য ভবনের যাঁরা রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছে চিকিৎসক সংগঠনগুলো।

Advertisement