বাংলার খবর
আনিস হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার দুই পুলিশকর্মী! তদন্তে সাহায্যের আবেদন ডিজি’র

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : গত কয়েকদিন আগেই নিজের বাড়িতে খুন হন ছাত্রনেতা আনিস খান। পরিবারের লোকজন অভিযোগ করে, পুলিশের চারজন আনিসের খোঁজে আসে এবং তারাই তিন তলার ছাদ থেকে আনিসকে ফেলে দিয়ে খুন করেছে। পুলিশের বিরুদ্ধে গফিলতির অভিযোগও ওঠে।
উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। আনিসের পরিবার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সিবিআই তদন্তের দাবি জানায়। তবে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তদন্তের জন্য সিট গঠনের নির্দেশ দেয়। যদিও পরিবার এখনও সিবিআই তদন্তে অনড়। এরপর আমতা থানার ৩ পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। একজন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে বসিয়ে দেওয়া হয়। সাসপেন্ড হওয়া পুলিশ কর্মীদের মধ্যে ছিলেন এএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেম্ব্রম, হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা, সিভিক ভলেন্টিয়র প্রীতম ভট্টাচার্য। আজ সাসপেন্ড পুলিশকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয় ভবানীভবনে।
তাঁদের মধ্যে থেকেই আজ দুই পুলিশকর্মী গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছেন আমতা থানার হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা এবং সিভিক ভলান্টিয়ার প্রীতম ভট্টাচার্য। শম্পার সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজেই কথা জানিয়েছেন ডিজি মনোজ মালব্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দুই পুলিশ কর্মীর গ্রেফতার হওয়ার কথা জানিয়েছেন। বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় বার পুলিশ গিয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য। কিন্তু করতে দেওয়া হয়নি। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। তার ভিত্তিতে দু’জন পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইন আইনের মতো চলবে। আমি তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। যেহেতু পুলিশের নামে অভিযোগ উঠেছে, তাই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাকি দু’জনকেও জেরা করা হচ্ছে। পুলিশ তাদের কাজ ঠিক ভাবেই করছে।’ তারপরই ডিজি গ্রেফতার হওয়া দুই পুলিশকর্মীর নাম জানান। এবং সকলকে তদন্তে সাহায্য করার আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘এই ঘটনায় দুইজন পুলিশ কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। আমি মৃতের পরিবারের কাছে আবেদন করব তদন্তে সাহায্য করার জন্য। পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। ১৫ দিনের মধ্যে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। সিটকে ওখানে কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ নতুন করে ময়নাতদন্ত করবে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আবার ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল সিটের কাজে বাধা দিচ্ছে।’ আনিস খানকে যে হত্যাই করা হয়েছে, তাও এদিন বুঝিয়ে দিয়েছেন ডিজি।
শুধু তাই নয়, গত শুক্রবার রাতে পুলিশের ছদ্মবেশে অন্য কেউ নয়, খোদ পুলিশই যে গিয়েছিল, তা ধৃত দুই পুলিশ কর্মীকে জেরা করে জানতে পেরেছে তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দুই পুলিশকর্মীর মধ্যে একজন স্বীকার করে নিয়েছেন ওই দিন রাতে আনিসের বাড়ি যাওয়ার কথা। ঘটনার রাতে আমতার ছাত্র নেতা আনিসের বাড়িতে ঠিক কী হয়েছিল, তাও তদন্তকারীদের তিনি জানিয়েছেন বলে অতিরিক্তি পুলিশ সুপারের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও সূত্রের খবর, গ্রেফতার হওয়া পুলিশ কর্মী আনিসকে হত্যার অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, আনিসকে হত্যা করা হয়নি। সে নিজেই পুলিশকে দেখে দৌড়ে গিয়ে বাড়ির তিন তলা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল। তখন বাড়ির নীচে পুলিশের এক এএসআই অপেক্ষা করছিলেন। সূত্রের খবর, ঘটনায় সমস্ত সন্দেহভাজন পুলিশকর্মীকে ভবানীভবনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। থানার আরও বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে তদন্তকারীরা।