বাংলার খবর
ত্রিপুরায় পুরভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাস ও রিগিঙের অভিযোগ, পুননির্বাচনের দাবি তৃণমূল, সিপিএম-এর

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বৃহস্পতিবার আগরতলা সহ ত্রিপুরার ১৩ পৌরসভার ভোটগ্রহণ কে কেন্দ্র করে দফায় দফায় অশান্তি ঘটনা ঘটল। শেষ পাওয়া খবরে অনুযায়ী বিকেল তিনটে পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৫ শতাংশ। ব্যাপক সন্ত্রাস ও রিগিঙের অভিযোগ তুলে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল ও বামেরা। বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগের তির বিজেপির দিকেই।
বৃহস্পতিবার এ ভোটকে প্রহসনে বলে আখ্যা দিয়েছে সিপিএম। ভোটারদের ভয় দেখানো, ভোটে দিতে যেতে না দেওয়ার মতো অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। আগরতলায় তাদের প্রার্থীদের মারধর এবং পোলিং এজেন্টদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। একটি বুথে রিগিংয়ের অভিযোগ তুলে ভিডিয়ো শেয়ার করেছে তৃণমূল এবং সিপিএম। ভেঙে দেওয়া হয় সিপিএমের ক্যাম্প অফিস। আগরতলার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথে ছাপ্পা ভোটের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছে বিরোধীরা। ওই ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে এক মহিলা ভোট দেওয়ার জন্য ইভিএম মেশিনের কাছে গেলে মুখে মাস্ক পরা এক যুবক সে দিকে এগিয়ে গিয়ে উল্টো দিক থেকে হাত বাড়িয়ে ইভিএম মেশিনের বোতাম টিপলেন। ওই মহিলা কিছু না বলেই বেরিয়ে চলে গেলেন।
এর পর আর এক জন ভোট দেওয়ার সময়ও এই যুবক এসেছিলেন ইভিএমের কাছে। তখন ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি দাঁড়িয়ে থাকলে আমি ভোট দেব কী করে?’ আগরতলার ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তপন বিশ্বাসকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ওই প্রার্থীর দুই চোখে গুরুতর চোট লেগেছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে তৃণমূল। কোনও জায়গায় ভোট করতে দেওয়া হয়নি বলে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল ও সিপিএম সমর্থক ও নেতৃত্ব। দুই দলই নতুন করে পুনর্নির্বাচন দাবি তুলেছে। সিপিএমের তরফেও অভিযোগ করা হয়েছে, আগরতলার বিভিন্ন ওয়ার্ডে গুণ্ডারা জমায়েত করছে এবং বিরোধী দলের সমর্থকদের ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না। যদিও বিরোধীদের সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে বিজেপি। জানা গিয়েছে, বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও রিগিঙের অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল।
পুরভোটে বেনজির সন্ত্রাস হতে পারে আশঙ্কা করেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ঘাসফুল শিবির। বুধবার সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু করতে রাজ্য সরকারকে নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। কড়া হতে রুখতে হবে অপ্রীতিকর ঘটনা। কিন্তু ভোটের দিন দেখা গেল ঠিক উল্টো ছবি। নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা গেল পুলিশকে। তাই বৃহস্পতিবার ভোট চলাকালীন নজিরবিহীনভাবে সুপ্রিম কোর্ট আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী ত্রিপুরার পুরভোটে মোতায়েন করার জন্য কমিশনকে নির্দেশ দেয়। বিরোধীদের তোলা অভিযোগ যে একেবারে ফেলে দেওয়ার নয়, তা গেরুয়া শিবিরের বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের বয়ানেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন।