দেশের খবর
এবার তৃণমূলেও মিসড কলে সদস্যপদ, জেনে নিন ফোন নম্বর
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ত্রিপুরায় বিধানসভা উপনির্বাচনে চারটি কেন্দ্রে শোচনীয় ফল হয়েছে। চারটি আসনেই তৃণমূলের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তবু উত্তর-পূর্ব নিয়ে হাল ছাড়তে রাজি নয় তৃণমূল। আগামী বছরেই ৬০ আসন বিশিষ্ট মেঘালয় বিধানসভার নির্বাচন রয়েছে। সেই নির্বাচনে ৬০ আসনেই তৃণমূল লড়াই করবে। বুধবার শিলঙে তৃণমূলের রাজ্য দফতর ভবনের উদ্বোধন করে এই কথাই জানালেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই অনুষ্ঠানের পর সেখানকার দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন অভিষেক। সেখানেই তিনি বলেন, ‘আমরা মেঘালয়ের ৬০ আসনেই লড়াই করার চিন্তাভাবনা করছি। সব আসনেই জেতার লক্ষ্য নিয়েই লড়াই করবে তৃণমূল কংগ্রেস। যদি আমাদের আদর্শের সঙ্গে মিল থাকা কেউ বা কোনও দল আমাদের সঙ্গে সামিল হতে চায় তাহলে আমরা তাদের স্বাগত জানাচ্ছি।’
মেঘালয়ে এই মুহূর্তে বিজেপি এবং এনপিপি জোটের সরকার রয়েছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যেই মেঘালয়ে নতুন সরকার তৈরি হবে বলেও বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন অভিষেক। মেঘালয় সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন, ‘ছয় মাসের মধ্যেই মেঘালয়ে নতুন সরকার হবে। এখানে আর বিজেপি-র হাতের পুতুল সরকার থাকবে না। মেঘালয়ে এনডিএ-এর শরিক হয়ে ক্ষমতায় আছে এনপিপি। এখানের মুখ্যমন্ত্রী কারনাড সাংমা দিল্লির হাতের পুতুল। ভোটের আগে তাঁরা অনেক কথা বলেছিলেন। এখন মেঘালয়ের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। ওঁরা বলছেন ডবল ইঞ্জিন সরকার। মানে, ডবল লুঠের সরকার। দুইদিক দিয়েই জনগণকে লুঠ করা হচ্ছে। দিল্লি এবং মেঘালয় সরকার কেউ কাউকে কিছু বলবে না। কিন্তু তারা যে দুর্নীতি করছে, তার জবাব আসন্ন ভোটেই দেওয়া হবে। এখানের মানুষ ওই প্রতারকদের উপযুক্ত জবাব দেবে। আগামী বছর মেঘালয়ে নতুন সরকার হবে। ২০২৪ সালে নতুন সূর্যোদয় হবে। আর সেটা হবে এই এলাকা থেকেই।’
এরপরই মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে অভিষেক বলেন, ‘বিজেপি-র হাতের পুতুল হয়ে থাকা বন্ধ করুন। এখানকার ৩৫ লক্ষ মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল। আপনি তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বন্যাদুর্গতদের পাশে না থেকে দিল্লিতে ডিনার পার্টিতে যোগ দেন।’
গত বছর মেঘালয়ের ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা। এই মুহূর্তে মেঘালয়ের প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস আর বিরোধী দলনেতা সাংমা। ত্রিপুরার ফলাফল থেকে শিক্ষা নিয়ে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করা তৃণমূল তাই মেঘালয়ে সংগঠনকে মজবুত করতে উঠে পড়ে লেগেছে। তাই বুধবার থেকে শিলঙে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করেন অভিষেক। আর তার জন্য বিজেপির পথেই হাঁটল তৃণমূল। মোবাইল ফোনে মিসকল দিলেই তৃণমূলের সদস্য হওয়া যাবে। তার জন্য ৯৬৮৭৭৯৬৮৭৭ নম্বরটিও ঘোষণা করেন অভিষেক।
তার পরই তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালে গণতান্ত্রিক সূর্য পূর্ব দিক থেকে উঠতে চলেছে। বাংলা নয়, মেঘালয়ই মেঘালয়কে শাসন করবে। গুজরাত বা দিল্লির মতো বাংলা মেঘালয়ে নাক গলাবে না। বিজেপি, কংগ্রেস এবং এনপিপি আঁতাত করে চলে। মানুষের হয়ে কথা বলার কেউ নেই। মাত্র দুজন বিধায়ককে নিয়ে দিল্লি থেকে এখানে নিয়ন্ত্রণ করে। সাম্প্রদায়িকতার বীজ ছড়ায়। আমাদের টার্গেট ২০২৪। এখানকার মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে গিয়ে বিজেপির কাছে মাথানত করেন। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত মাথা উঁচু করে কথা বলা। বাংলা অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদিকে জবাব দিয়েছে। এবার মেঘালয়ও তাদের যোগ্য জবাব দেবে এবং মাথা উঁচু করে চলবে। আপনারা চাইলে আমি ১৫ দিন অন্তর মেঘালয়ে আসব।’