ভাইকে হারানোর দুঃখ ভুলতে অনাথ শিশুদের ভাইফোঁটা দিলেন বোন
Connect with us

বাংলার খবর

ভাইকে হারানোর দুঃখ ভুলতে অনাথ শিশুদের ভাইফোঁটা দিলেন বোন

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : নদীয়ার পায়রাডাঙার প্রিয়াঙ্কা রায় এবং তাঁর দাদা প্রীতম রায়- দু’জনেই ডাক্তারি নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন। দাদা প্রীতম রায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। প্রিয়াঙ্কা এবং প্রীতম দু’জনেই বাইরে থাকতেন। সারা বছর যেখানেই থাকুক না কেন ভাইফোঁটার দিন দু’জনেই বাড়ি চলে আসতেন।

দাদার দীর্ঘায়ু কামনা করে ভাইফোঁটা দেওয়ার পাশাপাশি দাদার পছন্দের খাবার নিজে হাতে রান্না করে খাওয়াতেন একমাত্র বোন প্রিয়াঙ্কা। দাদাও চেষ্টা করতেন বোনের পছন্দমত উপহার কিনে দেওয়ার জন্য। এটাই ছিল দুই ভাই-বোনের রীতি। এই বছরটা যেন সব ওলট-পালট করে দিল। কয়েকদিন আগেই প্রত্যেক বছরের মতো উত্তরাখণ্ডে ট্র্যাকিঙে গিয়েছিলেন প্রীতম। খারাপ আবহাওয়া এবং প্রবল তুষারপাতের ফলে আর ফিরে আসতে পারেননি প্রীতম রায়। বরফের নিচে চাপা পড়ে যায় প্রীতমের দেহ। প্রায় ১৪ দিন পর সেনাবাহিনী বরফের নিচ থেকে উদ্ধার করে প্রীতমের নিথর দেহ। প্রবল হতাশায় ভেঙ্গে পড়ে পরিবারের লোকজন এবং প্রিয়াঙ্কা। গোটা এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।

বাড়ির একমাত্র ছেলেকে কাছ ছাড়া করতে চায়নি, তাই বাড়িতেই সমাধি দিয়ে মন্দির তৈরি করা হয়েছে। আজ ভাইফোঁটা, প্রিয়াঙ্কা ভুলতে পারেননি নিজের দাদাকে। সকাল থেকে বারবার দাদার ছবি দেখে কাদতে থাকেন প্রিয়াঙ্কা। চোখের জল মুছে আগের মতো আড়ম্বরে না হলেও ভাইফোঁটার আয়োজন করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা। বুকের মধ্যে কষ্ট চেপে রেখেই ভাইফোঁটার জোগাড় করে নিয়ে সোজা চলে যান পার্শ্ববর্তী অনাথ আশ্রমে। অনাথ আশ্রমের অনাথ শিশুদের ভাইফোঁটা দিয়ে এবং পেট পুরে খাইয়ে নিজের মনের দুঃখ ভোলার চেষ্টা করলেন নদীয়ার পায়রা ডাঙার বাসিন্দা তথা ডাক্তারির ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা রায়।

Advertisement