কালিয়াগঞ্জের বয়রা কালীর পুজোয় আজও হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়
Connect with us

বাংলার খবর

কালিয়াগঞ্জের বয়রা কালীর পুজোয় আজও হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়

Published

on

5/5 - (1 vote)

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: এক সময় কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতী নদীর ধারে জঙ্গলাকীর্ণ এক বয়রা গাছের নিচে স্থানীয় জেলেরা ভোরবেলা প্রথম দেখতে পায় এক বেদীতে ফুল, বেলপাতা পড়ে রয়েছে। চারিদিকে ধূপ-ধূনোর গন্ধ। তাঁরা বুঝতে পারেন কেউ বা কারা এখানে কালীর আরাধনা করেছেন।

এরপর জেলেরা গিয়ে গ্রামবাসীদের ঘটনার কথা বলে। গ্রামের বাসিন্দারা সেই বয়রা গাছের নিচে শুরু করেন কালীপুজো। সেই থেকে কালিয়াগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এই কালীপুজোর নাম হয় বয়রা কালীর পুজো। দীপাবলির অমাবস্যায় বয়রা কালীমাতার পুজোকে ঘিরে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় কালিয়াগঞ্জ শহরে। টিনের চালা আর বাঁশের বেড়ার মন্দির থেকে আজ বিশালাকার মন্দির তৈরি হয়েছে। মৃন্ময়ীর মূর্তির বদলে মায়ের অষ্টধাতুর মূর্তি বসেছে। দীপাবলির রাতে দেবীর সারা অঙ্গজুড়ে থাকে সোনার অলঙ্কার। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে মন্দির কর্তৃপক্ষ কিংবা ভক্তরা জানিয়েছেন, এখানে মা বয়রা কালীমাতার কাছে মানত করলে তা ফলে যায়।

এরফলে মানত পূরণ করতেই হাজার হাজার ভক্ত আসেন পুজো দিতে। কালিয়াগঞ্জের রাজনন্দিনী পুজোতে শোল, বোয়াল সহ পাঁচ রকমের মাছ ও পাঁচ রকমের সবজি দিয়ে মায়ের ভোগ হয়। কথিত আছে শ্রীমতি নদী দিয়ে বড় বড় নৌকা আর বজরা নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে বানিজ্য করতে আসতেন বণিকেরা। নৌকা নোঙর করে বিশ্রাম নিতেন নদীর ধারে জঙ্গলাকীর্ণ অরণ্যে। সেখানেই বয়রা গাছের নিচে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন এক বণিক। দেবীর স্বপ্নাদেশ পান ওখানেই মূর্তি দিয়ে কালীপুজো করার৷ সেই বয়রা গাছের তলায় প্রথম পুজো শুরু হয় উত্তরবঙ্গের কালিয়াগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কালীমন্দির বয়রা কালীবাড়ির পুজো। পরবর্তিতে কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দারা সেই জঙ্গল পরিস্কার করে তৈরি করে বাঁশ ও মাটির মায়ের মন্দির। এরপর ১৯৬২ সালে তৈরি হয় দেবীর নতুন মন্দির।

Advertisement

যা আজ বয়রা কালীমন্দির নামে বিখ্যাত। মায়ের মূর্তিও হয়েছে অষ্টধাতুর। দীপাবলির রাতে বয়রা কালীবাড়ির পুজোকে ঘিরে কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট সহ উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে আলাদা এক উন্মাদনা থাকে। কয়েক লক্ষ পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটে দীপাবলির রাতে। দুই-তিন হাজার পাঁঠাবলি হয়ে থাকে। কিন্তু করোনা অতিমারীর কারণে সরকারি বিধি মেনে সম্পূর্ণ রুপে বলি প্রথা বন্ধ আছে বলে জানিয়েছেন পুজো কমিটির সম্পাদক বিদ্যুৎ বিকাশ ভদ্র। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সাধারণ মানুষ দাবি করে এসেছে বলি প্রথা বন্ধ করতে। কারও নিজের মনস্কামনা পূরণের জন্য নিরীহ প্রাণীকে হত্যা করা ঠিক নয়। করোনা অতিমারীর কারণে দীর্ঘদিন ধরে বলি প্রথা বন্ধ থাকায় সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সকলের দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে মন্দির কমেটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলিদান প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.