যারা মুখে আদর্শের কথা বলে তারাই আমার প্রাণনাশের ষড়যন্ত্র করেছে, বিস্ফোরক অভিযোগ কৃষ্ণ কল্যাণীর
Connect with us

বাংলার খবর

যারা মুখে আদর্শের কথা বলে তারাই আমার প্রাণনাশের ষড়যন্ত্র করেছে, বিস্ফোরক অভিযোগ কৃষ্ণ কল্যাণীর

Raju Dhara

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: শনিবার ভোর ৪.৫০ নাগাদ মালদহের গাজলের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে রায়গঞ্জের বিধায়ক তথা বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কল্যাণীর গাড়ি। তিনি শুক্রবার রাতে শিয়ালদহ থেকে পদাতিক এক্সপ্রেসে মালদহ ফিরছিলেন। তাঁকে নিতেই শনিবার ভোরে রায়গঞ্জ থেকে মালদহ স্টেশনে আসছিল তাঁর গাড়ি। তখনই পিছন থেকে বেপরোয়া গতিতে এসে মালদহগামী একটি লরি তাঁর গাড়িতে ধাক্কা মারে। বিধায়কের গাড়ির পিছন দিকটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। বিধায়ক গাড়িতে না থাকলেও সেই সময় গাড়িতে ছিলেন তাঁর চালক, তাঁর কার্যালয়ের দু’জন কর্মী এবং একজন নিরাপত্তারক্ষী। ঘটনায় গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন দু’জন। একজনকে স্থানীয় গাজল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরেকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঘাতক লরির চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গোটা ঘটনায় গভীর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। তাঁকে প্রাণে মারার জন্যই এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি। কারণ, যে জায়গায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে একটি অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল। তাই সমস্ত গাড়ির গতি খুব কম ছিল। তাহলে একটি লরি কীভাবে বেপরোয়া গতিতে এসে তাঁর গাড়িতে ধাক্কা মারল! সেই প্রশ্নই তুলেছেন রায়গঞ্জের বিধায়।

কৃষ্ণ কল্যাণী বলেছেন, ‘শুক্রবার রাতে কলকাতা থেকে পদাতিক এক্সপ্রেসে আমি মালদহ ফিরছিলাম। রায়গঞ্জ থেকে আমার গাড়ি আমাকে আনতে মালদহ আসছিল। শনিবার ভোর ৪.৫০ নাগাদ একটি লরি পিছন থেকে এসে আচমকাই সজোরে আমার গাড়িতে ধাক্কা মারে। যেখানে ধাক্কা মারে সেখানে ট্রাফিক খুব স্লো ছিল। কারণ সামনেই একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তাই এত জোরে ধাক্কা মারাটা স্বাভাবিক ঘটনা নয়। এটা একটা ইঙ্গিত দিচ্ছে, হয়তো কোনও একটা ষড়যন্ত্র ছিল। হয়তো ভেবেছিল গাড়ির মধ্যে আমি আছি। এটা আমার প্রাণনাশের একটা ষড়যন্ত্র ছিল। সেই ষড়যন্ত্রের কারণেই সেই গাড়ি এত জোরে ধাক্কা মারে। এত জোরে ধাক্কা মেরেছিল যে আমার গাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

Advertisement

কিছুদিন আগেই বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্সকে দিয়ে রেইড করানোর হুমকি দিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এমনকি তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। তাই এদিনের এই দুর্ঘটনার পিছনে বিজেপির হাত থাকতে পারে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক। এদিনের গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলেই দাবি করেছেন তিনি। তবে কৃষ্ণ কল্যাণী বিজেপি বা শুভেন্দু অধিকারীর নাম মুখে না এনে বলেছেন, ‘এর আগে আমি ইনকাম ট্যাক্সের হুমকি শুনেছি। ঠিক আছে ইনকাম ট্যাক্স পাঠাবেন। আমি তার জবাব দেব। সিবিআই পাঠাবেন, আমি তার জবাব দেব। ইডি পাঠাবেন, তার জবাব আমি দেব। কিন্তু এই ধরনের হিংস্র রাজনীতির আমি তীব্র নিন্দা করি। আমি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যারা ক্যামেরার সামনে মাইকে অনেক আদর্শের কথা বলেন, কিন্তু ক্যামেরার পিছনে তারাই এই ধরনের ষড়যন্ত্র করছে।’

এই ষড়যন্ত্রের পিছনে ঠিক কাদের হাত রয়েছে, তা অবশ্য বলেননি রাজ্য বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান। কৃষ্ণ কল্যাণী বলেছেন, ‘কে বা কারা ষড়যন্ত্র করেছে, তা সঠিক তদন্ত না করে বলতে পারব না। তবে আমার সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। আমার মনে হচ্ছে এটা কোনও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল। আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কৃষ্ণ কল্যাণীর জনপ্রিয়তা যেভাবে বাড়ছে, তাতে অনেকেই ভয় পাচ্ছে। সেই কারণেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। গোটা ঘটনার আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি থানাতেও অভিযোগ দায়ের করব।’
আর এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার গোটা ঘটনাকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ বলে দাবি করেছেন। কৃষ্ণ কল্যাণীর ষড়যন্ত্রের অভিযোগকে ‘ছোট মনের রাজনীতি’ বলেই মন্তব্য করেছেন সুকান্ত মজুমদার।

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.