দেশের খবর
এবার ৫ টাকায় ডিম-ভাতের ‘মা’ প্রকল্পে অসাংবিধানিকভাবে অর্থ বরাদ্দের অভিযোগ তুললেন রাজ্যপাল! পাল্টা জবাব তৃণমূলের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: আবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে টুইটারে বোমা ফাটালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চালু হওয়া রাজ্য সরকারের ৫ টাকায় ডিম, ভাত ‘মা’ প্রকল্পে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ তুললেন রাজ্যপাল।
শনিবার টুইট করে রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, এই মা প্রকল্পে যে সময় থেকে সরকারের টাকা বরাদ্দ করার কথা ছিল, তার আগে থেকেই টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তাই এই কাজ অসাংবিধানিক বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল। আর এই নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে তৃণমূলের আবারও শুরু হয়ে গিয়েছে জোর তরজা। শুধু অভিযোগ করেই থেমে থাকেননি রাজ্যপাল। ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সরকারের খরচের হিসেব অর্থসচিবের কাছ থেকে চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি। রাজ্যপাল দাবি করেছেন, চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১-২০২২ সালের বাজেট (ভোট অন অ্যাকাউন্ট) বক্তৃতায় ‘মা’ প্রকল্পের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
সেই বাজেটে চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই প্রকল্পের খাতে অর্থ বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন অমিত মিত্র। কিন্তু এই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই ৫ টাকায় ‘ডিভ-ভাত’ এর ভর্তুকিযুক্ত প্রকল্প শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল। বাজেটে ঘোষিত সময়ের আগেই এই প্রকল্প চালু হওয়া এবং অর্থ বরাদ্দকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ওই একই টুইটে, রাজ্য সরকার আয়োজিত বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের যৌক্তিকতা এবং সাফল্য নিয়েও রাজ্য সরকার এবং প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাজ্যপাল। এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘আরও এক উদঘাটন।
বিজিবিএস রিপোর্ট কার্ড নিয়ে অমিত মিত্রের নীরবতাই বুঝিয়ে দেয়, পুরো বিষয়টিই আড়াল করা হচ্ছে।’ কলকাতা পুর নির্বাচনের ঠিক আগের দিন রাজ্যপালের এই অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই পাল্টা আক্রমণ করেছে তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্যপালের এই অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়াই তো সরকারের কাজ। আমরা সেই কাজই করেছি। রাজ্যপাল কী এই উদ্যোগ বন্ধ করে দিতে বলছেন? এতে ওঁর এত গায়ে লাগছে কেন! রাজ্যের মানুষ পাঁচ টাকার বিনিময়ে ডাল-ভাত-সবজি-ডিম খাবেন। তাতেও রাজ্যপালকে নজর দিতে হবে? উনি মনে হয় জানেন না যে, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এটা পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে শুরু হয়েছিল।
রাজ্যে মোট ৪৮৫টি মা ক্যান্টিন শুরু হয়েছিল, এবং তা এখনও চলছে। রাজ্যপাল প্রশ্ন তুললেই তা বন্ধ করে দেওয়া হবে না। কারণ গরিব মানুষ পাঁচ টাকার বিনিময়ে খেতে পাচ্ছেন। তিনি মনে হয় ভুলে যান যে তিনি একটি সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। তিনি একটি রাজ্যের রাজ্যপাল। কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। তাই এক্তিয়ারের মধ্যে থেকেই ওঁনার কাজ করা উচিত।’ রাজ্যপালের এই টুইটকে নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ। রাজ্যপালকে বিজেপির এজেন্ট আখ্যা দিয়ে কুনাল ঘোষ বলেছেন, ‘রাজ্যপালের পদকে আমরা সম্মান করি। এটি একটি সাংবিধানিক পদ। কিন্তু উনি সেই পদের গড়িমা নষ্ট করছেন। রাত পোহালেই কলকাতা পুর নির্বাচন। তাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই রাজ্যপালের পদে থেকে কুৎসামূলক মন্তব্য করে বিজেপির হয়ে প্রচার করছেন। উনি বিজেপির এজেন্টের কাজ করছেন।’