বাংলার খবর
এবার মুড়ি মেলায় মেতে উঠলেন বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার বাসিন্দারা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: চরে বসে সকলে এক সঙ্গে বসে মুড়ি খাওয়ার জন্য আস্ত একটা মেলা! শুনতে অবাক লাগলেও কয়েকশো বছর ধরে এমনটাই চলে আসছে বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার দ্বারকেশ্বর নদীর নদীর চরে। ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে শনিবার অভিনব এই মুড়ি মেলা’য় অংশ নিলেন কয়েক হাজার মানুষ।
জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে অসংখ্য মানুষ বুধবার কেঞ্জাকুড়া সংলগ্ন দ্বারকেশ্বর নদীর তীরে সঞ্জীবনী মাতার আশ্রমের সামনে জড়ো হয়েছেন। বাড়ি থেকে মুড়ি এনে চপ, সিঙ্গাড়া, পকোড়া, চানাচুর, শশা, পেঁয়াজ, মুলো, কাঁচালঙ্কা দিয়ে পাশাপাশি একসঙ্গে বসে চলছে দেদার মুড়ি খাওয়া। এই অভিনব মেলার শুরু সম্পর্কে প্রামাণ্য কোনও তথ্য না মিললেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দ্বারকেশ্বর নদীর তীরে সঞ্জীবনী মাতার এই আশ্রম বহু পুরনো। প্রাচীণ কাল থেকেই এই আশ্রমে মকর সংক্রান্তির উপলক্ষ্যে পয়লা মাঘ থেকে হরিনাম সংকীর্তন শুরু হয়। যা চলতে থাকে মাঘ মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত। এক সময় এই এলাকা ঘন জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। এই হরিনাম সংকীর্তনে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে অংশ নিতেন।
ওই জঙ্গলে থাকা হিংস্র জীব-জন্তুর ভয়ে মানুষ আর রাতে বাড়ি ফিরতে পারতেন না। ফলে তাঁরা ওই মন্দিরেই রাত্রীবাস করে সকালে দ্বারকেশ্বর নদীর জলে মুড়ি ভিজিয়ে খেয়ে যে যাঁর মতো বাড়ি ফিরতেন। সেই থেকেই এই মুড়ি মেলার সূচনা বলে এলাকার প্রবীণ নাগরিকরা জানিয়েছেন। মেলা কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, মাঘ মাসের প্রথম দিন থেকেই এই মেলার সূচনা হয়। মেলার শেষ দিনে থাকে এই মুড়ি মেলার আয়োজন। গ্রামবাসীদের আর্থিক সহযোগীতায় এই মেলা চলছে। সকালে বাড়ি থেকে সঙ্গে করে আনা মুড়ি খাওয়ার পর উপস্থিত সবাই বাড়ি ফিরে যান।