বাংলার খবর
এখনও নামেনি জল, এবছরের পুজো ভোগপুরবাসীদের কাছে আনন্দের মাঝেও বিষাদের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট ব্লকের ভোগপুর আঞ্চলিক ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশনের পুজো এবছর ৪১ তম বর্ষে পদার্পণ করল। এবছরের পুজো ভোগপুরবাসীদের কাছে আনন্দের মাঝেও যেন বিষাদের। কারণ একটাই, এবছর অতিবর্ষনের জেরে প্রায় মাসখানেকের বেশী সময় ধরে জলবন্দি গোটা এলাকা। এর ফলে রাস্তাঘাট থেকে বাড়ি- চারিদিকে শুধুই জল আর জল। ভোগপুর আঞ্চলিক ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশনের পুজো প্রতিবছর যেখানে হয়, সেখানেই এখনও জমে রয়েছে জল। পুজো মণ্ডপের তিনদিকে এখনও জল থৈ-থৈ অবস্থা। জলের ওপরেই দাঁড়িয়ে আছে গোটা মণ্ডপটি। কর্মকর্তারাও দিশেহারা ছিলেন পুজোর কয়েকদিন আগে পর্যন্ত।
এবছর পুজো হলেও সপ্তমীর রাত পর্যন্ত দর্শনার্থীদের সংখ্যা নেহাতই কম। এই চিত্রটা গত ৪০ বছরে কখনও হয়নি। তবুও ক্লাব কতৃপক্ষ আশাবাদী আজ অর্থাৎ মহাষ্টমী থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়বে। এতো প্রতিকূলতার মধ্যেও এই পুজোর মণ্ডপ ও প্রতিমা প্রতিবছরের মতো অভিনবত্বের ছাপ রেখেছে। চারিদিকে বর্ষার জমা জলের কথা মাথায় রেখেই রাজস্থানের জয়পুরের মান সরবরের ‘জল মহল’-এর আদলে তৈরি করা হয়েছে মণ্ডপ। প্রতিমাও রাজস্থানী ঘরানার বীরাঙ্গণাদের আদলে তৈরি করা হয়েছে। তবে কোভিড পরিস্থিতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এ বছর সমস্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কুমারী পুজো বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে ক্লাব কতৃপক্ষ। তবে সবমিলিয়ে ভোগপুর স্টেশন পার্শ্ববর্তী এই পুজো অভিনবত্বের ছাপ যেমন রেখেছে, পাশাপাশি জলযন্ত্রনা আর করোনাসুরের তান্ডবে এতো আনন্দের মাঝেও যেন বিষাদের সুর ফুটে উঠছে। ক্লাবের অন্যতম সদস্য অঙ্কন মাইতি বলছিলেন, ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং করোনার অতিমারীর মধ্যেই আমরা ৪১তম বর্ষের পুজো করছি।
আপনারা শুনলে অবাক হবেন আমাদের এই প্যান্ডেলের তিন দিক জলে ডুবে রয়েছে। গোটা মণ্ডপটাই দাঁড়িয়ে আছে জলের ওপর। এই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই আমরা রাজস্থানের জয়পুরের মান সরবরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করেছি। তাই প্রতিমাও তৈরি করা হয়েছে রাজস্থানী ঘরানার বীরাঙ্গণাদের আদলে। গত দেড়মাস ধরে আমাদের এলাকাটা জলমগ্ন। তাই এবারের সমস্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নবমীর দিন কুমারী পুজো আমরা বাতিল করেছি।’ পুজো কমিটির সম্পাদক প্রসূন পড়িয়ার গলাতেও শোনা গেল বিষাদের সুর। তিনি বলছিলেন, ‘এই প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মধ্যেই এবারে আমরা পুজো করছি। অতিবৃষ্টির কারণে গত দুমাস ধরে আমরা জলমগ্ন। আগের থেকে জল অনেকটা নামলেও দুর্ভোগ এখনও কমেনি। তাই এবারের পুজোয় আমাদের এখানকার মানুষের মনে উৎসবের আনন্দ এখনও সেইভাবে বাসা বাঁধেনি। সেই ভাবে পুজো মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় নেই। আশা করছি এই তিন দিনে মানুষ আসবেন আমাদের এই মন্ডপ দেখতে। আমরা সেই আশাই রাখছি।’