আনিস খান হত্যার দোষীদের শাস্তির দাবিতে উত্তাল পাঁচলা, পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ
Connect with us

রাজনীতি

আনিস খান হত্যার দোষীদের শাস্তির দাবিতে উত্তাল পাঁচলা, পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: দিন যত যাচ্ছে আনিস খানের মৃত্যুতে উত্তেজনা বাড়ছে রাজ্যে। যদিও তদন্তের জন্য রাজ্য সরকার সিট গঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তা সত্ত্বেও উত্তেজনা কমছে না রাজ্যে। গত কয়েক দিন ধরেই আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল রাজ্য।

দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতিদিনই জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। শনিবার এই দাবিতে হাওড়ার পাঁচলায় প্রতিবাদ মিছিল করে ডিওয়াইএফআই ও এসএফআই। বাম ছাত্র-যুবদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে এদিন রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পাঁচলা। অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। জানা গিয়েছে, এদিন রানিহাটি থেকে পাঁচলায় পুলিশ সুপারের অফিস পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিল বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। মিছিল পাঁচলায় পৌঁছোতেই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। অভিযোগ, সুপারের অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ তাঁদের প্রতিরোধ করেছে। ঘটনায় পুলিশকর্মী সহ বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন বলে খবর। এদিন জঙ্গি বিক্ষোভে রনক্ষত্র হয়ে ওঠে পানিয়ার পুলিশ সুপারের অফিস।

অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে সরগরম সুপার অফিস। পূর্ব ঘোষণা মতোই শনিবার পানিয়ারাতে জেলা পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও কর্মসূচি নেয় বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে কর্মসূচির পূর্বেই বিশেষ ব্যবস্থা নেয় হাওড়া গ্রামীন পুলিশ। বিক্ষিতকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য মোতায়েন রাখা হয়েছিল জল কামান। পুলিশ সুপারের অফিসের মধ্যে যাতে কেউ ঢুকে না পড়তে পারে তার জন্য মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। পাশাপাশি পুরো অফিসকে গার্ড-রেল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছিল। হাওড়া গ্রামীন পুলিশের বন্দোবস্ত দেখে মনে হচ্ছিল যেন যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জেলা পুলিশের সুপারের অফিস। বিশাল সংখ্যায় ছাত্র-যুবরা আজকের এই প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেয়।

Advertisement

বামপন্থী ছাত্র-যুবদের দাবি অবিলম্বে আনিসের হত্যাকাণ্ডে যারা যুক্ত, তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে। জেলা পুলিশ সুপারেরও কড়া শাস্তির দাবি জানায় বিক্ষোভকারীরা। যে সমস্ত পুলিশকর্মীরা এই ঘটনায় যুক্ত তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা। পাশাপাশি যাদের নির্দেশে ওইদিন রাতে পুলিশকর্মীরা আনিসের বাড়িতে যায়, তাদের নাম সামনে আনতে হবে বলেও দাবি করা হয়। এবং তাদেরকেও অবিলম্বে গ্রেফতার করার কথা বলা হয়। মিছিল পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে পৌঁছলে তাদের রাস্তা আটকায় পুলিশ। এরপরই বচসা বাঁধে ছাত্র-যুব কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের। সেই বচসা পৌঁছয় হাতাহাতিতে। উদ্ধত বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল।

পুলিশের দাবি, ছাত্র যুব বিক্ষোভের মধ্যে থেকে প্রচুর সংখ্যায় ইট-পাথর পুলিশকে লক্ষ করে ছোঁড়া হয়। সুপারের অফিসের সামনেও প্রচুর সংখ্যায় ইট-পাথর পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশের একাধিক গাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের লাঠির আঘাতে কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছে বলে বাম সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। ঠিক একইভাবে বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া পাথরের আঘাতে আহত হন কয়েকজন পুলিশকর্মী। দু’পক্ষের লড়াইতে দীর্ঘক্ষণ যানজট সৃষ্টি হয় পানিয়ারার সামনের জাতীয় সড়কে। পুলিশ সুপারের অফিস কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। এখনও ছাত্র-যুব বিক্ষোভ চলছে পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে।

তাদের দাবি তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে মিছিল ও পথসভা করবে। পুলিশ অহেতুক তাদের কর্মীদের প্ররোচনা দিচ্ছে অশান্তি সৃষ্টির জন্য। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগ নস্যাৎ করা হয়েছে। বিক্ষোভে সামিল হওয়া মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় সহ একাধিক বাম নেতা কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। যদিও মীনাক্ষী দাবি করেছেন তাঁরা কেউ পুলিশের দিকে ইট, বোতল ছোঁড়েননি। পুলিশের পাল্টা অভিযোগ, গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় তাদের বেশ কিছু নথি পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছন দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সিদ্ধিনাথ গুপ্তও। তিনি জানিয়েছেন, এই বিক্ষোভে ৮ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের ৯টি গাড়ির ক্ষতি হয়েছে। ৬টি কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৭ জনকে।

Advertisement
Continue Reading
Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.