বাংলার খবর
মোশন পাশ, সাসপেনশন উঠে গেল সাত বিজেপি বিধায়কের
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: অবশেষে সাত বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন প্রত্যাহার করে নেওয়া হল। বিধানসভায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করার অভিযোগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ মনোজ টিগ্গা, শংকর ঘোষ, নরহরি মাহাতো, দীপক বর্মন, সুদীপ মুখোপাধ্যায়, মিহির গোস্বামীকে বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করেছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। যার প্রতিবাদে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য হাইকোর্ট স্পিকারের কাছেই মামলাটি ফেরত পাঠিয়ে দেন। গত সোমবার বিধানসভায় বাদল অধিবেশন শুরু হতেই বিধানসভায় দু’টি মোশন এনে তাঁদের সাসপেনশন প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আবেদন করেন ওই সাত বিজেপি বিধায়ক। কিন্তু আবেদন প্রক্রিয়ায় ভুল থাকায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তা নাকচ করে দেন এবং নতুন করে আবেদন করার নির্দেশ দেন। এবং বিএ কমিটির বৈঠকে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান স্পিকার। যার প্রতিবাদে বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ ও ধরনায় বসেন বিজেপি বিধায়করা। এমনকি তাঁরা বাদল অধিবেশনও বয়কট করেন। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় তাঁদের সাসপেনশন উঠতেই ধরনাও তুলে নেন বিজেপি বিধায়করা।
জানা গিয়েছে, এদিন বিএ কমিটির বৈঠকে নির্বাসিত সাত বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন তুলে নেওয়ার পক্ষে মত দেন শাসকদলের বিধায়করা। বৃহস্পতিবার অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই বিএ কমিটি বৈঠকে বসেছিল। সেখানেই বিজেপি বিধায়কদের সাসপেনশন তুলে নেওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়রা সাসপেনশন তুলে নেওয়ার পক্ষে মত দেন। আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত চলবে অধিবেশন। সাসপেনশন উঠে যাওয়ায় শুভেন্দু অধিকারীদের আর বিধানসভায় প্রবেশ করতে কোনও বাধা রইল না।
এদিন বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের সাসপেনশন নিয়ে আলোচনা চলাকালীন আসানসোলের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা এবং গুরুত্বপূর্ণ বিধায়করা সভায় না থাকলে কীভাবে অধিবেশন চলতে পারে। এই বিষয়টি যেন বিবেচনা করা হয়।’ তার উত্তরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বিরোধী নেতাদেরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। শুধু বিরোধীতা করার জন্যই বিরোধিতা নয়, গঠনমূলক ভাবনাও ভাবা উচিত। আপনারা আদালতে যেতেই পারেন। কিন্তু অধ্যক্ষ তখনই বলেছিলেন আপনারা এই বিষয়ে মোশন আনুন, বিবেবচনা করা হবে। আপনাদের আদালতে যাওয়ার দরকারই ছিল না। বোধোদয় হয়েছে আপনাদের বলে মনে হয়েছে। সবাই মিলে পরিষদীয় রীতিনীতি মেনে বিধানসভার ঐতিহ্যের গরিমাকে বাড়িয়ে তুলতে হবে। তিক্ততা চাই না।’ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিধানসভার ঐতিহ্য মেনে সবাই মিলে চলতে চাই।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন চলাকালীন তুমুল গন্ডগোল হয়। নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি ও তৃণমূল বিধায়করা। চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার গুরুতরভাবে আহত হন। তাঁর নাক ফেটে যায়। হাসপাতালে পর্যন্ত নিয়ে যেতে হয় তাঁকে। সেই ঘটনার জেরে বিজেপির ৫ বিধায়কক শুভেন্দু অধিকারী, শংকর ঘোষ, মনোজ টিগ্গা, নরহরি মহাতো ও দীপক বর্মনকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেন স্পিকার। অপরদিকে, গত ৭ মার্চ অধিবেশন শুরু হওয়ার দিন রাজ্যপালের ভাষণের সময় গোলমালের জেরে নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী এবং পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়কেও সাসপেন্ড করা হয়।