বাংলার খবর
ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক দিয়েই তৈরি হবে মহানগরের রাস্তা!
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ইতিমধ্যেই রাজ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। এবার ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক দিয়েই তৈরি হবে রাস্তা! শুনে অবাক হচ্ছেন তো। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিককে রিসাইক্লিং করে তৈরি হবে কলকাতার একাধিক রাস্তা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেলে দেওয়া প্লাস্টিককে রিসাইক্লিং করেই বেহালার নেতাজি সুভাষ রোড, বিধান সরণি, খিদিরপুরের কার্ল মার্কস সরণির মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো তৈরি করার প্রাথমিক ভাবনা চিন্তা করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে যেমন প্লাস্টিককে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে পরিবেশ দূষণ ঠেকানো সম্ভব হবে, তেমনই রাস্তাও মজবুত হবে।
তবে এর ব্যবহার ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার অন্তর্গত বেশিরভাগ রাস্তাই এখন তৈরি হচ্ছে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিককে রিসাইক্লিং করে। জাতীয় সড়ক যোজনার আওতায় থাকা বর্ধমান থেকে বোলপুর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার রাস্তাও তৈরি হয়েছে এই প্রযুক্তিতে। রাজ্য পূর্ত দফতর নির্মিত বারাসত থেকে হাবরা যাওয়ার রাস্তাটিও প্লাস্টিক ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। নিউটাউনেও প্লাস্টিক ব্যবহার করে রাস্তা ও ফুটপাত তৈরি করা হচ্ছে। এতে যেমন খরচ কমছে, তেমনই রাস্তাও মজবুত হচ্ছে। তাই এবার সেই পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা কর্পোরেশন। জানা গিয়েছে, এতে রাস্তা তৈরির খরচ কমবে ২০-৩০ শতাংশ। আর কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও দূষণ কমানোর স্বার্থে রাস্তা তৈরির কাজে প্লাস্টিক ব্যবহারে অনুমতি দিয়েছে।
কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র পারিষদ (রাস্তা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদ ইতিমধ্যেই রাস্তা তৈরির কাজে প্লাস্টিক ব্যবহারের সুপারিশ করেছে। এতে রাস্তা তৈরির খরচ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমবে। নতুন রাস্তা গুলো কেমন থাকে সেটা আমরা দেখছি। সেটা দেখেই শহরের যে সমস্ত রাস্তায় বর্ষাকালে জল জমে, সেই রাস্তাগুলোকে ভবিষ্যতে তৈরি করতে প্লাস্টিকের ব্যবহার করার ভাবনা চিন্তা করছি আমরা।’
কলকাতা কর্পোরেশনের পূর্ত বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, স্টোনচিপ, বিটুমিন, বালির সঙ্গে প্লাস্টিক গ্র্যানিউলস মিশিয়ে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তৈরি করা হবে রাস্তা তৈরির উপাদান। বিটুমিনের পরিমাণ কমিয়ে প্লাস্টিক ব্যবহার করা হলে, এতে রাস্তার জল প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেকটাই বেড়ে যাবে। তাতে যে রাস্তাগুলোতে বর্ষাকালে বেশি জল জমে, সেই রাস্তাগুলো খারাপ হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটাই কমবে। এবং প্লাস্টিক ব্যবহার করে রাস্তা তৈরি করা হলে সেই রাস্তার ওজন ধারন এবং তাপ সহ্য করার ক্ষমতাও বাড়বে। ফলে রাস্তাগুলো দীর্ঘস্থায়ী হবে।
পরিবেশবিদরাও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, এতে যেমন প্লাস্টিকের জন্য পরিবেশ দূষণ অনেকটাই কমবে, তেমনই কম পরিমাণে বিটুমিন ব্যবহার করাতেও পরিবেশ দূষণ কমবে। সেইসঙ্গে রাস্তাও মজবুত হবে।