ভাইরাল
মহাভারতের স্মৃতিবাহী শমী বৃক্ষ: দক্ষিণ দিনাজপুরের হারানো ইতিহাস ও পর্যটনের আকর্ষণ
পৌরাণিক গল্পের সঙ্গে বাস্তবের যোগসূত্র বিশ্বাস করা হয়, মহাভারতের যুগ থেকে এই শমী বৃক্ষ টিকে রয়েছে। পাণ্ডবদের অস্ত্রের আড়াল করার স্থান হিসেবে এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে।
অফবিট : মহাভারতের বিরাটপর্বের অজ্ঞাতবাসের কাহিনি শুনে আমরা অনেকেই মুগ্ধ। এই পর্বে পাণ্ডবরা নিজেদের অস্ত্র শমী বৃক্ষের কোটরে লুকিয়ে রাখেন, যাতে কৌরবদের চোখ এড়িয়ে তাঁরা ছদ্মবেশে নিরাপদ থাকতে পারেন। ঐতিহাসিক সেই শমী বৃক্ষ এখনও দক্ষিণ দিনাজপুরের হাতিডুবা গ্রামে দাঁড়িয়ে আছে, সাক্ষী হয়ে মহাভারতের সেই কালজয়ী অধ্যায়ের।
শমী বৃক্ষ: পৌরাণিক গল্পের সঙ্গে বাস্তবের যোগসূত্র বিশ্বাস করা হয়, মহাভারতের যুগ থেকে এই শমী বৃক্ষ টিকে রয়েছে। পাণ্ডবদের অস্ত্রের আড়াল করার স্থান হিসেবে এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার (Dakshin Dinajpur) হাতিডুবা গ্রামে অবস্থিত এই স্থান আজ পর্যটনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় কেন্দ্র,শমী বৃক্ষের পাশেই রয়েছে একটি সুন্দর দীঘি। স্থানীয় পঞ্চায়েতের হাতের ছোঁয়ায়, দীঘির চারপাশে তৈরি হয়েছে পর্যটকদের জন্য আধুনিকরণ। শান্ত পরিবেশ এবং ঐতিহ্যের ছোঁয়া পর্যটকদের মন কাড়তে বাধ্য।
কীভাবে পৌঁছাবেন?
- বালুরঘাট (Dakshin Dinajpur) থেকে হরিরামপুর পর্যন্ত বাস সার্ভিস রয়েছে। সেখান থেকে ছোট গাড়িতে হাতিডুবা গ্রামে পৌঁছানো যায়।
- কুশমণ্ডি থেকে নারায়ণপুর হাই স্কুলের পাশ দিয়ে হাতিডুবা যাওয়াও সম্ভব।
- এছাড়া কালিয়াগঞ্জ থেকে হরিরামপুর পর্যন্ত বাস সার্ভিস রয়েছে।
প্রতি বছর পৌষ মাসের বকুল অমাবস্যা তিথিতে এখানে বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। ৫১ জন কুমারী মেয়ে লালপেড়ে শাড়ি পরে, ৫১টি শঙ্খ ও ঢাক নিয়ে আত্রেয়ী নদী থেকে জল এনে শমী বৃক্ষকে অভিষেক করেন। এই সময় তিন দিনব্যাপী মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়, যা স্থানীয় মানুষ এবং পর্যটকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
শুধু পৌরাণিক কাহিনি নয়, শমী বৃক্ষ আজও স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। এটি মহাভারতের অতীতের সঙ্গে বর্তমানের একটি সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের হাতিডুবা গ্রামে অবস্থিত শমী বৃক্ষ শুধুমাত্র একটি পর্যটনকেন্দ্র নয়, এটি ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক গর্বের প্রতীক। পৌরাণিক কাহিনি, ধর্মীয় আচার, এবং আধুনিক পর্যটনের মেলবন্ধন এই স্থানের গুরুত্বকে বহুগুণ বাড়িয়েছে। ঐতিহ্য এবং প্রকৃতির এই অপরূপ মিশ্রণে ভ্রমণপ্রেমীরা যেন একবার ডুব দিতেই পারেন!