রুট-বেয়ারস্টোর ব্যাটেই রেকর্ড রান তাড়া করে সিরিজ ড্র ইংল্যান্ডের
Connect with us

খেলা-ধূলা

রুট-বেয়ারস্টোর ব্যাটেই রেকর্ড রান তাড়া করে সিরিজ ড্র ইংল্যান্ডের

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারত শেষবার টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ২০০৭ সালে। তখন অধিনায়ক ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। এবার তিনি কোচ। কিন্তু ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হল না। গত বছর ২-১ সিরিজে এগিয়ে থেকেও ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হল দ্রাবিড় বাহিনীকে। জো রুট এবং জনি বেয়ারস্টোর নাছোড় জেদের কাছেই হেরে গেল ভারত। রেকর্ড রান তাড়া করে ৭ উইকেটে জিতে সিরিজ ২-২ করল ইংরেজরা। ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১১৯ রান আর ভারতের দরকার ছিল সাত উইকেট। কিন্তু রুট-বেয়ারস্টোর ব্যাটের সামনে বুমরাদের কোনও পরিকল্পনাই কাজে এল না।

ভারতের বিরুদ্ধে টেস্টের চতুর্থ দিনে এজবাস্টনে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করেছিল ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ২৮৪ রানে গুটিয়ে গেলেও চতুর্থ দিনের শেষে চালকের আসনে ছিল ইংরেজ বাহিনী। শেষ দিনে তাদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১১৯ রান। হাতে ছিল ৭ উইকেট। এই সিরিজে এমনিতেই পিছিয়ে ছিল ইংল্যান্ড। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সিরিজে প্রত্যাবর্তন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল জো রুটদের কাছে। তবে এই পরিস্থিতিতে অতীত পরিসংখ্যান অনুযায়ী পাল্লা ভারী ছিল ইংরেজদের দিকেই।

এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভারত করেছিল ৪১৬ রান। সেখানে ২৮৪ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। ভারতীয় পেসারদের দাপটে গুটিয়ে গিয়েছিল ইংলিশ ব্যাটাররা। প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানের লিড পেলেও সেই অ্যাডভান্টেজটা দ্বিতীয় ইনিংসে ধরে রাখতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটাররা। পিচ যত পুরনো হয়েছে ততই বিষাক্ত হয়ে উঠেছিলেন জেমস অ্যান্ডারসনরা। ইংরেজ বোলাদের সামনে দ্বিতীয় ইনিংসে খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটাররা। ২৪৫ রানেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস।

Advertisement

৩৭৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শুরুটা দুরন্ত করেন দুই ইংরেজ ওপেনার অ্যালেক্স লিজ (৫৬) জ্যাক ক্রাউলি (৪৬)। দু’জনের ১০৭ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ ইংল্যান্ডের প্রত্যাবর্তনের পথ প্রশস্ত করে দেয়। এরপর দুই ওপেনার এবং ওলি পোপকে (০) ফিরিয়ে দিয়ে হঠাৎ করেই ম্যাচে ফিরে এসেছিল ভারত। কিন্তু ভারতের সেই স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান জো রুট এবং জনি বেয়ারস্টো ভারতের জয়ের আশাকে ফিকে করে দেন। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও বড় রান করলেন বেয়ারস্টো। গত ৫ ইনিংসে ৫০ এর বেশি রান করেছেন তিনি। চতুর্থ দিনের শেষে দু’জনের ১৫০ রানের পার্টনারশিপ ইংল্যান্ড ড্রেসিংরুমে জয়ের সম্ভাবনাকে উজ্জ্বল করে দিয়েছিল। চতুর্থ দিনের শেষে রুট ৭৬ এবং বেয়ারস্টো ৭২ রানে অপরাজিত ছিলেন। ইংল্যান্ড দাঁড়িয়ে ছিল ৩ উইকেটে ২৫৯ রানে। মঙ্গলবার চূড়ান্ত দিনের প্রথম সেশনেই বাকি কাজটুকু করে ফেললেন রুট এবং বেয়ারস্টো। দু’জনেই সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন। সিরিজের সেরা রুট ১৭৩ বলে ১৪২ এবং বেয়ারস্টো ১৪৫ বলে ১১৪ রান করে অপরাজিত থেকে যান। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও শতরান করলেন বেয়ারস্টো। এই নিয়ে টেস্টে টানা চতুর্থ শতরান করে ফেললেন তিনি। এবং এই বছর রুটের এটা পঞ্চম শতরান। সিরিজে ৭৩৬ রান করে বুমরার সঙ্গে যুগ্মভাবে সিরিজের সেরার পুরস্কারও পেলেন প্রাক্তন ইংলিশ অধিনায়ক।

এর আগে তিনশোর বেশি রান তাড়া করে চারবার জিতেছে ইংল্যান্ড। ২০১৯ সালে লিডসে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৫৯ রান তাড়া করে জিতেছিল ইংল্যান্ড। ১৯২৮ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তারা ৩৩২ রান তাড়া করে জিতেছিল। ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩১৫ রানে এবং ১৯৯৭ সালে ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০৭ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতেছিল ইংরেজরা। এবার সেই সমস্ত রেকর্ডকে ভেঙে এজবাস্টনে ভারতের বিরুদ্ধে সর্বাধিক ৩৭৮ রান তাড়া করে টেস্ট জেতার নজির গড়ে ফেলল বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড। এজবাস্টনেও এটাই ইংল্যান্ডের সর্বাধিক রান তারা করে জয়। এর আগে ২৮১ রান তাড়া করে জেতাটাই এজবাস্টনের মাটিতে সেরা ছিল ইংল্যান্ডের।

Advertisement