খেলা-ধূলা
ইডেনে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেই যাত্রা শুরু রোহিত-দ্রাবিড় জুটির

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মধুর প্রতিশোধ বললে ভুল কিছু বলা হবে না। এই সাম্প্রতিক কালে ভারত যতবারই নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে, ততবারই হারতে হয়েছে। সে দু’বছর আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপেই হোক বা প্রথম ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল কিংবা সদ্যসমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
রবিবার ইডেন গার্ডেন্সে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে কিউয়িদের ৭৩ রানে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ করে মধুর প্রতিশোধ নিল রোহিত শর্মা অ্যান্ড কোম্পানি। ৩-০ সিরিজ জয় দিয়েই ভারতীয় ক্রিকেটে শুরু হল রোহিত-দ্রাবিড় যুগের। জয়পুর ও রাঁচিতে জিতে যাওয়ায় রবিবার বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘরের মাঠে ভারতের কাছে ছিল নিয়মরক্ষার ম্যাচ। তাই বলে কোনও গা ছাড়া ভাব দেখা যায়নি ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে। রবিবার ইডেনে আরও একটা মিথ ভাঙলেন রোহিত শর্মারা। শিশির ভেজা মাঠে টসে জিতে পরে বল করেও ম্যাচ জেতা যায়, তা দেখিয়ে দিলেন অক্ষর প্যাটেল, হর্ষল প্যাটেলরা। এই ম্যাচে রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং কেএল রাহুলকে বিশ্রাম দিয়েছিলেন কোচ দ্রাবিড়।
তার জায়গায় প্রথম একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন যুজবেন্দ্র চাহাল এবং ঈশান কিশান। রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন ঈশান। ২১ বলে ২৯ করে ফিরে যান তিনি। আর রোহিত তো এই সিরিজে স্বপ্নের ফর্মে ছিলেন। জয়পুরে প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ৪৮ রান। রাঁচিতে ৫৫ রান। আর প্রিয় ইডেনে ৩১ বলে ৫ বাউন্ডারি ও তিন ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে করলেন ৫৬ রান। স্বাভাবিকভাবেই সিরিজের সেরা ক্রিকেটারের পুরষ্কারও গিয়েছে তাঁর ঝুলিতেই। রোহিত-ঈশানের জুটি ভালোই এগোচ্ছিল। কিন্তু সপ্তম ওভারে নিউজিল্যান্ডের বাঁ হাতি স্পিনার প্রথম ওভারে বল করতে এসেই দ্বিতীয় ও ষষ্ঠ বলে ঈশান ও সূর্যকুমার যাদবকে (০) ফিরিয়ে দিয়ে জোড়া ধাক্কা দেন। সেট হওয়ার আগেই তাঁর শিকার ঋষভ পন্থও (৪)। শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন স্যান্টনার।
ঈশ সোধির বলে রোহিত কট অ্যান্ড বোল্ড হতেই চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন শ্রেয়স ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার। শ্রেয়স ২৫ এবং ভেঙ্কটেশ করেন ২০ রান। ১৪০ রানের মাথায় আউট হন শ্রেয়স। সেখান থেকে ভারতকে বড় রানে পৌঁছে দেন দুই পেসার। হর্ষল প্যাটেল ১১ বলে করেন ১৮ রান। এবং দীপক চাহার ৮ বলে ২১ রান করে নট আউট থেকে যান। এই দু’জনের দৌলতে ৭ উইকেটে ১৮৪ রান তোলে ভারত। ইডেনে রাতে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে এই রান তোলাটা যথেষ্টই চ্যালেঞ্জের ছিল কিউয়িদের কাছে। কিন্তু আগের দুই ম্যাচের ছন্দেই রবিবার ব্যাটিং শুরু করেছিলেন কিউয়ি ওপেনার মার্টিন গাপ্তিল। কিন্তু তিনি ছাড়া এদিন ভারতীয় বোলারদের সামনে আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে করতে এসেই ড্যারেল মিচেল (৫) ও মার্ক চাপম্যানকে (০) ফিরিয়ে দিয়ে জোড়া ধাক্কা অক্ষর প্যাটেল।
পঞ্চম ওভারে বাঁ হাতি স্পিনারেরই শিকার হন গ্লেন ফিলিপস (০)। ৩ ওভারে ৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন অক্ষরই। ২১ রানে ১ উইকেট থেকে ৩০ রানে ৩ উইকেট হয়ে যেতেই চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। সেই চাপা শেষ পর্যন্ত আর কাটিয়ে ওঠা হয়নি তাদের। গাপ্তিল এবং টিম সেইফার্ট ছাড়া আর কোনও ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের রানের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। ভারতীয় বোলারদের আঁটোসাটো বোলিংয়ের সামনে নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। গাপ্তিল যতক্ষণ ছিলেন ততক্ষনই কিউইদের আশা বেঁচে ছিল।
৩৬ বলে চারটি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৫১ রান করে যুজবেন্দ্র চাহালের বলে সূর্য কুমার যাদবের হাতে ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরতেই নিউজিল্যান্ডের হোয়াইটওয়াশ হওয়ার নিশ্চিত হয়ে যায়। সেইফার্ট করেন ১৭ রান। শেষে ১৭.২ ওভারে ১১১ রানেই থেমে যায় কিউয়িদের ইনিংস। ক্যাপ্টেন হিসেবে রোহিত এবং কোচ হিসেবে রাহুল দ্রাবিড় অভিষেক সিরিজেই জয় দিয়ে শুরু করলেন। এবার লাল বলের লড়াই। আগামী ২৫ তারিখ কানপুরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দেশ।