দুবাইয়ে ঋতুর রাজ! ফিনিশার ধোনির সৌজন্যে দিল্লিকে হারিয়ে নবমবার ফাইনালে চেন্নাই
Connect with us

খেলা-ধূলা

দুবাইয়ে ঋতুর রাজ! ফিনিশার ধোনির সৌজন্যে দিল্লিকে হারিয়ে নবমবার ফাইনালে চেন্নাই

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: গতবছর সপ্তম স্থানে শেষ করেই বিদায় নিতে হয়েছিল। তাঁর পারফরমেন্স ও অধিনায়কত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। অনেকেই ভেবেছিল সেটাই তাঁর শেষ আইপিএল। কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে মহেন্দ্র সিং ধোনি এবারের আইপিএলে শুধু খেললেনই না, চেনা ‘ফিনিশার’-এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে নবমবারের জন্য আইপিএল ফাইনালে তুললেন চেন্নাই সুপার কিংসকে। রবিবার দুবাইয়ে ১৪ তম আইপিএলের প্রথম প্লে-অফে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ৪ উইকেটে হারিয়ে সরাসরি ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে ফেলে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন সিএসকে।

এদিন পয়েন্ট টেবিলের এক বনাম দুইয়ের লড়াইয়ে টসে জিতে প্রথমে দিল্লিকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক ধোনি। দিল্লির শুরুটা ভালো হলেও মাত্র ৩৬ রানের মধ্যে দিল্লিকে প্রথম ধাক্কা দেন জস হ্যাজেলউড। ৪ ওভারে মাত্র ৭ রান করে ফিরে যান দিল্লির ওপেনার শিখর ধাওয়ান। তারপর ক্রিজে আসেন প্রাক্তন নেতা শ্রেয়স আইয়ার। তবে তিনি এদিন দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেননি। মাত্র ১ রান করে হ্যাজেলউডেরই শিকার হন। চার নম্বরে নেমেছিলেন অক্ষর প্যাটেল। কিন্তু তিনিও বেশিদূর এগোতে পারেননি। ১০ রান করার পরই তাঁকে ফেরান মঈন আলি। তবে দলের হয়ে রান করার পাশাপাশি কঠিন পরিস্থিতিতেও হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দিল্লির অপর ওপেনার পৃথ্বী শ। ২৭ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি। অক্ষরের জায়গায় ক্রিজে আসেন দিল্লির ক্যাপ্টেন ঋষভ পন্থ।

কিন্তু পন্থ-পৃথ্বী জুটিকে সেট হওয়ার কোনও সুযোগই দেননি রবীন্দ্র জাদেজা। ৩৪ বলে ৭ বাউন্ডারি ও ৩ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৬০ রানের দুরন্ত ইনিংসের পর পৃথ্বী ফিরে যান সাজঘরে। একটা সময় ৮০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল দিল্লি। কিন্তু সামলে নেন ঋষভ ও শিমরন হেটমেয়ার। পন্থ-হেটমেয়ার জুটিই এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দিল্লিকে। এই জুটিকে থামানোর জন্য রীতিমতো বেগ পেতে হয় চেন্নাইয়ের বোলারদের। শেষে ৫০ বলে ৮৩ রানের পার্টনারশিপের পর পন্থ-হেটমায়ার জুটিকে থামান ডোয়েন ব্রাভো। ২৪ বলে ৩৭ রান করে মাঠ ছাড়েন হেটমায়ার। এর মাঝেই হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দিল্লির নেতা পন্থ। ৩৫ বলে ৩ বাউন্ডারি ও জোড়া ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৫১ রান করে অপরাজিত থেকে যান পন্থ। শেষে ৫ উইকেটে ১৭২ রানে থামে দিল্লি।

Advertisement

৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন জস হ্যাজেলউড। জাদেজা, মঈন আলি ও ডোয়েন ব্রাভো একটি করে উইকেট নিয়েছেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভাল শুরু করে চেন্নাই। যদিও সিএসকের ওপেনিং জুটি ফ্লপ। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই এনরিক নর্টজের শিকার হন চেন্নাইয়ের ওপেনার ফাফ ডু’প্লেসি। মাত্র ১ রান করেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। ডু’প্লেসি দ্রুত আউট হলেও দারুণ ব্যাট করলেন রবীন উথাপ্পা ও ঋতুরাজ গায়কোয়াড়। দলের সমস্ত বোলিং অস্ত্র ব্যবহার করেও এই জুটিকে বাগে আনতে পারেননি পন্থ। দ্বিতীয় উইকেটে দু’জনের ১১০ রানের পার্টনারশিপ চেন্নাইয়ের জয়ের আশা উজ্জ্বল করে দেয়। ১৪ ওভারের তৃতীয় বলে উথাপ্পাকে ফিরিয়ে ভয়ানক হয়ে ওঠা জুটি ভাঙেন টম কারান। ৪৪ বলে উথাপ্পার ৬৩ রানের ইনিংসে ছিল ৭ বাউন্ডারি ও ২ ওভার বাউন্ডারি। মিড উইকেটে ছয় মারতে গিয়ে শ্রেয়সের হাতে ক্যাচ দেন উথাপ্পা। দুরন্ত ক্যাচ ধরে বাউন্ডারি টপকে যাওয়ার আগে শূন্যে বল ছুড়ে দেন দিল্লির প্রাক্তন অধিনায়ক।

নিজেকে সামলে নিয়ে মাঠে ফিরে ক্যাচ ধরেন তিনি। ওই ওভারের শেষ বলে শার্দুল ঠাকুর (০) ঠিক একই ভাবে ওভার বাউন্ডারি মারতে গিয়ে শ্রেয়সের হাতে জমা পড়েন। তার পরের ওভারেই রান আউট হন অম্বাতি রায়াডুও (১)। দু’ রান নিতে গিয়ে শ্রেয়সের ছোড়া বলে আউট হন তিনি। শ্রেয়সের দুরন্ত ফিল্ডিংয়ে দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ক্ষনিকের চাপে পড়ে গিয়েছিল চেন্নাই। তবে উল্টো দিকে অনবদ্য ব্যাট করলেন ম্যাচের সেরা ঋতুরাজ। মঈন আলির সঙ্গে ৩০ রানের পার্টনারশিপের পর ১৯ ওভারের প্রথম বলেই ঋতুর উইকেট তুলে নেন আবেশ খান। সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে ঋতুর ক্যাচ নেন অক্ষর প্যাটেল। ঋতুর ৫০ বলে ৭০ রানের ইনিংস সাজানো ছিল ৫ বাউন্ডারি ও জোড়া ওভার বাউন্ডারিতে। ঋতু ফেরার পর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক ধোনি। মঈন আলির সঙ্গে ১১ রান জোড়েন মাহি। শেষ ওভারে চেন্নাইয়ের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৩ রান। টম কারেনের প্রথম বলেই বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন মঈন (১৬)। তাতেও চেন্নাইকে হারানো সম্ভব হয়নি। শেষ কাজটা করে দেন ধোনি।

দ্বিতীয় বলে এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে চার মারেন। চার বলে দরকার ছিল ৯ রান। তৃতীয় বলেও চার মারেন চেন্নাই অধিনায়ক। ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে উইকেটের পিছন দিয়ে বল বাউন্ডারিতে চলে যায়। এর পরের বল ওয়াইড করেন কারেন। তিন বলে মাত্র চার রান দরকার ছিল। পরের বলেই চার মেরে খেলা শেষ করে দেন ধোনি। ২ বল বাকি থাকতেই ফাইনালে চলে যায় চেন্নাই। ৬ বলে ৩ বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ১৮ করে অপরাজিত থেকে যান মাহি।

Advertisement

শুধু তাই নয়, আইপিএল কেরিয়ারে সর্বাধিক ২৫ প্লে-অফ ম্যাচ খেলারও নজির গড়লেন ধোনি। বহুদিন পর আবার পুরনো ছন্দে দেখা গেল ‘ফিনিশার’ ধোনিকে। ফাইনালের আগে যা চেন্নাই শিবিরকে এবং সমর্থকদেরও বড় স্বস্তি দেবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে হেরে গেলেও দিল্লির এখনও ফাইনালে ওঠার একটা সুযোগ রয়েছে। সোমবার এলিমিনেটর ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের মধ্যে জয়ীর সঙ্গে খেলবে দিল্লি। সেই ম্যাচের বিজয়ীরাই আগামী বৃহস্পতিবার ফাইনালে চেন্নাইয়ের মুখোমুখি হবে।

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.