দেশের খবর
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সদের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে! খালি করে দেওয়া হল আরজিকর ও ন্যাশনাল মেডিক্যালের হস্টেল

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ। তবে সম্প্রতি রাজ্যে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ সহ সমস্ত সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
মঙ্গলবারও সেই ধারা অব্যাহত রইল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে গত ৭২ ঘণ্টায় চিকিৎসক, জুনিয়র চিকিৎসক, চিকিৎসক পড়ুয়া মিলিয়ে ৮০ জন কোভিড পজিটিভ এসেছেন। মঙ্গলবার চার জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার-সহ ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে একশো ছুঁইছুঁই কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। যদিও অধ্যক্ষ রঘুনাথ মিশ্রের দাবি মাত্র ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেও একাধিক পড়ুয়া করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সেই কারণে হস্টেল খালি করে দেওয়া হয়েছে। আরজিকর মেডিক্যাল কলেজেও ২৯ জন পড়ুয়া করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সেই কারণে সেখানকার হস্টেল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও এসএসকেএম হাসপাতালেও অন্তত ২০ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এমআর বাঙুর হাসপাতালেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ১৪। তার মধ্যে ১১ জন নার্স, দু’জন ডাক্তার এবং এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার পদমর্যাদার চিকিৎসকও রয়েছেন। তবে তাঁদের প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। এমআর বাঙুর হাসপাতালের ছয় স্বাস্থ্যকর্মী হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন। কারও অবস্থাই আশঙ্কাজনক নয়। তবে তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের জ্বর রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী। উত্তরবঙ্গে ওমিক্রন আশঙ্কায় সন্দেহজনক ১০০টি নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিং-এর জন্য পাঠানো হয়েছিল। এবার কোভিডের বাড়বাড়ন্ত দেখে আরও ১০০ জনের নমুনা পাঠানো হচ্ছে জিনোম সিকোয়েন্সিং টেস্টের জন্য।
হাওড়ার উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালেও সুপার-সহ কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন আরও ছ’জন চিকিৎসক। হাসপাতালের ছ’জন স্বাস্থ্য কর্মীও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মোট ৪৬ জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ৪৬ জনের মধ্যে রয়েছেন দু’জন ডেপুটি সিএমওএইচ, চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীও। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই নিভৃতবাসে রয়েছেন। ফুলেশ্বরের সঞ্জীবনী হাসপাতালেও হানা দিয়েছে করোনা। সেখানেও বেশ কয়েক জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যে যেভাবে প্রতিদিন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তাতে রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। এখনই চিকিৎসা পরিষেবায় কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না বলেই মনে করছে তারা।