আন্তর্জাতিক
প্রয়াত বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র, শোক জ্ঞাপন মুখ্যমন্ত্রীর

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: নাট্য জগতে নক্ষত্র পতন। প্রয়াত হলেন শাঁওলি মিত্র। তিনি ছিলেন বাংলা থিয়েটার ও সিনেমা জগতের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী। লোক চক্ষুর আড়ালেই চিরবিদায় নিলেন নাট্য দুনিয়ার এই প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব। ঋত্বিক ঘটকের যুক্তি তক্কো আর গপ্পো চলচ্চিত্রে বঙ্গবালার চরিত্রে অভিনয় করে সকলের নজর কেড়ে ছিলেন।
তিনি ছিলেন কিংবদন্তি নাট্য ব্যক্তিত্ব শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের কন্যা। মৃত্যু কালে শাঁওলি মিত্রর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রবিবার দুপুরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রবিবার দুপুরেই সিরিটি মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। শাঁওলি মিত্র তাঁর শেষ ইচ্ছাপত্রে জানিয়ে গিয়েছিলেন, দাহকার্যের পর তাঁর মৃত্যুর খবর যেন প্রকাশ্যে আনা হয় এবং ফুলের ভারে তাঁর দেহ যেন সাজানো না হয়। এবং তাঁর দাহকার্যের ভার দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর মানসপুত্র এবং কন্যা সায়ক চক্রবর্তী এবং অর্পিতা ঘোষের উপরেই। সেই মতো তাঁর শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যকর্মী এবং রাজনীতিবিদ অর্পিতা ঘোষ। শাঁওলি মিত্র অভিনীত কালজয়ী নাটকগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ‘বিতত বীতংস’, ‘ডাকঘর’, ‘পুতুলখেলা’, ‘একটি রাজনৈতিক হত্যা’। অভিনয় সুবাদেই তিনি ২০০৯ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হন। এ ছাড়াও ২০০৩ সালে সঙ্গীত-নাটক অকাদেমি এবং ২০১২ সালে বঙ্গবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত হন।
২০১১ সালে রবীন্দ্র সার্ধ্বশত জন্মবর্ষ উদযাপন কমিটিরও চেয়ারপার্সন ছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর শোক বার্তায় লিখেছেন, ‘বাংলা নাট্যজগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং প্রখ্যাত মঞ্চশিল্পী শাঁওলি মিত্রের প্রয়াণে আমি গভীর ভাবে শোকাভিভূত বোধ করছি। প্রবাদপ্রতিম শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের কন্যা শাঁওলি মিত্র বাংলা অভিনয় জগতে মহীরুহ ছিলেন। ‘নাথবতী অনাথবৎ’ বা ‘কথা অমৃতসমান’ এর মতো সৃষ্টিকর্ম বাংলার লোকমানসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। শাঁওলি মিত্র আমার বহুদিনের সহযোগী ছিলেন। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনে তিনি আমার সঙ্গে একসাথে ছিলেন। আমি রেলমন্ত্রী থাকার সময় তিনি আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন।
পরে আমরা দায়িত্বে এলে কিছুদিন পর তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি হন এবং দায়িত্বের সঙ্গে মূল্যবান কাজ করেন। বাংলার সরকার তাঁকে ২০১২ সালে বঙ্গবিভূষণ ও ২০১৪ সালে দীনবন্ধু পুরস্কার দেয়। শাঁওলিদির ইচ্ছাক্রমে তাঁর প্রয়াণের খবর আমাকে শেষকৃত্যের পর দেওয়া হয়। আমি কিন্তু কাছের মানুষ হিসাবে তাঁকে মনে ধরে রাখলাম। আমাদের বহুদিনের সহকর্মী এবং সুহৃদ হিসেবে তিনি আমাদের মনের মণিকোঠায় থেকে যাবেন। আমি শাঁওলিদির পরিবার-পরিজন ও অগণিত গুণগ্রাহীকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’ আজ অর্থাৎ সোমবার রবীন্দ্রসদনে দুপুর একটা থেকে সন্ধে ছ’টা পর্যন্ত বিশিষ্ট এই নাট্যকারের ছবিতে শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার।