বাংলার খবর
অগ্নিপথ আন্দোলনের প্রভাব রেল পরিষেবাতেও, বাতিল ও সময়সূচী পরিবর্তন একাধিক ট্রেনের
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: গত মঙ্গবারই অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষান্ত্রী রাজনাথ সিং। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের তিন প্রতিরক্ষা বাহিনী- সেনাবাহিনী, নৌসেনা, এবং বায়ুসেনায় চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ করা হবে। চার বছরের চুক্তিতে যাদের নিয়োগ করা হবে, তাদের অগ্নিবীর বলা হবে। কেন্দ্রের এই ঘোষণার পরই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে চলছে বিক্ষোভ আন্দোলন। আর যার প্রভাব সরাসরি এসে পড়েছে ট্রেন পরিষেবাতেও। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে একাধিক ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অগ্নিপথ বিক্ষোভের জেরে অন্তত ২০০ ট্রেনের চলাচলে প্রভাব পড়েছে। এই বিক্ষোভের জেরে বাতিল করে দিতে হয়েছে ৩৫ ট্রেন। যাত্রাপথ ছোট করা হয়েছে ১৩টি ট্রেনের। এর মধ্যেও বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। হাওড়া থেকে বাতিল হওয়া ট্রেন গুলির মধ্যে রয়েছে, হাওড়া-দিল্লি দুরন্ত এক্সপ্রেস, হাওড়া-জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস। সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে, হাওড়া-দিল্লি পূর্বা এক্সপ্রেস, ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেস, জয়নগর এক্সপ্রেসের। এছাড়াও বাতিল করা হয়েছে, আসানসোল-গয়া এক্সপ্রেস, আসানসোল- বারানসী এক্সপ্রেস, কলকাতা-জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস, হাওড়া-দেরাদুন কুম্ভ এক্সপ্রেস, হাওড়া-পাটনা জনশতাব্দী এক্সপ্রেস, বাকা-রাজেন্দ্রনগর ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, মালদা টাউন-নিউ দিল্লি এক্সপ্রেস, জামালপুর-আনন্দবিহার গরীব রথ, শিয়ালদা-বালিয়া এক্সপ্রেস, জামালপুর-ভাগলপুর-জামাপুর প্যাসেঞ্জার, সাহেবগঞ্জ-দানাপুর ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। এছাড়াও আরও বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করা হতে পারে বলেও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
শনিবারও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় চলছে ট্রেন অবরোধ। সকাল ৯টায় ব্যারাকপুরে রেল অবরোধ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। যার জেরে শিয়ালদহ মেন শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন নিত্য যাত্রীরা। অগ্নিপথ প্রত্যাহারের দাবিতে সকাল থেকে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে রেললাইনে নেমে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। স্টেশন চত্বরেও চলে বিক্ষোভ। রেললাইনে ডন-বৈঠক করে অভিনব কায়দায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। অবরোধের জেরে দাঁড়িয়ে পড়ে একাধিক ট্রেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে রেল পুলিশ প্রথমে বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। এরপরই উঠে যায় অবরোধ। বেশ কয়েকজন অবরোধকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুধু ব্যারাকপুর নয়, শনিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরপুকুর স্টেশনেও ট্রেন অবরোধ করেন পরীক্ষার্থীরা। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলে ট্রেন অবরোধ। যার জেরে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখাতেও ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পরে রেল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে উঠে যায় অবরোধ। এরপর বিরোধীরা ঠাকুরনগরের বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ দেখান। কিন্তু তাঁদের অনেক আগেই আটকে দেয় পুলিশ।
সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ হাওড়া ব্রিজও অবরোধ করার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। হঠাৎ করেই হাওড়া ব্রিজের উপর শারীরিক কসরত করতে শুরু করেন পরীক্ষার্থীরা। উত্তর বন্দর থানার পুলিশ এবং হাওড়া ট্রাফিক গার্ডের কর্মীরা এসে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেন। রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের আঁচ। শনিবার সকাল আটটা নাগাদ পুরুলিয়ার বরাকর রোডেও অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে অবরোধকারীদের ঘটিয়ে দেয়।