বাংলার খবর
বাড়ি বানিয়েও গৃহ প্রবেশ করা হল না! ফিরল কফিনবন্দি দেহ
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজঃ একটু বৃষ্টি পড়লেই টিনের চাল বেয়ে জল পড়ত ঘরের আনাচে কানাচে। ঝড় এলেও কখন যে উড়িয়ে নিয়ে যায়, এই ভয় তো ছিলই। ছোট বেলা থেকেই বাড়ির এই পরিস্থিতি দেখে বড় হয়েছেন। আর তাই অসম রাইফেলসে যোগ দিয়েই একটু একটু করে নিজেদের থাকার বাড়ি বানিয়েছিলেন। কিন্তু গত শনিবার জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন অসম রাইফেলসের জওয়ান শ্যামল দাস।
তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার খরগ্রামে। গত ১১ বছর ধরে তিনি এই পদে কর্মরত। গত শনিবার অসমের চন্দ্রচূড়পুরে অসম রাইফেলসের কামান্ডারের গাড়িতে জঙ্গি হামলা ৭ জনের মৃত্যু হয়। এই হামলায় নিহত হন শ্যামল দাস। এই খবর জানতে পেরেই গোটা এলাকা থমথমে হয়ে যায়। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে শোকে নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছেন স্ত্রী সুপর্ণা দাস। তিনি ভাবতেই পারছেন না সকালে কথা বলা মানুষটা আর নেই। সকালে যখন কথা হয়, স্বামী বলেছিলেন, এখন কাজে যাচ্ছি, সন্ধ্যা বেলায় কথা হবে। ফন করার কথা দিয়েও তিনি কথা রাখবেন না ভেবে উঠতে পারছেন না সুপর্ণা।
স্ত্রীর মতো স্তব্ধ হয়ে গিয়েছেন শ্যামলের বাবাও। তিনি বলেছেন, আগে একটু বৃষ্টি পড়লেই ঘরে জল পড়ত। ছেলে সেটা খুব ভালো ভাবে দেখেছে। আর সেই কারণেই চাকরি পাওয়ার পর একটু একটু করে নতুন পাকা বাড়ি করা শুরু করে। বৃদ্ধ বয়েসে আমরা যাতে একটু নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি তারজন্য এই বাড়ি তৈরি করে শ্যামল।’ বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। জানুয়ারি মাসে গৃহ প্রবেশ করার কথা ছিল। কিন্তু ফিরে এসে সেই বাড়িতে আর প্রবেশ করতে পারলেন না। আসবে শ্যামলের কফিনবন্দি দেহ। এটা ভেবেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে মুর্শিদাবাদের খরগ্রাম।