দেশের খবর
শুক্রবারের বিভীষিকা এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে প্রাণে বেঁচে ফেরা পূণ্যার্থীদের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: গত শুক্রবার মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে চোখের সামনে বিপর্যয় দেখেছেন অমরনাথ দর্শনে যাওয়া পুণ্যার্থীরা। যাঁরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন, তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে হয়েছে। চোখের সামনে দেখেছেন, সেই ভয়াবহ জলস্রোত ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে অনেককে। সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরেছেন অনেকেই। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে শিউরে উঠছিলেন সকলেই। আজও বিভীষিকতা তাড়া করে বেড়াচ্ছে প্রাণী বেঁচে ফিরে আসা পূণ্যার্থীদের।
সেই রকমই উত্তর প্রদেশের হরদৌই থেকে অমরনাথে এসে সেই বিভীষিকার সাক্ষী থাকা দীপক চৌহান বলছিলেন, ‘আমরা কেউই কিছু বুঝতে পারিনি। ওইদিন হঠাৎ করেই মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বিপদের আশঙ্কায় পুণ্যার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল। সেই হুড়োহুড়ি ঠেলায় অনেকেই পদপৃষ্ট হয়েছে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই বেশ কয়েকটি তাবুকে ভাসিয়ে নিয়ে চলে যায় পাহাড়ের উপর থেকে নেমে আসা তীব্র জলের স্রোত। সেই জলের স্রোতের সঙ্গে ভেসে যায় প্রচুর মানুষ। সেনাবাহিনী তৎপর না হলে আরও অনেক মৃত্যু হতো। সেই মুহূর্তের কথা মনে এলেই এখনও আঁতকে উঠছি।’
ওইদিন সামনে থেকে গোটা ঘটনা দেখা আর এক তীর্থযাত্রী বলছিলেন, ‘মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে পাহাড়ের উপর থেকে নেমে আসা তীব্র জলের স্রোতের সঙ্গে প্রচুর ছোট বড় পাথর ভেসে যাচ্ছিল। তবে আমি সেখান থেকে ২ কিলোমিটার দূরে থাকায় আমি প্রাণে বেঁচে গিয়েছি।’ আর এক পূণ্যার্থী নিজের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘হঠাৎ মেঘ ভাঙা বৃষ্টির বিকট শব্দ শুনতে পাই। তারপর চারিদিকে শুধু জল আর জল। আমাদের দলে সাত-আট জন ছিলাম। জলের স্রোতে প্রচুর মানুষকে ভেসে যেতে দেখেছি। অমরনাথের কৃপায় এই যাত্রায় আমি বেঁচে ফিরেছি।’
গত শুক্রবারের মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে এখনও পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের গন্ডারবালের চিফ মেডিক্যাল অফিসার এ শাহ। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। বহু মানুষ নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। ১৫ হাজারেরও বেশি পূণ্যার্থীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
করোনার কারণে গত দুই বছর যাত্রা বন্ধ থাকার পর এই বছরে ৩০ জুন শুরু হয়েছিল অমরনাথ যাত্রা। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে দু’দিন যাত্রা বন্ধ থাকার পর শুক্রবার শুরু হয়েছিল যাত্রা। আর ওই দিন বিকালেই ঘটে এই বিপর্যয়। এই ঘটনার জেরে শনি ও রবিবারও যাত্রা বন্ধ রাখা হয়। সোমবার থেকে আবার শুরু হয়েছে যাত্রা। আগামী ১১ আগস্ট রথযাত্রার দিন পর্যন্ত এবারের অমরনাথ যাত্রা চলবে।