বাংলার খবর
হাত কাটা গেলেও চাকরি থাকা নিয়ে রেণুকে আশ্বস্ত করল স্বাস্থ্য দফতর

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সরকারি চাকরি পাওয়ায় স্ত্রীর ডান হাত কব্জি থেকে কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছেন স্বামী। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সারা রাজ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই মহিলা। তবে তাঁর চাকরি থাকার আশ্বাস দিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। চাকরি পেতে যাতে তাঁর কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। আপাতত আক্রান্ত ওই গৃহবধূ রেণু খাতুনের সুস্থ্য হয়ে ওঠার ওপরে নজর রাখছে স্বাস্থ্য দফতর।
স্ত্রী রেণু খাতুন সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি পাওয়ায় পছন্দ হয়নি তাঁর স্বামী সফিরুল শেখের। তাই শনিবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর কব্জি থেকে ডান হাত কেটে বাদ দিয়ে দেন সফিরুল। এরপরই দ্রুত গুরুতরভাবে যখন রেণুকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এর পর রেণুর পরিবার দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করেন। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালের নভেম্বরে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বাসিন্দা পেশায় মুদির দোকানের মালিক সফিরুলের সঙ্গে বিয়ে হয় রেণুর। বর্তমানে তিনি দুর্গাপুরের যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিয়ের পর সেই হাসপাতালেই নার্সের কাজ করতেন। এরপর আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ থেকে নার্সিং ট্রেনিং নেন তিনি। তারপরই সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি পান রেণু। স্ত্রী সরকারি চাকরি পাওয়ার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেন সরিফুল। তাঁর ধারনা হয়, সরকারি চাকরি পাওয়ায় তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে পারেন রেণু। তাই কোনভাবেই যাতে চাকরিতে যোগ দিতে না পারে, সেই জন্য দুই বন্ধুকে নিয়ে শনিবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রেণুর কব্জি থেকে ডান হাত কেটে বাদ দিয়ে দেন সরিফুল।
এদিকে ঘটনার পর ৩৬ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও রেণুর সেই কাটা হাত জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। রেণুর হাতের কাটা অংশটিও ওই হাসপাতালেই রাখা রয়েছে। প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শরীরের কোনও অঙ্গ বিচ্ছেদ হলে তার পরের ৬ ঘণ্টাকে বলা হয় ‘গোল্ডেন পিরিওড’। প্লাস্টিকে মুড়ে কম তাপমাত্রায় সঠিকভাবে ওই কাটা অংশটি সংরক্ষণ করা হলে হাত পুণরায় জোড়া লাগানো সম্ভব হবে। আর যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা না হয়, তাহলে ওই কাটা অংশে পচন ধরতে পারে। সেক্ষেত্রে আর সেই কাটা অংশ জোড়া লাগানো সম্ভব হবে না। তাই ওই কাটা অংশটি হাসপাতাল কিভাবে সংরক্ষণ করেছে, সেটাই এখন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।