খেলা-ধূলা
লাস্ট বয়ের কাছে হেরে দু’য়ে ওঠা হল না বিরাটদের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : ‘পচা শামুকে’ পা কেটে দু’য়ে ওঠার সুযোগ হেলায় হারাল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। বুধবার আবুধাবিতে পয়েন্ট টেবিলের লাস্ট বয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে ৪ রানে হেরে যাওয়ায় তৃতীয় স্থানেই থেকে যেতে হল বিরাট কোহলিদের। শেষ ওভারের থ্রিলারে এবি ডি’ভিলিয়ার্সের মুখের সামনে থেকে ২ পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়ে গেল কেন উইলিয়ামসনরা। ১৩ ম্যাচে খেলে বিরাটদের পয়েন্ট ১৬। টসে জিতে কেন উইলিয়ামসনদের প্রথমে ব্যাটিং করতে পাঠান আরসিবির অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান তোলে হায়দরাবাদ। ঋদ্ধিমান সাহার বদলে জেসন রয়ের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন অভিষেক শর্মা। তাতেও কোনও লাভ হয়নি। ১৩ রান করেই জর্জ গার্টনের বলে আউট হন অভিষেক। এরপর অধিনায়ক উইলিয়ামসনের সঙ্গে ভালো ব্যাট করছিলেন জেসন রয়। দ্বিতীয় উইকেটে দু’জনের পার্টনারশিপে ওঠে ৭০ রা। এই জুটি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই ম্যাচের সেরা কেন উইলিয়ামসনকে (৩১) ফিরিয়ে দেন হার্ষল প্যাটেল। অধিনায়কের জায়গায় নামা প্রিয়ম গর্গ’ও (১৫) ড্যান ক্রিশ্চিয়ানের শিকার হয়ে দ্রুত ফেরেন। ওই ওভারেই হাফ সেঞ্চুরির মুখ থেকে জেসনকে ফিরিয়ে জোড়া ধাক্কা দেন ক্রিশ্চিয়ান। ৩৮ বলে ৫ বাউন্ডারির সাহায্যে ৪৪ রান করেন তিনি। তার পরের ওভারের প্রথম বলেই আব্দুল সামাদকে (১) ফিরিয়ে দেন যুজবেন্দ্র চাহাল।
শেষে ঋদ্ধি (১০) ও জেসন হোল্ডারের (১৬) সৌজন্যে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪১ রান তোলে সানরাইজার্স। ঋদ্ধি ও হোল্ডারকে ফিরিয়ে আইপিএলের নতুন নজির গড়লেন হার্ষল প্যাটেল। আইপিএলের এক মরসুমে সবথেকে বেশি উইকেট নেওয়ার জশপ্রীত বুমরার রেকর্ড ভেঙ্গে দিলেন তিনি। বুধবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ৩৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। তার ফলে এই মুহূর্তে ২৯ উইকেট হয়ে গেল হর্ষলের। গতবার বুমরা ২৭ উইকেট নিয়ে এই রেকর্ড গড়েছিলেন। এই মরসুম স্বপ্নের ফর্মে রয়েছেন বিরাটের দলের এই বোলার। তিনি যেমন হ্যাটট্রিক করেছেন তেমনই এক ইনিংসে পাঁচ উইকেটও নিয়েছেন। হার্ষলের পাশাপাশি তিন ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন ড্যান ক্রিশ্চিয়ান। একটি করে উইকেট নিয়েছেন জর্জ গার্টন ও যুজবেন্দ্র চহাল।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ব্যাঙ্গালোর। ইনিংসের প্রথম ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারের শেষ বলে মাত্র পাঁচ রান করে এলবিডব্লিউ হন বিরাট। পাঁচ ওভারের মধ্যে আরও একটি উইকেট হারায় আরসিবি। ক্রিশ্চিয়ান (১) আউট হন এক রানেই। সিদ্ধার্থ কৌলের বলে উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। এরপর উমরান মালিকের বল কেএস ভরতের গ্লাভসে লেগে ঋদ্ধিমানের হাতে যেতেই তৃতীয় উইকেট খোয়ায় ব্যাঙ্গালোর। ১০ বলে ১২ রান করে আউট হন ভরত। ৩৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল ব্যাঙ্গালোর। তবে দেবদত্ত পাড়িক্কলকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দু’জনের পার্টনারশিপে ওঠে ৫৪ রান। তবে ১৪.১ ওভারে উইলিয়ামসনের দুরন্ত থ্রো-তে রান আউট হন ম্যাক্সওয়েল। ২৫ বলে তিন বাউন্ডারি ও ২ ছক্কার সাহায্যে ৪০ রান করেন এই অজি অলরাউন্ডার। রশিদের বলে ব্যাকফুটে খেলে রান নিতে যান পাড়িক্কল।
উইলিয়ামসনের হাতে বল গেলে সরাসরি উইকেটে মারেন হায়দরাদের অধিনায়ক। বল যখন উইকেটে লাগে তখনও অনেক দূরে ছিলেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি ফেরার পর ক্রিজে আসেন এবি ডি’ভিলিয়ার্স। পাড়িক্কাল শেষ পর্যন্ত কিন্তু ক্রিজে থাকতে পারেননি। ১৭ ওভারে রশিদ খান ব্যাঙ্গালোর শিবিরে জোর ধাক্কা দেন। ৫১ বলে ৪১ রান করে ফেরেন পাড়িক্কলও। রশিদের বলে আব্দুল সামাদের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ব্যাঙ্গালোর ওপেনার। এরপর হোল্ডারের বলে ১৪ রান করে আউট হন শাহাবাজ নাদিম। শেষ ওভারে আরসিবি’র জয়ের জন্য বাকি ছিল ১৩ রান। আরসিবির ভক্তরা কিন্তু আশা হারাননি। কারণ তখনও মাঠে ছিলেন এবিডি।কিন্তু ভুবনেশ্বরের শেষ ওভারে ৮ রান নিতে সক্ষম হন এবি ও গার্টন। ফলে ১৩৭ রানেই শেষ হয় ব্যাঙ্গালোরের ইনিংস। ১৩ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন এবি ডি’ভিলিয়ার্স। তবে এই ম্যাচ জিতেও ১৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শেষেই রইল বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়া হায়দরাবাদ।