Uncategorized
একঘরে করা হল পরিবারকে, কারণ মেয়ের পোশাক!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বাংলাদেশের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের এক পরিবারকে করা হয়েছে একঘরে। এর কারণ হল মেয়ের পোশাক! এই পরিবারের মেয়ে জিন্স এবং স্কার্ট পরেছে, সেই অপরাধে পরিবারকে করা হয়েছে একঘরে।
বর্তমান সময়ে এমন ঘটনা সত্যিই অবাক করে দেয়। এখনও আমাদের সমাজ, মানুষের মানসিকতা কত নিচে রয়ে গিয়েছে, তা আরও একবার মনে করিয়ে দেয় এই সব ঘটনা। কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরুন্নাহার চৌধুরী ঝর্ণা। ছোটবেলা থেকেই এই তরুণী মেধাবী। গত বছর উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকায় পড়তে যান ঝর্ণা। নিজের এলাকায় সে কোনও দিনই কোনও পাশ্চাত্য পোশাক না পরলেও বাইরে পড়তে গিয়ে সে জিন্স ,স্কার্ট পরে। এরপর কোনও এক যুবক সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সেই ছবি। এই পোশাক পরা ছবি কোনও ভাবে এই তরুণীর এলাকার লোকেদের চোখে পড়তেই সমস্যার সূত্রপাত হয়। শুধু এই পোশাকের জন্য নয়, এর আগেও এই তরুণীকে সমাজে হেনস্থা হতে হয়েছে তাঁর সমাজসেবামূলক কাজের জন্য।
বরাবর মেধাবী ছাত্রী ঝর্ণার সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকাটা তাঁর সমাজের লোকেদের খুব একটা মনপুতঃ ছিল না। কিন্তু এবার এই পোশাককে ঘিরে তাঁর পরিবারকে একঘরে করে দেওয়াতে ওই তরুণী সমেত পুরো পরিবার বেশ ভেঙে পড়েছে। জানা গিয়েছে ,ওই পোশাকের কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় মসজিদের তরফ থেকে বার বার এই পরিবারকে বিচারসভায় ডাকা হয়। কিন্তু কোনোবারই তরুণীর বাবা হাজির হননি। এরপরে একেবারে ফতোয়া জারি করে ওই পরিবারকে এক ঘরে করে দেওয়ার কথা বলা হয়। এতে পুরো পরিবার দিশেহারা হয়ে স্থানীয় পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। তারপর দুই পক্ষকেই এক বৈঠকে বসিয়ে কথা বলানোর কথা বলা হয়। যদিও কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএও ফরহাদ চৌধুরী জানিয়েছেন যে এই যুগে এই ভাবে কোনও পরিবারকে এক ঘরে করা যায় না। পুরো ঘটনার জন্য স্থানীয় মসজিদ কমিটিকেই অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে এখন চাপে পরে মসজিদ কমিটির সুর নরম হয়েছে। কমিটির সভাপতি মাখন মিয়াঁর বক্তব্য, তাঁকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। তাঁরা এখন ভুল বুঝে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। তবে যাইহোক না কেন, বর্তমান যুগে ভুল বুঝে হোক বা সঠিক বুঝেই হোক, এমন ব্যবহার সত্যিই দুঃখজনক এবং লজ্জারও বটে।