খেলা-ধূলা
অরেঞ্জ আর্মিকে হারিয়ে প্লে-অফের পথে আরও এক ধাপ এগোল নাইটরা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : অস্তিত্ব রক্ষার ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্লে-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখল কলকাতা নাইট রাইডার্স। রবিবার অরেঞ্জ আর্মির কাছে হারলেই এবারের মত প্লে-অফে ওঠার রাস্তা বন্ধ হয়ে যেত নাইটদের। কিন্তু শুভমান গিল ও বোলারদের সৌজন্যে ‘লাস্ট বয়দের’ বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ জয় পেল নাইটরা। দুবাইয়ে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং নিয়ে ছিলেন সানরাইজার্স অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু অধিনায়কের এই সিদ্ধান্তটা বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছিল অরেঞ্জ আর্মি শিবিরে।
হায়দরাবাদের ওপেনিং জুটিকে আজ সেট হতেই দেননি নাইট বোলার টিম সাউদি। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে মাঠ ছাড়েন ঋদ্ধিমান সাহা (০)। এদিন সাউদি, শিভম মাভি এবং বরুণ চক্রবর্তীর বোলিংয়ের সামনে বড় পার্টনারশিপ তো দূর, হায়দরাবাদের কোনও ব্যাটসম্যানই বেশিক্ষণ উইকেটে দাঁড়াতে পারেননি। ঋদ্ধি ফেরার পর অধিনায়ক উইলিয়ামসনের সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন জেসন রয়। কিন্তু চতুর্থ ওভারেই জেসনকে (১০) ফিরিয়ে দেন মাভি। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে শুরু থেকেই চাপে পড়ে গিয়েছিল হায়দরাবাদ।
দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক উইলিয়ামসন। কিন্তু সাকিব আল হাসানের দুরন্ত থ্রোয়ে রান আউট হয়ে দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে দেন। ২১ বলে ৪ বাউন্ডারির সাহায্যে ২৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন উইলিয়ামসন। অভিষেক শর্মাও (৬) দ্রুত ফিরে যান। সাকিবের বলে তাঁকে স্টাম্প আউট করেন দীনেশ কার্তিক। এরপর প্রিয়ম গর্গ কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন। সেট হয়ে গিয়েও তিনি খুব একটা সুবিধে করতে পারেননি। দলকে বিপদমুক্ত করার আগেই ৩১ বলে ২১ রান করা প্রিয়মকে ফিরিয়ে দেন বরুণ। তার পরের ওভারে বল করতে এসে জেসন হোল্ডারকেও (২) ফিরিয়ে দেন বরুণ। ৮০ রানের মধ্যেই ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ায় মনে হয়েছিল একশোর গণ্ডিও টপকাতে পারবে না সানরাইজার্স। শেষে ১৮ বলে তিন ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ২৫ রান করে হায়দরাবাদের রানকে তিন অঙ্কের ঘরের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন আব্দুল সামাদ।
সাউদির বলে আউট না হলে আরও কিছু রান যোগ করতে পারতেন সামাদ। তার পরের ওভারেই রশিদ খানকে (৮) ফিরিয়ে দেন মাভি। শেষে শততম ম্যাচ খেলতে নামা ভুবনেশ্বর কুমার এবং সিদ্ধার্থ কৌল ৭ রান করে অপরাজিত থেকে নির্ধারিত ওভারে সানরাইজার্সকে পৌঁছে দেন ৮ উইকেটে ১১৫ রানে। সাউদি, মাভি, বরুণ দু’টি করে এবং সাকিব একটি উইকেট পেয়েছেন। তবে ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১২ রান দিয়ে উইকেটহীন থেকে গিয়েছেন সুনীল নারিন। প্লে-অফের রাস্তা খোলা রাখতে ১১৬ রান খুবই সহজ টার্গেট ছিল নাইটদের কাছে। কিন্তু শুরুতেই নাইটদের রাইজিং স্টার বেঙ্কটেশ আইয়ারের (৮) উইকেট খুইয়ে বসে নাইটরা। তাঁকে ফিরিয়ে দেন জেসন হোল্ডার। তারপরই আরেক তরুণ তারকা রাহুল ত্রিপাঠীও (৭) রশিদ খানের শিকার হয়ে ফিরে যান। এরপর শুভমন গিল ও নিতীশ রানা মিলে ঠান্ডা মাথায় নাইটদের জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন। আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বে ব্যাট হাতে গত ম্যাচগুলোতে ব্যর্থ হলেও এদিন রান পেলেন গিল।
যা নাইট শিবিরের কাছে সবথেকে বড় স্বস্তি। অর্ধশত রান পূর্ণ করার পরই ম্যাচের সেরা গিলকে ফিরিয়ে দেন কৌল। ৫১ বলে ১০ বাউন্ডারির সাহায্যে ৫৭ রান করেন নাইট ওপেনার। জুটি ভাঙার পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি গত ম্যাচগুলোতে দুরন্ত ব্যাটিং করা নিতীশ। ৩৩ বলে ৩ বাউন্ডারির সাহায্যে ২৫ রান করে নিতীশ যখন আউট হন তখন কেকেআর-এর রান ৪ উইকেটে ১০৬। এরপর প্রাক্তন ও বর্তমান অধিনায়ক মিলে বাকি কাজটা করে দেন। ১২ বলে ৩ বাউন্ডারির সাহায্যে ১৮ রান করে আইপিএল কেরিয়ার ৪ হাজার রান পূর্ণ করার পাশাপাশি নাইটদের জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন কার্তিক। ২ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় নাইটরা। কার্তিকের সঙ্গে দুই রান করে অপরাজিত থেকে যান নাইট অধিনায়ক ওইন মর্গ্যান। এদিনের জয়ের ফলে ১৩ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানেই রইল নাইটরা।