বাংলার খবর
সময়সীমা শেষ, বুধবারই ইলিশ অভিযানে বেরোচ্ছেন মৎস্যজীবীরা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: প্রতীক্ষার অবসান। আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার থেকেই মৎস্যজীবিদের জালে ধরা পড়বে রুপোলি ফসল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সপ্তাহ থেকেই ভোজনরসিক বাঙালির পাতে দেখা মিলবে ইলিশের। কারণ, মঙ্গলবারই শেষ হচ্ছে দু’মাস সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার উপরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। তাই বুধবার সকাল থেকেই শয়ে শয়ে ট্রলার সমুদ্র পাড়ি দেবে ইলিশের খোঁজে।
জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে সরকারি হিসাব অনুযায়ী প্রায় ১৮০০ ট্রলার দীঘা থেকে ইলিশ ধরতে সমুদ্রে পাড়ি দেবে। এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, রায়গঞ্জ থেকে আরও কয়েক হাজার ট্রলার ও ভুটভুটি ইলিশ ধরতে সমুদ্র পাড়ি দেবে। তাই মঙ্গলবার সর্বত্রই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে চরম ব্যস্ত মৎস্যজীবীরা। ইতিমধ্যেই নতুন রঙে রেঙে উঠেছে ট্রলার গুলো। প্রস্তুত মাছ ধরার জালও। দীঘার এক মৎস্যজীবী বলছিলেন, ‘সরকারি নির্দেশ মেনে আমরা বুধবার থেকে মাঝ সমুদ্রে মাছ ধরতে পাড়ি দেবো। সব প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়ছে। এখন আমরা শুধু সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি। আশা করছি এবার ভালো ইলিশ মিলবে। যেভাবে ডিজেলের দাম বেড়েছে, তাতে ভালো পরিমাণে ইলিশ ধরা না পড়লে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।’ সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া প্রত্যেক মৎস্যজীবীর লাইফ জ্যাকেট এবং বীমার কাগজপত্র সঙ্গে থাকা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়ে দিয়েছে কাঁথি মৎস্য দফতর। সেই সঙ্গে খোকা ইলিশ না ধরারও কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইলিশ ধরার জন্য ৯০ সেন্টিমিটারের কম ফাঁসের জাল ব্যবহার করতেও বারণ করা হয়েছে। ছোট ইলিশ যাতে না ধরা হয়, তার জন্যে নিয়মিত নজরদারি চালানো হবে বলেও জানিয়েছে কাঁথি মৎস্য দফতর।
গত তিন বছর সেই ভাবে মৎস্যজীবীদের জালে ইলিশ ধরা পড়েনি। যেটুকু মাছ পাওয়া গিয়েছিল তাও আকারে ছোট এবং আগুন দাম ছিল। ফলে ইলিশের স্বাদ সেই ভাবে পরখ করার সুযোগ হয়নি ভোজনরসিক বাঙালির। তবে মৎস্যজীবী এবং সমুদ্র বিশেষজ্ঞদের কথায় স্বস্তি পেতে পারেন ভোজনরসিকরা। কারণ তাঁরা জানাচ্ছেন পরপর তিন বছর সমুদ্রে সেইভাবে ইলিশের দেখা না মিললে চতুর্থ বছর বড় আকারের এবং ভালো মানের ইলিশ ধরা পড়বে মৎস্যজীবীদের জালে। একই মত মৎস্যজীবীদেরও। মৎস্যজীবীদের আশা, জুনের মাঝামাঝি থেকেই সমুদ্রে ইলিশের দেখা মেলে। এখনও বর্ষা না নামলেও দুই-একদিনের মধ্যেই দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আনবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তাই জালে ভালো পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়বে বলেই আশাবাদী মৎস্যজীবীরা। ভালো পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়লে বাজারে ইলিশের দামও কম হবে। এবং ভোজনরসিক বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে আর কোনও খামতি থাকবে না।