বাংলার খবর
সোনার ঝাঁটা দিয়ে শীতলা মাতার পুজো দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ঠাসা রাজনৈতিক কর্মসূচির পর সম্পূর্ণ অন্য মেজাজে পাওয়া গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। গায়ক কেকে-এর আকস্মিক প্রয়াণে তিনদিনের পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া সফর শেষ করে তড়িঘড়ি বুধবার দুপুরেই কলকাতায় ফিরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার বিকালে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে কাঁসারি পাড়া শীতলা মাতার মন্দিরের ১৯৫তম বর্ষ উপলক্ষে সোনার ঝাঁটা, বেনারসী শাড়ি, ধুতি, মিষ্টি দিয়ে পুজো দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আরতি করতেও দেখা গেল তাঁকে। নিজের পাড়ার অনুষ্ঠানে হাজির হতে পেড়ে যথেষ্ট আবেগঘন হয়ে পড়লেন তিনি। প্রাণ খুলে হাসার জন্য কোনও লাফিং ক্লাবে নয়, পাড়ার মানুষদের সঙ্গেই মেশার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাড়িতে কালীপূজা করেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকারি বা দলীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রকাশ্যে শ্লোক এবং মন্ত্র উচ্চারণ করে থাকেন। তবে এদিন শীতলা মাতার মন্দিরে পুজো দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি শীতলা মন্ত্র জানেন না। তাই নিজে ‘ওম সর্বমঙ্গলা মঙ্গল্যে’ মন্ত্রপাঠ করেন। এবং উপস্থিত মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে শীতলামন্ত্র পাঠ করে শান্তির আরাধনা করার নির্দেশ দেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী প্রায় ৫ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি সোনার ঝাঁটা দিয়ে পুজো দেন। প্রথমে প্রণাম করে তারপর নিজেই শীতলা মাতার হাতে সোনার ঝাঁটা অর্পণ করেন। এবং জানান, তিনি প্রায়ই এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘শীতলা পূজার মন্ত্র আমি জানিনা। বাকি সব মন্ত্র আমার জানা আছে। তাই আমি ওম সর্বমঙ্গলা মঙ্গল্যে মন্ত্রটি পাঠ করলাম। এই মন্ত্রটি যেকোনো পুজোতেই পাঠ করা যায়। মা শীতলা মানে সব কিছু ঠান্ডা রাখেন। এটাই তাঁর তাৎপর্য। যারা দুষ্টুমি করে তাদের কঠোর শাস্তি দেন। দুনিয়ায় ভালো লোক যেমন আছে, খারাপ লোকও আছে। ভালো লোককে দেখে শিখুন। আমি সব ধর্মের সব ঠাকুরের সাধক। সব ধর্মই আমার নিজের ধর্ম। আমি যেমন রোজা ভাঙ্গাতে যাই, তেমন পুজোর ভোগও খাই। কিন্তু মানবধর্ম সব থেকে বড় ধর্ম। সব ধর্মকে নিয়েই চলতে চাই।’ এরপরই মুখ্যমন্ত্রী প্রাণ খুলে হাসার জন্য বিশেষ পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘প্রাণ খুলে হাসার জন্য কোনও লাফিং ক্লাবে যেতে হয় না। পাড়ার লোকেদের সঙ্গে মিসুন। আমার এই ভবানীপুরের মাটি, এই পড়ায় আমি ঘুরে বেড়াতাম। এই পাড়াতে সব ধর্মের মানুষ বাস করেন। যখনই বড় কোনও নির্বাচনে যাই তখনই এই মাটি স্পর্শ করে যাই।’
তারপরই মুখ্যমন্ত্রী জানান তিনি শুক্রবার সিঙ্গুরে যাচ্ছেন। এবং সেখানে সন্তোষী মাতার মন্দিরে পুজোও দেবেন তিনি। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘শুক্রবার আমি সিঙ্গুরে যাচ্ছি। সিঙ্গুরে ২৬ দিন ধরে জমি আন্দোলনের সময় যখন আমি অনশনে করছিলাম, সেই সময়ে মা সন্তোষী মাতার ব্রত শুরু করেছিলাম। কৃষকরা জমি ফিরে পেলে একটি ছোট মন্দির তৈরি করার মানসিক করেছিলাম। শুক্রবার তারই উদযাপন করতে এবং মায়ের মুখ দেখতে যাব।’ এদিনের এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, গায়িকা পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়, স্থানীয় কাউন্সিলর কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়, অসীম বসু, বিধায়ক মদন মিত্র এবং মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।