বাংলার খবর
সংকটজনক তরুণ মজুমদার, এসএসকেএম-এ দেখতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ভালো নেই বর্ষীয়ান চিত্রপরিচালক তরুণ মজুমদার। এই মুহূর্তে এসএসকেএম হাসপাতালে আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে। অবস্থা বেশ সংকটজনক বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অল্প কথা বলার পাশাপাশি সাড়াও দিচ্ছেন। তবে তাঁর আচ্ছন্নভাব চিকিৎসকদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালেই ৯২ বছরের বিশিষ্ট এই চিত্র পরিচালককে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা রাজনীতিতে বরাবরই মমতা বিরোধী মুখ তরুণ মজুমদার। তবুও সমস্ত বিভেদকে দূরে সরিয়ে বামপন্থী এই চিত্রপরিচালকের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গেও বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন এবং খোঁজখবর নেন। শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, বৃহস্পতিবার সকালে তরুণ মজুমদারকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে যান বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, বাম সরকারের মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।
যকৃতের সমস্যা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তরুণ মজুমদার। তাঁর চিকিৎসার জন্য ৫ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সেই বোর্ডে রয়েছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সৌমিত্র ঘোষ, চেস্ট মেডিসিনের সোমনাথ কুণ্ডু, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সরোজ মণ্ডল, নেফ্রোলজিস্ট অর্পিতা চৌধুরী, সিসিইউ বিশেষজ্ঞ অসীম কুণ্ড।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তরুণ মজুমদারের হৃদযন্ত্র ঠিকভাবে কাজ করছে না। ফুসফুসেও সংক্রমণ রয়েছে। তাই মেডিক্যাল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আপাতত অক্সিজেন একইভাবে দেওয়া হবে। তাঁর অক্সিজেনের চাহিদা বুধবারের থেকে কিছুটা কমেছে। রক্তচাপও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু, আচ্ছন্নভাব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। যা চিন্তায় রাখছে চিকিৎসকদের। বয়স জনিত কারণে তাঁর এ ছাড়াও বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। খেতে পারছেন না একেবারেই। তাই রাইস টিউব দিয়ে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে তাঁকে। শরীরে অক্সিজেন সরবরাহে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তাই গলায় নল পরানো হয়েছে। চিকিৎসকদের মূল চিন্তা এখন তরুণবাবুর বয়স এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা।
বাংলা সিনেমার অত্যন্ত জনপ্রিয় পরিচালক তরুণ মজুমদার। একাধিক জনপ্রিয় সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়েছেন তিনি। বালিকা বধূ, শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, দাদার কীর্তি, ভালোবাসা ভালোবাসা, পথ ভোলা, চাওয়া-পাওয়া, পলাতক, ফুলেশ্বরী, আলো, সংসার সীমান্তে, গণদেবতা, কুহেলি তারমধ্যে অন্যতম। ১৯৬২ সালে ‘কাঁচের স্বর্গ’ সিনেমার জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। তাঁর সংগ্রহে রয়েছে চারটি জাতীয় পুরস্কার, সাতটি বিএফজেএ সম্মান, পাঁচটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ও একটি আনন্দলোক পুরস্কার। ১৯৯০ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে ভারত সরকার।