বাংলার খবর
স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ফেরালে কড়া পদক্ষেপ, হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে আবারও রাজ্যের সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম গুলোকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের সমস্ত সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেওয়া বাধ্যতামূলক। যদি কোনও সংস্থা তা নিতে অনিচ্ছুক হন, কেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিচ্ছে না তা খতিয়ে দেখে সেই অভিযুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নবন্না সাভারে বৈঠক হয়। বৈঠকে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, বিশিষ্ট চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য দফতরের পদাধিকারীরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যারা স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ফিরিয়ে দিচ্ছে, এবার আমরা তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করব। মানুষ যেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা পায়। অনেকে চিকিৎসা করাতে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেন। এতে রাজ্যের টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে। আমি রোগীর পরিবারদের কাছে অনুরোধ করছি, বাইরে যাবেন না। এখানে সমস্ত রকমের পরিষেবা দেওয়া হয়। অন্যান্য রাজ্যের থেকে বাংলার স্বাস্থ্যপরিষেবা অনেক ভালো। আমি চাই রাজ্যের মানুষ বাইরে না গিয়ে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে রাজ্যের হাসপাতালে চিকিৎসা করান। তবে কিছু দূরারোগ্য ও জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য ভিন রাজ্যে যেতে পারেন।’ তবে ওই রোগীদের কী ধরণের সংক্রান্ত রোগ হয়েছে, ক্রিটিক্যাল কিনা, তার রিপোর্ট নেয়ার জন্য বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যে কমিটি ক্রিটিক্যাল রোগীদের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার করবেন।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যজুড়ে জেলা মেডিক্যাল কলেজ গুলোর কী অবস্থা, স্বাস্থ্যপরিসেবা সুষ্ঠুভাবে দিতে রিপোর্ট নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যজুড়ে কোভিড পরিস্থিতি উদ্বেগজনক না হলেও তিনি রাজ্যবাসীর কাছে অনুরোধ করেন, প্রত্যেকে যেন মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করেন। রাজ্যে বর্তমানে পাঁচজন কোভিড পজেটিভ রয়েছেন। এরমধ্যে চারজনকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে বলে এ দিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। সচেতন থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সকলকে।
এ ছাড়া ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে আগাম প্রস্তুতি রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। তাই রোগের প্রাদুর্ভাব কোথায় বেশি, চিহ্নিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। গরমের সময় রক্তের সংকট দেখা দেয়। তাই রক্তদান শিবির যাতে বেশি করা হয়, তার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, বেশি করে রক্তদান শিবির করার জন্য।
স্বাস্থ্য দফতরে নিয়োগ দ্রুত শেষ করার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘হেলথ রিক্রুটমেন্ট কমিটিকে স্পেশাল কেয়ার দিয়ে এটা করার জন্য বলা হয়েছে। ডাক্তার, নার্স, প্যাথোলজিকাল কর্মীর প্রয়োজন। স্বাস্থ্য সচিবকে দ্রুত নিয়োগ শেষ করে ফেলতে বলা হয়েছে।’
বুধবার ওষুধ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও কেন্দ্রকে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘৮০০ ওষুধের দাম বেড়েছে, গ্যাস, জ্বালানির দাম বেড়েছে। টোল থেকে ঢোল সব জিনিসের দাম বেড়েছে। শুধু সৌজন্যের দাম কমেছে। এটুকুই বলে গেলাম, যা বোঝার বুঝে নিন।’