বাংলার খবর
কামতাপুরীদের হুমকির মধ্যেই আজ তিনদিনের সফরে আলিপুরদুয়ার যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কামতাপুরীদের পৃথক রাজ্যের দাবির মধ্যেই সোমবার তিন দিনের সফরে উত্তরবঙ্গ যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুরদুয়ারে এক সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি জেলার তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে কর্মীসভা করারও কথা রয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমোর। সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ বিশেষ বিমানে তিনি হাসিমারা পৌঁছোবেন। সেখান থেকে সড়কপথে মালঙ্গি গেস্ট হাউসে উঠবেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুর বারোটা নাগাদ আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ড ময়দানে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির দলীয় কর্মীদের নিয়ে কর্মীসভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দিন সকাল ১১ টায় সুভাষিনী চা বাগান এলাকায় একটি গণবিবাহের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের প্রায় ৫১০ জন আদিবাসী যুগলের চার হাত এক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর ১.৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার হওয়া বক্সা দুর্গ, রাজাভাতখাওয়ায় নবনির্মিত একটি গেট ও বাড়ি বাড়ি পানীয় জল প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী তিনদিনের উত্তরবঙ্গ সফরকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কারণ তাঁর এই সফরের আগেই, এক ভিডিও বার্তায় কামতাপুর লিবারেশনের (KLO) প্রধান জীবন সিং আবারও পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছেন। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে কামতাপুরী আন্দোলনে হস্তক্ষেপ না করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। সেই ভিডিও বার্তায় জীবন সিং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘ভারতভুক্তি চুক্তি অনুযায়ী কোচবিহার গ শ্রেণীর রাজ্য। নিশীথ প্রামানিক, জন বার্লা, জয়ন্ত রায়ের মতো জয়ী সাংসদ ও বিধায়কদের নেতৃত্বে আমরা কোচ-কামতাপুরকে পৃথক রাজ্য করার দাবি জানিয়েছে। কামতাপুরের মানুষ বৃহত্তর কোচবিহার বা কামতাপুর রাজ্য গঠন করেই ছাড়বে। সেই সঙ্গে নিজেদের রাজনৈতিক ভাগ্য তারা নিজেরাই তৈরি করবেন।’ এরপরই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করছি, আপনি কোচ-কামতাপুরে পা রাখবেন না। কোচ কামতাপুরকে পৃথক রাজ্য তৈরির আন্দোলনে আপনি কোনও রকম হস্তক্ষেপ ও বিরোধীতা করবেন না। গায়ের জোরে যদি কিছু করতে যান, তাহলে তার ফলাফল ভয়ঙ্কর হবে। লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়ে দেবে। রক্তের বন্যা বয়ে যাবে।’
জীবন সিঙের এই ভিডিও বার্তার পরই মুখ্যমন্ত্রীর তিনদিনের জেলা সফরকে ঘিরে ধরে নড়েচড়ে বসে পুলিশ ও প্রশাসন। এই নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার উত্তরবঙ্গের আইজি ডি পি সিং-সহ অন্যান্য শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপরই আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে নাকা চেকিং। অসম সীমানা-সহ জেলার অন্যান্য সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।