বাংলার খবর
পাঁচ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর হাতে স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : নাম উল্লেখ না করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কটাক্ষ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে স্টুডেন্টস কেডিট কার্ড ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অডিট রিপোর্ট সরকার চাইতে পারে। অন্য কেউ চাইতে পারে না। রাজ্যে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো কাজ করছেন। তবুও তাদের প্রতি কেন হয়রানি করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, রাজ্যপাল সম্প্রতি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অডিট রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর এই কটাক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আবেদন করেছেন, তারা যেন মর্যাদার সঙ্গে খুব ভালো কাজ করেন।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটা সময় মারা যাব। আপনারা এই সমাজটাকে বয়ে নিয়ে যাবেন। বঞ্চিতদের দেখবেন। সমাজটাকে সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। যারা ইতিমধ্যেই স্কুলছুট হয়েছেন, উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দেবে এই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড। দীর্ঘমেয়াদি লোনের সুবিধাও আমরা করে দিয়েছি। এখন সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারেন।’ জানা গিয়েছে, ঋণ দেওয়ার জন্য নতুন তিনটি ব্যাঙ্ক রাজি হয়েছে। ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা এবং কানাড়া ব্যাঙ্ক ছাত্রছাত্রীদের ঋণ দেবে। এর ফলে মোট ১০টি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাবে ছাত্রছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার ৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডে দেওয়া হল। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যজুড়ে ২০ হাজার ছাত্রছাত্রীর ঋণ মঞ্জুর হয়েছে। আরও ২৫ হাজার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। সরকারের এর জন্য ব্যয় হবে এক লক্ষ ৫ হাজার ৪২ কোটি টাকা।
এছাড়া রাজ্য সরকার ২ কোটি ৯২ লক্ষ্য সংখ্যালঘু স্কলারশিপ দিয়েছে। এক কোটি ৪ লক্ষ জন এসসি-এসটি স্কলার্শিপ পেয়েছে। ১৪ লক্ষ ৬ হাজার ৫২ জন স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ পেয়েছে বলে এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে ছেলে-মেয়েরা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হোক। বাংলার মেধা বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। সবথেকে বেশি নোবেল পুরস্কার পেয়েছে এই বাংলা। আপনারা এগিয়ে চলুন সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা ব্যাঙ্কে ঋণ চাইতে গেলে জুতোর সোল ক্ষয়ে যায়। কারণ তারা লোন পায় না। বাবা মাকে নিয়ে যায়। নিজেদের বাড়ি গ্যারান্টি রেখে লোন নিতে হয়। খুব কষ্ট করে ব্যাঙ্কের ঋণ জোগাড় করতে হয়। এবার রাজ্য সরকার গ্যারান্টার। খুব সহজ সুদে এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। দশম শ্রেনি থেকে শুরু করে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ডিপ্লোমা, ডাক্তারি, গবেষণা, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত তাঁরা এই সুবিধা পাওয়া যাবে। অনেকেই টাকা পয়সার অভাবে লেখা পড়া মাঝ পথেই ছেড়ে দিয়েছে। আজ যদি তাদের কাছে সুযোগ আসে, তাঁরা তা কেন নেবেন না। স্বাধীনতার পর থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত রাজ্যের মানুষ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও সুযোগ সুবিধা পেতেন না। আমরা এসে সেই সুযোগ করে দিয়েছি।’