তিন মাস ধরে ভাতা বন্ধ, প্রসাসনের দুয়ারে ঘুরেও লাভ হচ্ছে না ৭৫ বছরের সুরবালা দাসের
Connect with us

বাংলার খবর

তিন মাস ধরে ভাতা বন্ধ, প্রসাসনের দুয়ারে ঘুরেও লাভ হচ্ছে না ৭৫ বছরের সুরবালা দাসের

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজ্যজুড়ে দুয়ারে সরকারের এত সুনাম। অথচ ফালাকাটায় ঠিক যেন উল্টো ছবি। প্রশাসনের দুয়ারে এসে অসহায় এক বৃদ্ধাকে বারবার শূন্য হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে। মাসে দু-তিনবার বিডিও অফিসে এসেও কোনও কাজ হচ্ছে না।

তাই বছর পঁচাত্তরের সুরবালা দাসকে নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। শুক্রবারও দু’টি কাঠের খুঁটিতে ভর করে তাঁকে ফালাকাটা বিডিও অফিস চত্বরে দেখা গেল। তবে শনিবার সরকারি ছুটি ছিল। বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক নয়। তাঁর একটি পা নেই। কয়েকমাস থেকে মানবিক ভাতাও বন্ধ। সন্তানরা খেতে দেয় না। রেশনের চাল-আটায় তাঁর বেঁচে থাকা। চলাফেরার জন্য প্রশাসনের কাছে দীর্ঘদিন ধরে দরবার করেও ট্রাইসাইকেল মেলেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। সুরবালার বাড়ি ফালাকাটা শহর লাগোয়া তিনমাইলে। স্বামী বহুদিন হল মারা গিয়েছেন। কয়েক বছর আগে এক দুর্ঘটনায় তাঁর ডান পা অকেজো হয়ে পড়ে। পা কেটে বাদ দিতে হয়। তখন থেকেই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী।

পারিবারিক অবস্থাও খুব একটা সচ্ছল নয়। বড় ছেলে নীরেন দাস ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন। তিনিও কাজের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাড়িতে এখন জখম অবস্থায় আছেন। ছোট ছেলে বীরেন দাস দিনমজুর। বৃদ্ধার এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে নিজের পেট নিজেই চালান অশীতিপর বৃদ্ধা। রেশনের চাল ও আটায় তাঁর কোনওভাবে চলে। মানবিক ভাতা হিসেবে মাসে এক হাজার টাকা পান। কিন্তু প্রায় পাঁচ মাস ধরে সেই ভাতাও বন্ধ রয়েছে। দু’টি কাঠের খুঁটিতে ভর করে কোনওভাবে চলাফেরা করেন। তাই তিন মাস আগে বিডিও অফিসে পুণরায় ভাতা চালু ও একটি ট্রাইসাইকেল দেওয়ার আবেদন করেছিলেন।

Advertisement

কিন্তু ওই বৃদ্ধার এখনও ভাতা চালু হয়নি। ট্রাইসাইকেল সহ অন্যান্য সহযোগিতাও মেলেনি। তথাপি মনের জোরে প্রতি মাসে দু-তিনবার করে তিনি বিডিও অফিসে আসছেন। শনিবার যে সরকারি ছুটি রয়েছে তা সুরবালাদেবীর জানা ছিল না। বেলা ১২টা নাগাদ বিডিও অফিস চত্বরে এসে অফিস বন্ধ দেখেন। কথায় কথায় নিজের করুণ কাহিনী স্পষ্ট করে বললেন, ‘এই নিয়ে তিন মাসে আট-ন’বার বিডিও অফিসে এলাম। কিন্তু প্রতিবার শূন্য হাতেই ফিরে যেতে হচ্ছে। শুধু রেশনের চাল-আটায় বাঁচা যায় না। ছেলেরা ভাত দেয় না। তরিতরকারির জন্য কিছু টাকা লাগে।

কিন্তু পাঁচ মাস থেকে ভাতা পাচ্ছি না। আর এভাবে কাঠের খুঁটিতে ভর করে একটি পা দিয়ে কোনওভাবে চলাফেরা করি। এতেও সমস্যা হয়। কিন্তু বহুবার জানিয়ে বিডিও অফিস থেকে একটি ট্রাইসাইকেল পাচ্ছি না।’ তাই আবার আগামী সপ্তাহে বিডিও অফিসে আসবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। ফালাকাটার বিডিও সুপ্রতীক মজুমদার এই বৃদ্ধার ব্যাপারে খোঁজখবর নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। বিডিওর বক্তব্য, ‘ওই বৃদ্ধার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। প্রশাসনের তরফে তাঁকে সমস্তরকমভাবে সহায়তা করা হবে।’

Advertisement
Continue Reading
Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.