আমফানে দেওয়া ক্ষতিপূরণের টাকা এবার ক্ষতিগ্রস্তদের থেকেই ফেরত চাইল প্রশাসন!
Connect with us

বাংলার খবর

আমফানে দেওয়া ক্ষতিপূরণের টাকা এবার ক্ষতিগ্রস্তদের থেকেই ফেরত চাইল প্রশাসন!

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউ : আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের থেকেই এবার টাকা ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠাল প্রশাসন! কী করে টাকা ফেরত দেবেন বুঝে উঠতে পারছেন না ক্ষতিগ্রস্তরা। ২০২০ সালের ২০ মে ঘূর্ণি ঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল চাষের জমি থেকে ঘরবাড়ি। সেই জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য সরকার।সে সময় আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। যারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত নন, তাঁরাও ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল।

এবার সেই পুরনো স্মৃতিকে উস্কে দিয়ে হুগলির তারকেশ্বর ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করা হল। ইতিমধ্যেই সেই নির্দেশিকা ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে। ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি এমন অনেকের হাতেই নির্দেশিকা পৌঁছেছে। আর এই নির্দশে নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ২০২০ সালের মে মাসের শেষে সুপার সাইক্লোন আমফানে তছনছ হয়ে গিয়েছিল এ রাজ্যের একাধিক জেলা।

আমফান পরবর্তীতে ক্ষতিপূরণ দেওয়াকে কেন্দ্র সেই সময় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে। পাকা বাড়ি থাকা সত্বেও আমফানে ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকায় নাম দেখা গিয়েছিল তৃণমূল নেতাদের আত্মীয়দের। আমফান ক্ষতিপূরণে দুর্নীতির অভিযোগে হুগলির চন্ডিতলায় এক পঞ্চায়েত প্রধানকে সাসপেন্ড করেছিল শাসক দল। এবার সেই আমফানের ক্ষতিপূরণকে কেন্দ্র করেই জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। গত কয়েক দিন ধরে তারকেশ্বর ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে আমফানের ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের কাছে এই মর্মে নোটিশ দেওয়া হয়েছে যে, ক্ষতি পূরণের টাকা দু’বার করে পাঠানো হয়েছে প্রাপকদের। অর্থাৎ যাদের আংশিক ক্ষতির জন্য পাঁচ হাজার টাকা প্রাপ্য তাদের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে দশ হাজার টাকা। সেই অতিরিক্ত পাঁচ হাজার টাকা ফেরৎ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশ পেয়ে সমস্যায় পড়েছে তারকেশ্বরের চাপাডাঙ্গা পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু দরিদ্র পরিবার।

Advertisement

নুন আনতে পান্তা ফুরায়- এইরকম পরিস্থিতিতে কীভাবে এত গুলো টাকা ফেরত দেবেন, বুঝে উঠতে পাচ্ছেন না তাঁরা। তাঁদের দাবি, সেই সময় যে টাকা দেওয়া হয়েছিল তা সরকারি আধিকারিকরা পরিদর্শন করার পরেই দেওয়া হয়।অর্থাৎ তাঁরা আমফানে প্রকৃতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। অন্যদিকে যে পরিমান টাকা তাঁদের দেওয়া হয়েছিল, তা দিয়ে বাড়িটাই মেরামত করা সম্ভব হয়নি। ২০২০ সালের আগস্ট মাসে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছিলেন। প্রায় দেড় বছর কেটে যাওয়ার পর টাকা ফেরৎ চাওয়া হচ্ছে কেন, কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। বিজেপির দাবি, তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি ঢাকতে এই টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে।রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিমান ঘোষ বলেন, ‘সেই সময় আমফান দুর্নীতিতে যুক্ত তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল বিজেপি।

এখন মানুষকে জবাব দেওয়ার জন্য এই প্রক্রিয়া।’ তারকেশ্বর পুরসভার প্রশাসক স্বপন সামন্ত বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সেই সময় যারা ক্ষতিগ্রস্ত ছিলেন তাঁদের দ্রুত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাই কোথাও কিছু সমস্যা থাকলে তা প্রশাসন দেখবে। এতে বিজেপির রাজনীতি করার কিছু নেই।’ তারকেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফিরদৌস পারভীন জানান, ‘আমফানে ক্ষতিপূরণ হিসাবে কিছু কিছু ব্যক্তির কাছে দুবার টাকা চলে যাওয়ায় সেই টাকা ফেরৎ দেওয়ার জন্য প্রাপকদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কারও সমস্যা থাকলে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে।’ হুগলির জেলাশাসক আশ্বস্ত করে জানান, এই প্রক্রিয়া আগে থেকেই চলছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই। ক্ষতিপূরণ পাননি এমন যদি কারও কাছে নোটিশ গিয়ে থাকে তা দেখা হবে।

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.